somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হারিয়ে যাওয়া নারী ও নাকফুলের গল্প

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মাসের শেষ আজ

শাহেদ বসে আছে ভ্যানগাড়ীর উপর। ভাড়া বাসা বদলাচ্ছে সে। কোলের উপর সাবধানে একটি ছোট্ট মাছের এক্যোরিয়াম ধরে বসে আছে। পাঁচ ছয়টা বিভিন্ন মাছ সাঁতার কাটছে সেই এক্যোরিয়ামের পানিতে।


ভ্যানগাড়িওয়ালা শাহেদের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বারবার একই কথা বলছে।

-ভুল হইছে মারত্নক ভুল, এক ভ্যানে এতো মাল নেওয়া ঠিক হয় নাই। দুই ভ্যানের মাল, আপনার কিন্ত বাড়াইয়া দিতে হবে।

শাহেদ এক্যোরিয়াম ধরে চুপচাপ বসে আছে,

নিজেকেও মালই মনে হচ্ছে,

কোন রকম জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলো না,

আধা ঘন্টার মাঝে তিনটা সিগারেট শেষ করছে।

ভ্যানওয়ালা ‌অনেকটা বিরক্ত আর হতাশ হয়েই বললো



-এই যে মিয়া ভাই আপনি যে কিছুই কন না?

খালি একটার পর একটা সিগারেট টানছেন, মইরা যাইবেন কিন্ত অল্প বয়সে,

আমারে কিন্ত ভাড়া বাড়াইয়া দিতে হইবো।



দোলাইপার থেকে প্রায় ঘন্টাখানেক পর ভ্যান গাড়িটি উত্তর যাত্রাবাড়ির ওয়াসা গলির অনেক পুরোনো রং আর আস্তর উঠা তেতালা একটি বাড়ির সামনে এসে থামল।

বাড়ির সামনে সাদা লুংঙ্গি পরে খালি গায়ে একজন বয়স্ক মানুষ দাঁড়িয়ে পানের পিক ফেলছেন,

শাহেদ খুব সাবধানে এক্যোরিয়ামটা ভ্যানের উপর রেখে বাড়ির সামনে দাঁড়ালো,

হাত উঠিয়ে সালাম দিলো খালি গায়ের লোকটিকে,

-সালাম চাচা

লোকটি সালামের উত্তর দিয়ে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাল

শাহেদ এবার বললো

- চাচা আপনার তিনতলার ছাদের উপরের যে একরুম,আমি তার নতুন ভাড়াটিয়া।


বাড়ীওয়ালা খুব বিরক্ত সহ বলল-

ভাতিজা আপনার নামটা যেনো কি বলেছিলেন?

শাহেদ ভুবন ভুলানো হাসি দেবার চেষ্টা করে বললো- জ্বি শাহেদ,

বাড়িওয়ালা আরেকবার লাল রঙের পিক রাস্তায় ফেলে শাহেদের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো -শুনুন শাহেদ ভাতিজা, আপনি বলেছিলেন কাল আসবেন, আজই চলে আসলেন। আগের ভাড়াটিয়া গেছে মাত্র দুপুরে। আমিতো আপনার ঘর এখনো পরিস্কার করতে পারি নাই।ঘর পরিস্কারের লোক রাতে এসে কাজ করবে।



শাহেদ খুব বিনয়ী হয়ে বললো,

কাল আমার অফিসে জরুরী কাজ আছে,

ছুটি ম্যানেজ করতে পারি নাই, তাই আজই চলে আসতে হলো

আপনার চিন্তা করতে হবেনা, আমিই পরিস্কার করে নিব ,একটাই মাত্র রুম।


ভ্যানওয়ালাকে কোন কথা ছাড়াই দু’শো টাকা বেশি দিলো শাহেদ।

ভ্যানওযালা খুশি হয়ে বললো

-কথা কম কইলোও আপনার মনটা বড়,

চলেন ধরাধরি করে মাল উঠাইয়া দেই,

অল্প কয়ডা মাল,

বুঝা যায় বিয়া শাদী করেন নাই।


বাড়ীওয়ালা বাড়ির ভিতরে চলে গেলেন,

আবার প্রায় দুই মিনিট পরে ফিরে শাহেদের দিকে একটি চাবি বাড়িয়ে দিলেন,

-এই নেন ঘরের চাবি ,হারাইয়া গেলে কিন্তু নিজের টাকা ‍দিয়া বানাইয়া নিবেন। আপনে আপনার ভোটার আই ডির ফটোকপি দেন নাই। কালই দিবেন, থানায় জমা দিতে হবে। যা দিনকাল পড়ছে, কারো বিশ্বাস নাই।





