এই শিরোনামে এর আগে একটি পোস্ট লিখেছিলাম। কিন্তু কিছু জামাতি ব্লগারের রিপোর্টে মহামান্য মডারেটর ওই পোস্টখানা সরিয়ে দিয়েছিলেন। সে ব্যাপারে অবশ্য আমার গত পোস্টে আলোচনা করেছি। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, যে পোস্টে ২৫ টা + এবং ১২টা – আসে সেই পোস্ট ড্রাফট করা কতটা যৌক্তিক। সামুর কাছে কি ১২জন জামাতির মত ২৫জন সাধারণ ব্লগারের চেয়ে বেশি। এর কোন উত্তর আমি পাই নি। তবে একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছিল পরের দিন। জানি না আমার ওই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় কিনা, সামু কর্তৃপক্ষ রেটিং সিস্টেমই উঠিয়ে দিয়েছিল। যে সকল পাঠকরা এই পোস্টের ১ম পর্বটি পড়তে পারেন নি তাদেরকে এখান থেকে পড়ে নিতে অনুরোধ করা হল।
যে জন্য এই সিরিজের ২য় পর্ব লিখছি তার কারণ হল, ওই ছাগলের সাথে সেদিন আমার আবার দেখা হয়েছিল। তার এবং আমার মধ্যকার ২য় আলাপচারিতার চুম্বকাংশ এই পোস্টে তুলে ধরছি।
আমিঃ আসসালামুয়ালাইকুম ছাগলা ভাই। কেমন আছেন?
ছাগলঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। এই তো আল্লাহর রহমতে ভালাই আছি।
আমিঃ শুনেছেন তো বোধ হয়, আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য তুলে ধরে যে পোস্ট দিয়েছিলাম সেটা সামু কর্তৃপক্ষ সরায় দিছে?
ছাগলঃ হ জানি। কি আর করবা।
আমিঃ ওই পোস্টের বিরুদ্ধে রিপোর্ট কিন্তু ছাগলরাই করেছিল। যে মডারেটররা ওই পোস্ট সরায় দিছে তারাও মনে হয় আপনাদেরই লোক।
ছাগলঃ কতা হাচাই কইছ। আমাদের ছাগল জাতির নাইন্টিনাইন পারসেন্টই একতাবদ্ধ। তয় মাঝেমইধ্যে এক আধটু মিস-কমিউনিকেশন হয়া যায় আর কি। অনেক ছাগলই আছে যারা ছাগলদের আদর্শ যথাযথভাবে বুঝতে চায় না। যেই ছাগলে ওই পোস্টরে রিপোর্ট করছে আর অন্য ছাগলদের রিপোর্ট করতে কইছে হেয় আসলে ছাগল জাতির কলঙ্ক। এই এগো মত কিছু ছাগলের লাইগ্যা আমরা এহনো পা শক্ত কইরা খাড়াইতে পারি না। তয় যাই হোক এরাও একদিন শুধরায় যাবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হবেনই।
আমিঃ আপনার এক ভাইয়ের টুপিসহ একটা ছবি আপলোড করছিলাম, এটা নিয়েই ওরা বেশি চিল্লাচিল্লি করছিল।
ছাগলঃ জানি, আমি সবই জানি। আসলে অন্য সব দলের মত আমাগো গোষ্ঠীর ভিতরেও কিছু গ্রুপিং আছে। আমার ভাই এক গ্রুপের, আর ওই স্পেলুমিয়া অগো আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের। সমস্যা হইল তুমি টুপি সহ আমার ভাইয়ের ছবি আপলোড দিছিলা, এইডা অর সহ্য হয় নাই। হিংসায় জ্বলে উঠছিল ওর সব রক্ত। আসলে ছাগল হয়ে যদি কেউ আরেক ছাগলরে হিংসা করে তয় কিরকম খারাপ লাগে তা যদি বুঝতা। তুমি জানো মহান আল্লাহপাকের রহমতে আমরা ছাগলরা এক অতিন্দ্রীয় তেজের অধিকারী। এই তেজে আমরা চাইলে দেশের সকল মানুষের বংশ নিব্বংশ কইরা দিতে পারি। কিন্তু আমরা তা করি না। এখন ওই ছাগলগুলা যদি এই তেজের অপব্যবহার করে তাইলে তো সেইটা অনেক বড় গুনাহ।
আমিঃ বলেন কি? আপনাদের ছাগল গোষ্ঠীর মধ্যেও গ্রুপিং আছে। এটা তো চিন্তার বিষয় ।
ছাগলঃ আরে না, তোমারে কইলাম দেইখ্যা তুমি আবার ঢোল পিডাইতে যাইও না যেন।
আমিঃ আচ্ছা পিটাব না। শুনেছি নীলছাগল নামের এক ব্লগার নাকি একটা পোস্ট লিখছিল, নাস্তিকদের কেউ বিএসএফের বিরুদ্ধে কিছু লিখে না এই অভিযোগ তুলছিল। তার পোস্টও ডীলীট করে দিছে।
ছাগলঃ আরে না ওইডা নিয়ে এত টেনশন লইয় না। ওই পোস্টে কোন এক শালা আইসা আবার যতগুলা নাস্তিক বিএসএফের বিরুদ্দে লিখছে তার স্ক্রীনশট সবগুলা আপলোড করে দিছে। নীলছাগলরে আমরাই ওই পোস্ট লিখতে কইছিলাম, কিন্তু ওই শালা আইসা যে কাজ করছে তখন আমাগো মানসম্মান নিয়ে টানাটানি লাগবার অবস্থা। তাই আমাগো এক মডারেটররে দিয়া আমরাই ওইটা ডিলিট দেওয়াইছি।
আমিঃ হুমম...। খেলা দেখতেছেন? ক্রিকেট বিশ্বকাপ?
