
প্রথমেই বলে দিচ্ছি। সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধুমপান করলে ক্যান্সার সহ নানান রকম রোগ হয়। মৃত্যুও হয়। তবে ধুমপান করলে মৃত্যু এটা পুরাপুরি সত্য নয়। কার মৃত্যু কিভাবে হবে এটা পূর্ব নির্ধারিত। জন্ম ও মৃত্যুর উপর আমাদের লোন নিয়ন্ত্রণ নেই। ক্যান্সার সহ বিভিন্ন রোগে যাদের মৃত্যু হয় তারা নাকি শহীদের মর্যাদা পায়। এরকম হলে তো সবাই ধুমপান করে স্বইচ্ছায় ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে শহীদী মওত ঘটিয়ে জান্নাত কনফার্ম করত।
যাই হোক মূল পোস্টে আসি। বৃষ্টি বিলাস করার মত এক রাতে চট্টগ্রাম থেকে বাসে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দশ্যে। রাত ১১.৪৫ এর বাস ছিল। বাসের নাম সাউদিয়া। এই বাসে ভ্রমণের সুবিধা হল, মধ্যবিরতিতে কুমিল্লার হোটেল গুলোতে যখন বাস থামে তখন- লাঞ্চ ডিনারের জন্য এক্সট্রা খরচ হয়না। বুফে ফ্রী। টিকেটের দামও কম। কিন্তু কথায় আছে সস্তার ৩ অবস্থা। মিরসরাই ক্রস করে ফেনি যাওয়ার পথে হঠাৎ বাসের এসি নষ্ট হয়ে যায়। ঘণ্টা খানিক ট্রাই করার পরও ঠিক করা যায়নি। পরে কর্তৃপক্ষ আরেকটি বাস আনানোর ব্যাবস্থা করে। কিন্তু বাস আসছে চট্টগ্রামের আরেফিন নগর থেকে। সর্বনিম্ন ২ ঘণ্টা লাগবে। তখন অলরেডি রাত ২ টা। পুরা বাসে সবাই পুরুষ। নারী শুধু ৫ জন। তার মধ্যে একজন একা একা ভ্রুমণ করছে।
আমি মোটামুটি চেইন স্মোকার। সবসময় সিগারেট থাকে পকেটে। মেজাজ এমনিই কি কারণে গ্রীন লাইনের টিকেট কাটলাম না আফসোস করতে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। পরের দিনই শ্যুট ছিল গুরুত্বপূর্ণ তাই দুশ্চিন্তাও হচ্ছিল। আশে বাশে কোন দোকান তো দূরের কথা কিছুই নেই। ভাগ্য ভালো ১ প্যকেট সিগারেট নিয়ে উঠছিলাম। মোবাইলে খুব বেশী চার্জ ছিলনা। মাত্র ৪০%। সেটা দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত যেতে হবে। তাই গান শোনারও অপশান ছিলনা। এরকম বোরিং জার্নি জীবনে করিনি।
কিন্তু কথায় আছেনা? যদি থাকে নসীবে আপনা আপনি আসিবে। আমি বাস থেকে নীচে নেমে সিগারেট খাচ্ছি, মেয়ে এসে বলল এক্সকিউজ মি, একটা সিগারেট হবে? অবাক হইনি কারণ আমি যে প্রফেশন এর সাথে জড়িত সেখানে মেয়েদের স্মুক করা খুবই নরমাল। দিলাম একটা। লাইটার জ্বালিয়ে আগাইয়াও দিলাম। মেয়ে থ্যাংকস দিয়ে আপন মনে সিগারেট খাওয়া শুরু করল। ক্যামিস্ট্রি শুরু। যাক একজন ভ্রমণ পার্টনার পাওয়া গেলো।তাও আবার স্মুকার। এতক্ষণে অলটারনেটিভ বাস চলে আসছে। কুমিল্লায় গেলাম। ভোর ৫ টা তখন। একসাথে ব্রেক ফাস্ট করলাম। চা বিড়ি খেলাম। পরের পথ টুক সে ঘুমিয়ে ছিল। অসম্ভব স্মার্ট। যেসব মেয়েরা একটু স্বাধীন, ডুন্ট কেয়ার টাইপ ও ফাস্ট ওরা একটু বেশীই স্মার্ট হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ নোংরা মনের। এমন ভাবে মেয়েটির দিকে তাকাচ্ছিল যেন মেয়েটা কলগার্ল।
আজ অনেকদিন পর বাসে ঢাকা যাচ্ছি। অবশ্যই একা না। আমার সাথে সুস্মিতা আছে। কুমিল্লায় সিগারেট খাচ্ছি। শতশত পুরুষের চোখ এমন ভাবে তাকাচ্ছে যেন সে এই মাত্র দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজটি করছে।
সত্যি সেলুকাস। বড়ই বিচিত্র এদেশের মানুষের মানসিকতা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৩:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