ভ্যানওয়ালা আর শাহেদ দুজনে মিলে বিশ মিনিটের মাঝে তিনতলার ঘরে মাল উঠিয়ে ফেললো।

ভ্যানওয়ালাকে বিদায় দিয়ে‌ই

শাহেদ ঘরের বাতি জ্বালিয়ে ঝাড়ু হাতে ফ্লোর পরিস্কারে লেগে গেলো।

ঝাড়ু দিতে দিতে ঘরের একবারে ডান কোনায় চোখ আটকে গেল। বাতির আলোতে কি যেনো একটা জ্বলজ্বল করে উঠলো। কৌতুহলে খু্বই কাছে গিয়ে ফ্লোরে উপুড় হয়ে জিনিসটা তুলে আনলো, একটা নাকফুল! নাকফুলটা তামার না স্বর্নের এটা নিয়ে একটু সন্দিহান মনে হলো তার। বিড় বিড় করে শাহেদ বলে উঠলো

-এইটা স্বর্নের না তামার?

আহারে কোন মেয়ে মানুষ জানি এইটা হারিয়ে খুঁজেছিলো,না পেয়ে হয়তো মনে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন তিনি।




কলিংবেলের শব্দে বাড়িওয়ালা দরজা খুলে দেখেন শাহেদ দাড়িযে আছে।



বাড়িওয়ালা জানতে চাইলো কিছু লাগবে নাকি?

শাহেদ বললো-চাচা ঘর পরিস্কার করতে গিয়ে এই নাকফুলটা পেলাম, আগের ভাড়াটিয়ার হবে হয়তো। আপনি রেখে দিন। কেউ খুঁজলে দিয়ে দিবেন।

বাড়িওয়ালা খুব আশ্চর্য হয়ে শাহেদের দিকে তাকিয়ে বললো

-শাহেদ মিয়া, শাহেদ না।

শাহেদ - জি শাহেদ

বাড়ীওয়ালা - আপনার ধারনা এই সামান্য জিনিস খুজতে কেউ আবার আসতে পারে!


শাহেদ -যদি আসে?

আর কারো কাছে এটা হয়তো ‌অনেক দামী, সারা জীবন ধরেও খুঁজতে পারে।



বাড়ীওয়ালা ঝামেলা বিদায় করার স্টাইলে বললো- এটা আপাতত আপনেই রাইখা দেন। কেউ খুঁজতে আসলে আমি আপনার কাছেই পাঠাইয়া দিব।









প্রথম রাত এই নতুন বাড়িতে। তিনতলার এককোনে একরুমে ছোট পাকের ঘর আর বাথরুম।সামনে উঠোনের মত খালি ছাদ আছে কিছুটা। একা মানুষ, খাট বা চৌকির ঝামেলা নেই ।ফ্লোরেই বিছানা পেতে শুয়ে



রাতের শেষ সিগারেটা ধরালো,

জানালা দিয়ে আজ অর্ধেক চাঁদ দেখা যাচ্ছে।

কি মনে করে শাহেদে বালিশের নিচ থেকে কাগজে মোড়ানো নাকফুলটা বের করলো,

ডান হাতে নিয়ে সেটার দিকে অ‌নেকক্ষণ তাকিয়ে রইলো। সিগারেটের ধোঁয়ায় নাকফুলটা মাঝে মাঝে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

আর তখনই হাতের ভিতরেই ভেসে উঠলো একটি নাক তারপর ধীরে ধীরে সেই নাকে একটি নাকফূল।শাহেদ ভয় পেয়ে হাত থেকে নাকফুলটা ঘরের মধ্যেই ছুঁড়ে মারলে।

