
একটি কনসার্টে গেসিলাম ফ্রেন্ড সার্কেল নিয়া। বিকাল থেকে কনসার্ট শুরু হলেও ভালো ব্যান্ড গুলো পারফর্ম করে সন্ধ্যার পর থেকে। চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। গুরু জেমস এর কনসার্ট আমি মিস করতাম না। সাধারণত সার্কেল নিয়ে যেতাম। স্টেডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ। একটু পরেই গুরু জেমসের পারফর্ম শুরু হবে। সূর্যাস্তের ধূসররঙের আভা তখনো শেষ হয়ে যায়নি। চারকোনার ফ্লাশলাইট গুলো উজ্জ্বল থেকে খয়েরী হয়ে উঠতেছিল। গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে তারুণ্যের উন্মাদনা। গুরু জেমসের জন্য অপেক্ষা করতে ধৈর্যের সীমা অতিক্রম হয়ে গেসে বহু আগে। পাহাড় ও সমুদ্রের অপূর্ব মিলনে প্রকৃতির মাধুরি দিয়ে গড়া অপরূপ চাঁটগায় সন্ধ্যা নামার সৌন্দর্যের কথা নতুন করে মনে করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। সমস্ত চাঞ্চল্য দমন করে মনকে স্থির শান্ত করে উষা ও সন্ধ্যাকে চা, কফি, আড্ডা, গুরুর গানের জন্য অপেক্ষা করার মাধ্যমে উপভোগ করসিলাম। গুরু হয়তো তখন ব্যাকস্টেজে ধ্যানের সাথে সুরের মিলন ঘটাচ্ছেন অর্ধলক্ষ ভক্ত শ্রোতাকে উজাড় করে দিবেন বলে।
এমন একটি মুহুর্তে আমাদের সাথে যুক্ত হলো আরো একটি গ্রুপ। ৩ টি মেয়ে ২ টি ছেলে। আমরা ৭ জন। ১২ জনের গ্রুপ। এর মধ্যে একজন ছিল সুপার ক্লাস। ধরে নেই ওর নাম এভ্রিল। ওর সৌন্দর্য দেখে যারা প্রেমে পড়বেনা তাদের ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। মনে করসিলাম মাগরিবের আজানের বিরতির পর জেমস ওঠবে। উঠলো মাইলস। এর পর বাচ্চু ভাই। সর্বশেষ গুরু। গুরুর কনসার্ট যারা দেখেন তা জানেন গুরু অধিকাংশ সময় স্টেজে ওঠেই সর্বনিম্ন ১০ মিনিট গিটার বাজান। এর মধ্যে এভ্রিল নামক মেয়েটির সাথে ইনটিমিসি ইনক্রিজ করসে। আমি সাধারণত ফাস্ট ছেলে মেয়ে গুলো কে বন্ধু হিসেবে পেতে উপভোগ করি। আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে শুধু একজন সিনিয়র ফ্রেন্ড আছে। প্রকৃত রিলিজিয়াস। কোন ভন্ডামি করেনা।
তো আর কি এভ্রিল এর প্রফেশনাল সিগারেট খোর এর মতো সিগারেট খাওয়া দেখেই দুর্বলতা। গুরু শুরু করেছিলেন দুষ্টু ছেলের দল দিয়ে। শেষ করেছিলেন দুঃখিনী দুঃখ করোনা গান দিয়ে। তখনতো মুবাইল ছিল না এভেইলেভল। সবার হাতে মুবাইল আসে ২০০৫ এর পর থেকে। এর আগে মুবাইল ইউজার খুবই ছিল।
তো এর পর ঐমেয়ের সাথে আর কখনো যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু ক্রাশ টা রয়েই গেল।
বাসার আশে পাশের কোন কমিউনিটি হলে কনসার্ট হচ্ছে। যে ভোকাল গান পরিবেশন করসিলেন, তিনি এভারেজ গান করছেন। কখনো বাচ্চু কখনো জেমস কখনো মাইলস এরকম। এই পোস্ট যখন লেখা শুরু করছি তখন জেমসের 'লিখতে পারিনা কোন গান আজ তুমি ছাড়া' গানটি গাচ্ছিল ভোকাল। যখন লেখা শেষ হচ্ছে তখন ফিমেল ভোকাল থেকে ভেসে আসছে - "ছাড়িয়া যাইওনারে বন্ধু মাইয়া লাগাইয়া"
গুরুর কনসার্টের সাথে ভারতীয় জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী নেহা কাক্কর এর সাথে একটা দারুণ মিল রয়েছে। গান গাইতে গাইতে হঠাৎ থেমে গিয়ে ভক্তদের গাইতে দেন। সবাই গেয়ে উঠে গুরু স্টেজ থেকে ফীল নেন। কনসার্টের এই দৃশ্যটা সত্যি অসাধারণ। নিচের নেহার কনসার্টের ভিডিওটির ৩ মিনিটের পর থেকে দেখুন দৃশ্যটি কতো নস্টালজিয়া হওয়ার মতো।
ছবি - ডেইলি স্টার।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ১:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




