আমরা দেখেছি ব্লগার রাজীব নুর সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে মুক্তি লাভ করে ২ দিন ধরে সামুর প্রথম পাতায় লেখা সহ অন্যের পোস্টে মন্তব্য করার সুযোগ ফিরে পেয়েছেন। সে উপলক্ষে ব্লগে একটা খান-পিনার আয়োজন করা হলো।

বল বীর -
আমি চির উন্নত শির!
আমি চির-দুরন্ত দুর্মদ,
আমি দুর্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ।
আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি।
আমি সৃষ্টি, আমি ধ্বংস, আমি লোকালয়, আমি শ্মশান,
আমি অবসান, নিশাবসান।
আমি ইন্দ্রাণী-সুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর রণ-তূর্য;
আমি কৃষ্ন-কন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা-বারিধীর।
আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।
বিঃ দ্রঃ এটা কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার অংশবিশেষ । আমি লিখিনাই।
প্রথমেই থাকছে চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানী খানা
ফারসি মেজবান শব্দের অর্থ "অতিথি আপ্যায়নকারী" বা "নিমন্ত্রণকর্তা" এবং মেজবানি শব্দের অর্থ "আতিথেয়তা" বা "মেহমানদারি"। চট্টগ্রামের ভাষায় একে মেজ্জান বলা হয়ে থাকে। চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী অঞ্চলে মেজবানি জেয়াফত নামে বহুল প্রচলিত, ফার্সি ভাষায় যার অর্থ "ভোজ" বা "ভোজসভা"।
বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায়ও বিভিন্ন উপলক্ষে ভোজের আয়োজন করা হয়। তবে মেজবানি চট্টগ্রাম অঞ্চলেই অধিক জনপ্রিয় ও বহুল প্রচলিত। এই অঞ্চলে পূর্বে হাটেবাজারে ঢোল পিটিয়ে বা টিনের চুঙ্গি ফুঁকিয়ে মেজবানির নিমন্ত্রণ প্রচার করা হতো। মেজবানের উৎপত্তির সঠিক সময় নির্ণয় করা যায় না। তবে এই প্রথা সুদীর্ঘকাল ধরে চর্চিত হয়ে আসছে।
শুটকি ভর্তাঃ
তারপর থাকছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শুটকি ভর্তা। অনেক ধরনের শুটকির জন্য চট্টগ্রাম বিখ্যাত । তার মদ্ধ্যে লইট্যা শুটকি, চিংড়ি শুটকি, ছুরি শুটকি অন্যতম। বাংলাদেশে শুঁটকি ভর্তা খাওয়ার সুদীর্ঘকালের ইতিহাস রয়েছে। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে পহেলা বৈশাখকে উৎযাপন করতে ঘটা করে পান্তা ভাত ও ইলিশ মাছ ভাজা খাওয়া হয় এবং এর সাথে অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে শুঁটকি মাছ ভর্তা। রাজীব নুরের মূক্তি উপলক্ষে নীচে কয়েকরকমের চাটগাইয়া শুটকি ভর্তা দেয়া হলো। অঞ্চল বা বাড়ি ভেদে শুটকি ভর্তার স্বাদ আলাদা হয়। এটা উপকরণ সমূহের তারতম্য কিংবা বাবুর্চির দক্ষতা ও নিপুনতার উপর নির্ভর করে। সব ধরনের শুটকি দিয়ে ভর্তা করা যায় তবে তুলনামূলক ভাবে নরম এবং ছোট মাছের শুটকি দিয়ে সহজে ভর্তা তৈরী করা যায়। প্রথমে মাছগুলো পানিতে ধুয়ে তেলে ভেজে নেওয়া হয়। অতঃপর পাটায় বেটে শুকনো মাছের গুড়ো বা পেস্ট তৈরী করা হয়। এর সংগে পরিমান মত লবণ, পেঁয়াজ, ভাজা শুকনো মরিচ অথবা কাঁচা মরিচ সরিষার তেল দিয়ে মাখানো হয়।
গরম ভাতের সংগে শুটকি ভর্তা অসাধারণ।


