১০৭ নং দুঃখটা বড্ড কষ্টে ফেলেছে আমাকে।
কষ্টটা হঠাৎ করেই শুরু হলো এক কলিজাপুড়া দুঃস্বপ্নের ঝাপটাতে।
বুকের ভিতর আস্ত একটা পুরাতন বাড়ী ধুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে পড়লো সেই কষ্টে।
আশ্চর্য!!
চারিদিক থেকে চেনা-অচেনা অনেক মানুষই চলে আসলো মুহূর্তেই-
ভেঙ্গে যাওয়া সেই বুকের বাড়ী থেকে কিছু না কিছু কুড়োতে ।
অতি আপনজনই হাতের মুঠোতে ভরে নিল এক থাবায় ‘বিশ্বাসের চব্বিশ বছর’।
তার দেখাদেখি,
পরিচিত একজন এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে নিলো কেউ দেখে কিনা!
তারপর টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া ‘বাইশটি সম্মান’ পলিথিন ব্যাগে ভরলেন।
একজন অল্প পরিচিতজন খুশি মনে তার পা ভিঁজিয়ে নিলো,
আলতার বদলে ‘এক বালতি বুকের লাল রক্তে’।
তারপর অদ্ভুত ভালো লাগা নিয়ে
তিনি তাকিয়ে থাকলেন সেই পায়ের দিকে অনেকক্ষণ।
রাস্তা দিয়ে যাবার পথে একেবারে অপরিচিত একজন
ভাংঙ্গা বাড়ী দেখে দাড়িয়ে পড়লো।
তারপর একটু আড়ালে গিয়ে কুড়োতে লাগলো ‘দশ বছরের ঘুম’।
কিছু উল্লাসিত, ভয়ংকর চেহারার মানুষ চলে আসলো তাদের সারাজীবনের তৃষ্ণা মেটাতে-
ছলকে ছলকে উপচে পড়া ভেঙ্গে পড়া বাড়ীর ‘এক ট্যাংকি বুকের জল’ দিয়ে।
কেউ একজন ‘বুকের গোপন দীর্ঘশ্বাস’ নিয়ে দৌড়ে পালালো!
মানুষটার চেহরা দেখাই গেলোনা।
এভাবে প্রায় সবই নিয়ে গেলো
ভেঙ্গে যাওয়া সেই বুকের বাড়ী থেকে-
সেই সব আপন-পর মানুষজন।
বুকের ভেঙ্গে যাওয়া বাড়ী ঠিক করতে আমিও কুড়িয়ে পেলাম কিছু-
যা কেউই নেয়নি,
- শুকিয়ে যাওয়া ‘সাতচল্লিশটা কান্নার পুকুর’।
-জলে ডুবে মরা ‘একটি অ-ভালোবাসা’।
— অভিমানের ছদ্মবেশে একটি ‘হিংস্র ষাঁড়ের বাহাত্তরটি শিংয়ের গুঁতো’।
-বিরহের নামে নামহীন ‘আটাশি বস্তা অপমান’।
-দশ বছরে যাবত জমানো ‘এক প্লেট
বিষন্নতা’।
-আর উপহার হিসেবে কারো রেখে যাওয়া মিথ্যা অপবাদের সুগন্ধি মাখা ‘চন্দন কাঠের একটি কফিন’।
১০৭ নং দুঃখটা বড্ড কষ্টে ফেলেছে আমাকে-
সেটি ভুলতে আমি এখন ১০৮ নং দুঃখের অপেক্ষায় আছি।
—————————————
রশিদ হারুন
০২/০৩/২০২০
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:০২