কৈশোরে মহল্লায় যখন নতুন কোনে ভাড়াটিয়া আসত
আমরা বন্ধুরা সবাই সেদিন গোয়েন্দা হয়ে যেতাম।
সেই ভাড়াটিয়ার ঘরের খবর জানতে গিয়ে আমাদের শুধু নজর থাকত
কোনো কিশোরী মেয়ে আছে কিনা সেই নতুন ভাড়াটিয়ার।
যে বন্ধু আগে খবর আনত সেই কিশোরী মেয়েটির সে বিবিসির গোয়েন্দা সংবাদদাতার মতো ভাব ধরে বলতো- “ফার্স্ট বুকিং!”
বাকি সব বন্ধুদের হিংসা হতো তাকে।
সবাই পিছিয়ে আসতাম
আর অপেক্ষায় থাকতাম নতুন কোন ভাড়াটিয়ার।
একে আমরা বলতাম “সেক্রিফাইজ!”
অথচ কী আশ্চর্য!
কিশোরী মেয়েটি অথবা তার পরিবার কেউই জানত না আমাদের এই সেক্রিফাইজের কথা।
প্রেমের নিয়ম কিন্তু রহস্যময়।
এতো গোয়েন্দাগিরি
এতো দাঁড়িয়ে থেকে পাহারা দেবার সব প্ররিশ্রম
সবই বৃথা হয়ে যায়,
যখন অন্য মহল্লার কোনো কিশোরের সাথে সেই কিশোরীকে একই রিকশার হুড তুলে আড়ালে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়তে দেখা যেত।
অথবা একদিন হঠাৎ করেই সেই বাড়িতে টু-লেট ঝুলতে দেখা যেত।
এভাবেই আমাদের সব বন্ধুরা আস্তে আস্তে সিগারেট টানতে শিখল।
শিখল অন্যের মহল্লার কিশোরের জন্যও “সেক্রিফাইজ!”
জেনে রাখুন,
জলে ডুবতে ডুবতে মানুষ একদিন ঠিকই সাঁতার শিখে ফেলে।
আমাদের বন্ধুদের মধ্য থেকেও কেউ অন্য মহল্লার কোন কিশোরীর সাথে একদিন একই রিকশার হুড তুলে পাঁচ মিনিট ঘুরে আসে!
আর আমাদের বন্ধুদের সাথে সেই গল্পই করত পাঁচ ঘন্টা যাবত,
সাথে একটু ছোঁয়াছুয়ি আর চুম্বনের গল্প থাকতই।
আমাদেরও বুকের ভিতরে গোপনে প্রচণ্ড হিংসা হতো সেই বন্ধুর জন্য।
যতই হিংসা হোক
আমরা সব বন্ধুরা হাতে হাতে সিগারেট টানতে টানতে
মনে মনে সেই বন্ধুর জন্য বলতাম
“সেক্রিফাইজ!”
——————
র শি দ হা রু ন
২৮/০১/২০২২
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