সারারাত ঘুম ভাঙলো হঠাৎ হঠাৎ নাক আর নাকফুলটার স্বপ্নে।




ভোরের আজানের পর পরই শাহেদের ঘুমটা ধরে আসলো গভীর ভাবে

ঘুম ভাঙলো যখন অফিসে যাবার সময় যায় যায়।

ঘরের দরজায় তালা লাগানোর ঠিক আগ মূহুর্তে নাকফুলটার কথা মনে পড়লো।

সে আবার দরজা খুলে ঘরে ঢুকলো,

নাকফুলটা খুঁজে পেতে পাঁচ মিনিটের মত সময় খরচ হলো। নাকফুলটা পেয়ে খুশিতে কেনো যেনো মনটা ভরে উঠলে। দ্রততার সাথে কাগজে মুড়ালো সেটা।

তারপর যত্ন করে বুক পকেটে রাখলো।





রিক্সায় করে অফিসে যেতে যেতে সে কিছুক্ষন পর পর বুক পকেটে হাত দিচ্ছে। আবার আকাশের দিকেও মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে।আকাশের গায়েও যেনো হঠাৎ হঠাৎ সেই নাকটা আর নাকফুলটা ভেসে উঠছে।





শাহেদ কিছুক্ষন পরপর বুকপকেটে হাত দিচ্ছে- এই ব্যাপারটা তার কলিগ কামাল সাহেব কয়েকবারই লক্ষ্য করছেন।



কামাল সাহেব বললেন- শাহেদ ভাই শরিরটা খারাপ নাকি?

কিছুক্ষন পরপর বুকে হাত দিচ্ছেন।


শাহেদ খুবই অপ্রস্তুত হয়ে বললো

-না এমনি বোধ হয়, গ্যাস্ট্রিক এর ঝামেলা হচ্ছে।


ইন্টারকমে কামাল সাহেবকে বস ডাকলেন। কামাল সাহেব চলে গেলে শাহেদ বুক পকেট থেকে কাগজে মুরানো নাকফুলটা বের করলো একবার। তার চেহারায় একটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো চিক চিক করে কপালেও হালকা ঘাম বের হচ্ছে উত্তেজনায়।



রাতের বেলায় শাহেদ বিছানায় শুয়ে সিগারেট টানছ অনবরত।

ডান হাতে নাকফুলটা ধরে এক দৃষ্টিতে সেটার দিকে তাকিয়ে আছে। সিগারেটের ধোঁয়ায় মধ্যেও নাকফূলটা জ্বল জ্বল করে উঠে বারবার, তারপর এক সময় একটা নাক, একজন নারীর হাসি মুখ ভেসে উঠে।



গভীর রাতে নির্জন রাস্তায় শাহেদ রাস্তায় দাড়িয়ে এক জন নারীর সাথে কথা বলছে, নারীটিকে কিছু টাকা পকেট থেকে বের করে দিলো।তারপর নারীটি শাহেদের হাত থেকে নাকফুলটি নিয়ে নাকে পরে শাহেদ কে দেখায়। শাহেদ মোবাইলের আলো ফেলে নারীর মুখে খুব ভাল করে তাকিয়ে থাকে, খুব হতাশ হয়ে কি যেন বলে। নারীটি ও মন খারাপ করে নাকফুলটি খুলে দিয়ে দেয়।

সারারাত টাকার বিনিময়ে এভাবে তিন জন নারীর শাহেদ নাকে নাকফুলটি পড়ায়।

সারারাত রাস্তা রাস্তা ঘুরে খুব ভোরে বাসায় ফিরে মরার মতো ঘুমিয়ে পড়লো।





কাল সারারাত ঠিকমত না ঘুমিয়ে অফিসে ঠিকমত কাজ করতে পারছে না শাহেদ। কিছুক্ষন পর পর তন্দ্রার মতো পেয়ে বসেছে।



কামাল সাহেব জানতে চাইলেন

-আপনার মনে হয় যে ইদানিং রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না; দেখে মনে হচ্ছে শরির খারাপ

