পরিবর্তন অপরিহার্য। পরিবর্তন জরুরি। কিন্তু প্রতিটি প্রয়োজনের একটি মূল্য আছে যা আমাদের দিতে হয়। এমন কি সবচেয়ে সুন্দর ও উত্তম পরিবর্তনও কিছু বিষয়ের বিলুপ্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়
আমি আমার জীবনের অনেকগুলো বছরই পাড় করেছি একটা ছোট সেমি-আরবান শহরে। আমার বাড়িতে ছিল আমার পরিবার, আমার চাচাদের পরিবার, আমার দাদা ভাই, দাদি।
গরমের দিনে তখন ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় কারেন্ট থাকতো না ।রাতে তখন কারেন্ট চলে যেত তখন আমি, আমার চাচাতো ভাইরা সবাই নিজেদের ঘর থেকে বের হয়ে আসতাম উঠানে। তখন আইপিএস, জেনারেটর ছিল না। ছিল না স্মার্টফোন, ল্যাপটপ। মোমবাতির আলোতেই আধো আধো আলোকিত হত ঘর।
আমি আর আমার কাজিররা জড় হতাম উঠানে আর খেলতাম। দাদুর কাছ থেকে মিথিকাল গল্প সুনলাম। ছোট চাচা আর আমার বড় ভাই বসে বসে কথা বলতো রাজনীতি,মানুষ, ইতিহাস, ভুত আর ধর্ম নিয়ে। সেগুলো চুপ করে ভাবুক হয়ে শুনতাম।
এরপর ধীরে ধীরে প্রযুক্তি আমাদের ঐতিহ্যে হস্তক্ষেপ করা শুরু করলো। পিসি, মোবাইল এরপর জেনারেটর-আইপিএস। রাতে সময় কাটানোর পুরনো উপায়ে জায়গা করে নিল ফিফা গেমস, টিভি সো আর ফেসবুকিং। কারেন্ট চলে গেলেও এখন ঘর আমাদের আলোকিত। কাজিররা পাশের ঘরে থাকলেও দেখা হয় খুব কম। কারও সময় হয়ে উঠে না, আমরা আসক্ত হয়ে যাই নতুন বিনোদন প্রথায় যা নতুন প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে।
এখন বড় হয়ে গিয়েছি। সবাই সবার জীবন নিয়ে ব্যস্ত। বাস্তবতার নির্মম পরিহাস কাজিনদের থেকে দূরে সরিয়ে এনেছে। এখন পুরনো স্মৃতিগুলো মনে করি শুধু। মাঝে মাঝে মন চায় সেই বাড়িতে গিয়ে পুরনো দিনের মত মোমবাতি জালিয়ে, ঘরের সব ডিভাইস বন্ধ করে আমার উঠানে গিয়ে জড় হই। পারি না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



