
ছবি - ফেসবুক।
নোটঃ পোস্টে ৩ টি ব্লাউজ বিহীন শাড়ি পড়া নারী মডেলের ছবি আছে। যাদের এগুলো অপছন্দ তারা প্লিজ পোস্টটি পড়বেন না।
এক বছর আগে বাংলাদেশের জনপ্রিয় উপস্থাপিকা,অভিনেত্রী ও মডেল মারিয়া নূর কে দিয়ে একটা ফাল্গুনের ফটোশ্যুট করেছিলাম। স্টাইলিং এ ছিল লিনা। কেন জানি তার মাথায় আসছে, গতানুগতিক শ্যুট না করে একটু অন্যভাবে করা যাক। তার প্ল্যান ছিল, আমাদের নারীরা তো একসময় ব্লাউজ ছাড়াই শাড়ি পড়তেন। বর্তমানের আধুনিক ট্রেন্ড অনুসারে সে পুরনো ঐতিহ্য, মারিয়ার মতো জনপ্রিয় ও পরিচিত মডেলকে দিয়ে উপস্থাপন করলে খারাপ হয়না। এর পরে, দেশের জনপ্রিয় ফ্যাশন ম্যাগাজিন আইস টুডে, ফ্যাশন মডেল তানজিয়া জামান মিথিলা কে দিয়ে ব্রাউজ ছাড়া শাড়িতে একটা ব্রাইডাল শ্যুট করে, আমি ব্লাউজ ছাড়া শাড়িতে দুর্গাপূজার একটা শ্যুট করি। ছবিগুলো যারা দেখেছেন ২/৪ জন মৌলবাদী ছাড়া সবাই দারুণ প্রশংসা করেছেন। কিন্তু একটা ফ্যশন ট্রেন্ড নিয়ে যদি কেউ বাড়াবাড়ি করে, যেমন ঐতিহ্য,সংস্কৃতি বা ফ্যাশনের উদ্দেশ্যে নয় বরং দেশের অধিকাংশ মানুষের সেন্টিমেন্টে আঘাত করার উদ্দেশ্যে উক্ত ফ্যাশনকে কাজে লাগায় তবে তা অনুচিৎ।

ছবি - আমি।
অশ্লীলতা আসলে কী?
অশ্লীল একটি বিশেষণ পদ যার সমার্থবোধক শব্দ হলোঃ কুৎসিত, অভদ্র, জঘন্য, নীচ; কুরুচিপূর্ণ।
পোশাক কি অশ্লীলতা প্রকাশ করে? কোন কোন ক্ষেত্রে হতে পারে। যেমনঃ একটি মেয়ে টপস আর মিনি স্কাট পড়লো।এটা কি আপনি অশ্লীল পোশাক বলবেন? মনে হয়না। কারণ মুসলিম দেশ গুলো ছাড়া অন্য সব দেশের নারীদের এমন পোশাক পড়ে রাস্তায় বের গতে দেখা যায়। কাজে কর্মে যেতে দেখা যায়। তবে ছেলেদের সিডিউস করার উদ্দেশ্যে যদি একটি মেয়ে ক্লিভেজ দেখায় বা এমন ভাবে পোশাক পড়ে যার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো ছেলেদের সিডিউস করা, তবে সেটাকে কি অশ্লীল পোশাক বলা যাবে?

ছবি- আমি
মোটকথা হলো ফ্যাশন বা স্টাইল ট্রেন্ড অনুযায়ী যদি কেউ মানানসই পোশাক পড়ে, গেটাপ নেয়, তাহলে তা অশ্লীল পোশাক নয়। বোরখা পড়েও কিন্তু সিডিউস করা যায়। যেমন কেউ এমন ভাবে বোরখা পড়ল, যাতে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এর মেজোমেন্ট অনুমাণ করা যাচ্ছে, তাহলে সে বোরখাও কিন্তু অশ্লীল পোশাক তাদের মতে।আসলে পোশাক কখনো অশ্লীল হয়না। অশ্লীল হয় মস্তিষ্ক এবং মানসিকতা।

ছবি - আইস টুডে ম্যাগাজিন।
নারীবাদীরা যেটা নিয়ে আন্দোলন করছেন তা হলো, স্বাধীন দেশে যে যার ইচ্ছা মতো পোশাক পরিধান করবেন। শুধু মাত্র মুসলিম প্রধান দেশ বলে, মুসলিমরা ঠিক করে না দিক কে কেমন পোশাক পড়বে।১৯৭০ সালের আগে আমাদের দেশের নারীরা ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়তেন। তখন তো এটা অশ্লীল ছিলোনা এখন কিভাবে অশ্লীল হয়ে গেল?তবে ওনাদের বুঝতে হবে, ফ্যাশন হলো মুখ স্টাইল হলো মুখশ্রী। স্টাইল হলো এমন একটা গেটাপ নেয়া যেটাতে আপনাকে মানায়। একজন ফ্যাশন মডেল যদি ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়েন, তাকে মানাচ্ছে কারণ তার ফিগারটা এমন যে, সে ভ্যানগাড়ি থেকে ৪০ টাকা দামের একটা টিশার্ট পড়লেও সুন্দর দেখাবে। কিন্তু একটি মেয়ে দেখতে তেমন সুন্দর না। ফিটনেস নেই। তিনি যদি ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস কিংবা শপিংয়ে যায় অশ্লীল নাহলেও তাতো হাস্যকর হয়ে যাবে। আমি মোটেও বডি শেমিং করছিনা, বুঝাতে যাকে যে পোশাকে মানায় তার সেটা পড়া উচিৎ।কোন ভাবেই বলছিনা যে নারী নিজের পছন্দমতো পোশাক পড়বেনা। যে যেটাতে কমফোর্ট সে সেটাই পড়বে।ড্রেসাপ স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে হওয়া উচিৎ।
কে কি পোশাক পড়বে এটা যার যার ব্যক্তিগত অধিকার। কেউ কারো ব্যক্তিগত অধিকারে হস্তক্ষেপ না করুক।তবে প্রতিটি দেশের একটি নিজস্ব সংস্কৃতি আছে।নিজস্বতার চেয়ে সুন্দর কিছু নেই হয়তো। কেউ কাউকে নির্ধারণ করে না দিক কে কি পোশাক পড়বে।যার ইচ্ছে সে বোরখা পড়ুক, যার ইচ্ছা সে টপস জিন্স পড়ুক। অনধিকার চর্চার মতো ক্লাসলেস কাজ আর কিছু নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১০:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