যাচ্ছে, চোখের নিচে কিন্ত কাল দাগ পরে গেছে।


শাহেদ খুব অপ্রস্তুত হয়ে বললো

-না ওসব কিছু না, নতুন জায়গা তো তাই ঘুমের ডিস্টার্ব হচ্ছে। ঠিক হয়ে যাবে। স্যার কে বলে আজ ছুটি নিয়ে চলে যাই। দেখি দেয় কি না।





পাঁচ মিনিট পরই শাহেদ বসের রুমের দরজায় টোকা দিয়ে ঢুকলো,

বস বললেন - কিছু বলবেন?।



শাহেদ খুব নিম্মস্বরে বললো

-স্যার আজ শরীরটা ভাল লাগছেনা,একটু আগে চলে যেতে চাইছিলাম।

বস খুবই আন্তরিকার সাথে বললেন

-আপনার তো অনেক ছুটি এমনি পাওনা।তার চেয়ে বরং দশদিনের ছুটি নিয়ে বিশ্রাম করুন অথবা ঘুরে আসুন কোন জায়গা থেকে। একা একা থাকেন। মেয়ে পছন্দ থাকলে বিয়ে করে ফেলুন। ছুটি বাড়িয়ে নিন, লাগলে।


শাহেদ আবারো নিম্মস্বরে বললেন

-ধন্যবাদ স্যার, আপাতত দশ দিন হলেই চলবে।প্রয়োজন হলে জানাবো





কি এক অজানা অস্থিরতায় আজ রাতেও শাহেদ নাকফুলটা কাগজে মুড়িয়ে বুক পকেটে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসলো ।

এরই মধ্যে রাতের নারীদের মধ্যে দু- তিনজন তাকে চিনে ফেলেছে। তারা শাহেদকে পাগল ভাবতে শুরু করছে।

শাহেদ না চিনেই একজন নারীর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। নারীটি শাহেদকে দেখেই চিনতে পারলে। তবুও বুঝতে দিলো না।

শুধু একটি নাকফুল পরিয়ে সেদিন লোকটি তাকে দুশো টাকা দিয়েছিলো। টাকাটা নিতে সেদিন তার খুব মনে কষ্ট হয়েচিলো। সেই থেকে মানুষটার জন্য একটু মায়া জন্মেছে।

নারীটির নাকে নাকফুলটি পরার পর শাহেদ মোবাইলের আলোতে নাকটা , মুখটা ভালোভাবে দেখলো, তারপর খুব হতাশ হয়ে বললো - না আপনি না

বলেই মানিব্যাগ থেকে দুশো টাকা বের করে বললো - নাকফুলটা খুলে দিন

আর এই টাকাটা রাখুন

নারীটি দু’ঠোঁটের কোনে এক মায়াবী হাসি ঝুলিয়ে বললো - টাকা লাগবেনা,

আপনে আসলে কারে খুঁজছেন না বললে আজ নাকফুলটা আর খুলবো না।


শাহেদ খুবই আতংকিত এবং আশ্চর্য হয়ে সেই নারীর হাসির দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ ধরে, তারপর একসময় হাল ছেড়ে দিলো, বুঝতে পারলো , নারীটি সত্যি কথাই বলছে। “কাকে খুঁজছে সে” - আজ না বললে এই নাকফুল ফেরত পাওয়া যাবেনা ।

নারীটিকে চমকে দিয়ে শাহেদ বলে উঠলো

-আমার মা’র নাক

নারীটি খুবই বিস্মিত কন্ঠে বললো - আপনের মা’রে খুঁজছেন রাইতের বেলা আমাগো মতো মাইয়া মাইনষের নাকে নাকফুল পিন্দাইয়া! এইডা কোন পাগলের কথা।

শাহেদ বললো - আমার বয়স যখন আট বা নয় তখন কি ভাবে যেনো আমার মা’র নাক থেকে নাকফুলটা হারিয়ে যায়, অনেক খোঁজাখুজির পরও আর পাওয়া যাইনি। এটা নিয়ে বাবা খুব বাজেভাবে মা’কে বকতো

আমার সামনেই বকতো আর বলতো- সামান্য একটা নাকফুল আগলে রাখতে জানোনা, কই হারাইছো কইতে পারেনা। আমারতো মনে হয় অন্য পুরুষের লগে লটরপটর করতে গিয়ে নাক থেইক্কা খুলে পইড়া গেছে।

