somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন রশিদ হারুন

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাত ঠিক বারোটা এক মিনিটে
চৌরাস্তার মোড়ে-
ট্রাফিক সিগন্যালে লাল বাতি জ্বলতেই
চারজন মানুষ এক সাথে দাঁড়িয়ে পড়ল।

তারা সবাই সবুজ বাতির জন্য অপেক্ষা করছে,
অনেক সময় ধরে লাল বাতি বদলে আর সবুজ হচ্ছে না!!
বিরক্ত হয়ে তারা পরস্পরের দিকে তাকালো।
তারপর গল্প করার জন্য পরিচিত হয়ে গেলো।

বালকটি অস্ফুট কন্ঠে নিজের নাম বললো
-রশিদ হারুন।
কিশোরটি চিৎকার করে তার পরিচয় দিলো -রশিদ হারুন।
যুবকটি খুব উদ্ধত কন্ঠে নাম বললো -আমি রশিদ হারুন।
মধ্যবয়স্ক মানুষটি বিনয়ের সাথে বললো- রশিদ হারুন।
সবাই একসাথে বলে উঠলো
-এতো পরিচিত লাগছে কেনো আজ আমাদের নিজেদের!!

মধ্যবয়স্ক মানুষটি পরম মমতায় বালকটির মাথায় লেপ্টে থাকা
নিয়ন বাতির আলো মুছে দিতে দিতে বললো,
- রাতের বেলায় এক সময় তোমার এই শরীরে
শুধুই চাঁদের আলো আলসেমী করে শুয়ে থাকতো।
এখন বুঝি নিয়ন বাতির আলোও শুয়ে থাকে!!

কিশোরটি যুবকের দিকে তাকিয়ে দুঃখ ধরা গলায় বললো,
-আমাদের ঠিকমতো খেতে দিতে পারতো না বলে
বাবা একদিন পুকুরের জলে ডুবে মরলো!!
তারপর থেকে জল দেখলেই আমি মাছ হয়ে যাই,
সাঁতার কাটি আর বাবাকে খুঁজি।

যুবকটি মধ্যবয়স্ক মানুষটির দিকে তাকিয়ে বললো
- অনেক অভাব, অপমান আর অভিমান!!
এই তিন অভিশাপে একজন নারীও আমাকে ভালোবাসেনি,
তবুও আমি দাঁড়িয়ে আছি রাতের এই আত্মীয়শূন্য শহরে।
আমি এখন শুধু এই শহরের মাছরাঙা পাখি ভালোবাসি।

বালকটি সবার দিকে তাকিয়ে বললো,
- আপনারা সবাই আজ না হয়
আমার সাথেই চলুন,
চাঁদের আলোতে আজ সবাই মিলে আকাশে সাদা বক হয়ে উড়বো।

অনন্ত সময় পর,
ঠিক রাত বারোটা তিন মিনিটে সিগন্যালের সবুজ বাতি জ্বলে উঠলো।
চারজন মানুষ সবাই সবার দিকে তাকাল আবারও,
তারপর বালকটিকে সামনে রেখে পেছন পেছন তিনজন মানুষ
একটি রেখা ধরে সোজাসুজি হাঁটতে লাগলো।

দূর থেকে দেখলে এদের চারজন মানুষ মনে হয় না,
মনে হয় শুধু একজনই রশিদ হারুন অসীমের দিকে হারিয়ে যাচ্ছে।
——————
রশিদ হারুন
কাব্যগ্রন্থ- এই শহরের সব ডাকবাক্স চুরি হয়ে গেছে
১৫/০১/২০২০
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×