কাচ্চি লাভারসদের চট্রগ্রামের কাচ্চি ডাইনের কাচ্চি

এর পর থাকছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার দুরুস। ' দুরুস কুরা' হলো মোরগ বা মুরগীকে জবাই করে পুরো অংশটুকু পরিস্কার করে তা ভেজে পক্রিয়া করে রান্না করা সুস্বাদু খাবার।চামড়া ছাড়ানো আস্ত মুরগী ঘন ঝোল দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে রান্না করাকেই চট্টগ্রামের ভাষায় ‘দুরুস কুরা’ বলে। ঝোলের স্বাদ এবং ঘ্রাণের কারণেই দুরুস মুরগী অন্য আইটেমের চেয়ে আলাদা।
জামাই আদর, অতিথি আপ্যায়ন, বিশেষ মেহমানদারিতে চট্টগ্রামে মুরগীর দুরুসের কদর আছে বেশ। অতিথিদের প্রতি সম্মান জানাতে আস্ত মুরগী দিয়ে দুরুস রান্নার প্রথা এই অঞ্চলে চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে।তবে দুরুস এখন আর শুধু আপ্যায়নেই সীমাবদ্ধ নয়। জনপ্রিয়তা বাড়ায় চট্টগ্রামের অভিজাত হোটেলগুলোতেও বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হচ্ছে ‘দুরুস কুরা’। নগরের চট্টমেট্রো, বীর চট্টলা, হাজী বিরিয়ানিসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় দুরুস পাওয়া যায়।

বেলা বিস্কুট
টিনের ছাউনি দেওয়া কয়েকশ বর্গফুটের একটি দোকান। নাম গণি বেকারি। প্রায় শত বছর আগে চট্টগ্রামের এই বেকারিতেই প্রথম বানানো হয় বেলা বিস্কুট। মচমচে, সুস্বাদু এবং ডাউস সাইজের কারণে অল্পদিনেই জনপ্রিয়তা পায় এই বিস্কুট। চায়ের দোকান থেকে ধনাঢ্যদের ডাইনিং টেবিল- জায়গা করে নেয় সবখানে। প্রথমে ময়দা, ডালডা, গুঁড়ো দুধ, চিনি, লবণ ও তেল মিশিয়ে তৈরি করা হয় খামির। সঙ্গে দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের মাওয়া। মাটির তন্দুরে একদিন রাখার পর প্রথম দফায় দেড়-দুই ঘণ্টা সেঁকা হয়। দ্বিতীয় দফায় আরেকবার সেঁকে তৈরি করা হয় বেলা বিস্কুট। প্রতি পিস বিক্রি হয় সোয়া দুই টাকায়।অনেক প্রবাসীও গণি বেকারি থেকে বেলা বিস্কুট কিনে দেশের বাইরে নিয়ে যায়
চায়ের সঙ্গে খেতে গণি বেকারির বেলা বিস্কুট শুধু দেশে নয়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশেও রফতানি হয়

মহেশখালীর পান

চুন, সুপারি, মশলা দিয়ে মহেশখালীর পান মুখে পুরে দিতেই মিষ্টিতে ভরে যায় পুরো মুখ। সিনেমা কিংবা গানে- মহেশখালীর পানের কথা আছে সবখানে। বড় আকার এবং মিষ্টি স্বাদের কারণেই দেশ-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রামের মহেশখালীর এই পান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, মহেশখালীর প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে মিষ্টি পান চাষ হয়। এখানে পানের বরজ সাধারণত দুই ধরনের- পাহাড়ি বরজ এবং বিল বরজ। সব মিলিয়ে প্রায় ১৩ হাজার বরজে পান চাষ হয় মহেশখালীতে।
কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ছাড়াও ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ঢাকায় মহেশখালীর পান সরবরাহ হয়। সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশেও রফতানি হয় মহেশখালীর মিষ্টি পান।
সর্বশেষ রাজীব নুর সহ যারা সামুকে ভালোবাসে তারা সবাই ব্লগে থাকুক। কেউ ব্লগ ছেড়ে না যাক । এটাই প্রত্যাশা।
তথ্য সূত্র ও ছবিঃ গুগল, উইকি, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, বাংলানিউজ ২৪ ডট কম।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