আমার সামনে মা লজ্জায় একেবারে কুকড়ে যেতো

চুপচাপ ঘরের কাজ করে যেতো

বাবাকে উত্তরে কিছুই বলতো না,

আমার খুব কষ্ট হতো তখন।

আমি নিজেও সেই সময়ে সারাদিন মা’র নাকফুলটা খুঁজতাম ঘরে বাইরে সব জায়গায়, পুকুরে ডুব দিয়েও কতো যে কাঁদামাটি তুলেছি সেই অল্প বয়সে যদি মা’র নাকফুলটা পাওয়া যায় এই আশায়।

তারপর, তারপর একদিন রাতে আবারও বাবা একই রকম ভাবে ‌অকথ্য ভাষায় মাকে বকেছিলো নাকফুলটার জন্য।

আমি সারারাত ঘুমোতে পারিনি মা’র কষ্টে । তারপর দিন সকাল থেকে মা’কে আর খুঁজে পাইনি কোথাও। বাবা সবাইকে বলে বেড়াতো

মা বোধহয় অন্য কোন পুরুষের সাথে পালিয়েছে , যেই মানুষটার কারনে মা’র নাকফুলটা হারিয়েছিলো।

আশেপাশের অনেকই ফিসফিস করে বলতে শুনতাম

-বাবাই মাকে মেরে হয়তো কোথাও গুম করে ফেলেছে।

কিছুদিন পরই বাবা আবার বিয়ে করেন।

আমি এ‌ই জীবনে আর কোনদিনই বাবা’র সাথে কথা বলিনি।


মা’কে আর কখনো খুঁজে পাইনি ।

মা’র চেহারাও প্রায় ভুলতে বসেছি। শুধু এই নাকফুলটা আমার মায়ের নাকফুলটার সাথে অনেকটা মিলে যায়।



নারীটি একটি বিশাল দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলে নাক থেকে নাকফুলটা খুলে শাহেদের হাতে দিলো,

তারপর বললো - আপনি রাতে বিরাতে এভাবে আর ঘোরাঘুরি কইরেন না, আচমকা বিপদে পড়তে পারেন।


সেই রাতে আর কোন নারীকে খুঁজলো না শাহেদ। মন খারাপের এক ঘোরে সে বাড়িতে ফিরলো। জানলা দিয়ে আজ আস্ত চাঁদ দেখা যাচ্ছে ,চুপচাপ একটার পর একটা সিগারেট টানছে আর চেহরা ভুলতে যাওয়া মাকে মনে করার চেষ্টা করছে।

শাহেদ কয়েকদিন নিজেকে আটকে রেখেছে নির্জন ঘরে এক অদৃশ্য শিকলে।

তারপর এক মধ্যরাতে ধড়মর করে ঘুম থেকে উঠে পড়লো । খুব দ্রুত শাট প্যান্ট পড়ে রেডি হয়ে গভীর রাতেই রাস্তায় নেমে আসলো

আর বুক পকেটে শক্ত করে ধরে রেখেছে কাগজে মোড়ানো সেই নাকফুলটা।



আগের মতোই পয়সা দিয়ে রাতের নারীদের খুঁজে খুঁজে নাকফুলটা তাদের নাকে পরায় আর মন খারাপ করে ভোর বেলায় বাড়ি ফিরে।

অনেকদিন হলো শাহেদ অফিসে যায়না

সারাদিন ঘরেই থাকে।ইদানিং ঘরের দরজাটা সব সময় খুলে রাখে, যদি নাকফুলটার খোঁজে এসে দরজা বন্ধ দেখে কোন নারী ফিরে না যায়।

একদিন সকাল দশটার মতো হবে

শাহেদ বিছানায় শুয়ে সিগারেট টানছে হাতে ধরা নাকফুলটা, ঘরের দরজা খুলা,

হঠাৎ করে দরজায় টোকা দিয়ে একটি নারী কন্ঠ জানতে চাইলো



আপনি কি আমার নাকফূলটা পেয়েছেন?।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।

জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×