ছাগলঃ হ দেখতাছি তো। ভালই লাগতেছে। তয় খালি একটা বিষয় কষ্ট লাগে। ইশশশশ...... আমাগো দেশের দুই পারেই যদি খেলাডা হইত, তয় আরো ভাল লাগত,
আমিঃ কেন? খেলা তো ঢাকা, চট্টগ্রাম দুই ভেন্যুতেই হচ্ছে। আপনি কি দেশের অন্যান্য অংশ যেমন, খুলনা, রাজশাহী, সিলেটের কথা বলছেন?
ছাগলঃ তোমরা মানুষেরা আসলে মানুষই থাইকা গেলা। শুধরাইলা না। আমরা ছাগলগো দৃষ্টি অনেক দূর পর্যন্ত যায়। তোমাগোর মত কুয়ার ব্যাঙএর দর্শন লইয়া আমরা চলি না। দেশের ওই পার বলতে আমি বুঝাইছি লাহোর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদের কথা। আর তোমরা অহনও ওই সিলেট, রাজশাহীর মধ্যেই পইড়া থাকো। যত্তোসব...
আমিঃ দেখুন পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অতটা ভাল না। শুনেছেন আশা করি, একবার সমস্ত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল। তারপর থেকেই বিদেশী দলগুলো পাকিস্তানে খেলতে যেতে ভয় পায়।
ছাগলঃ ওইগুলা সব ইহুদি-নাসারাদের চক্রান্ত। পাকিস্তানের ক্রিকেটরে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। এর পিছনে র’এর হাত অবশ্যই আছে।
আমিঃ র? মানে ইন্ডিয়ার ওই গোয়েন্দা সংস্থা? তারা ইহুদি-নাসারা হবে কেন?
ছাগলঃ ও সরি, ওইডা মুখদিয়া বাইর হইয়া যায়। আসলে হইব ইহুদি-নাসারা-কাফির-মালাউনদের ষড়যন্ত্র। ওরা জানে মাঠের লড়াইয়ে ওরা আমাগো পাকিস্তানরে হারাইতে পারব না, তাই মাঠের বাইরে সব ষড়যন্ত্র করে। শ্রীলঙ্কানদের উপর যারা হামলা চালাইছিল তারা নামেই ইসলামি জঙ্গি, আসলে সবকয়টা ছিলা র’র এজেন্ট। এই ভাবেই বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১০ এর আয়োজক দেশের তালিকা থেকে পাকিস্তানের নাম সরান হয়। দেখেন বাংলাদেশেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাসে পাথর ছুঁড়ছে। কিন্তু কেউ কি বাংলাদেশকে আয়োজক তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানাইছে? জানায় নি। কারণ এই দেশের সরকারও ইন্ডিয়ার চামচা। তয় আল্লাহ সবসময় ন্যায় বিচার করেন। যেই শ্রীলঙ্কা পাকিস্তান থেইকা ভয়ে পালায় গেইছে তারা নিজের দেশে কি পাকিস্তানরে হারাইতে পারছে? পারে নি। কারণ আল্লাহ সবসময় সত্যের পথের সৈনিকদের ভালবাসেন এবং একমাত্র তাদেরকেই সহায়তা করেন।