মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলছি ,লম্পট ইজ্জত কেড়ে নিবে ,ইজ্জত কি এতই সস্তা
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , আপনি সাম্প্রতিক সময়ে আপনার অনেক জনসভায় বলেছেন “মা-বোনদের ইজ্জত যারা লুটে নিয়েছিল তাদের বিচার বাংলার মাটিতে অবশ্যই হবে।” বিচার সংক্রান্ত বাক্যাংশটুকু উতসাহব্যঞ্জক । কিন্তু আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত কি এত সস্তা যে শুকরশাবক কতিপয় সেনা লম্পট ও তাদের দোসররা তা নষ্ট করার ক্ষমতা রাখে । নির্যাতিতা সেই বীরাঙ্গনরা চিরদিন আমাদের কাছে পরমশ্রদ্ধেয়। জানি আপনার এই উক্তি যৌননির্যাতন সংশ্লিষ্ট চিরায়ত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ যেখানে নির্যাতিত মেয়েটিকে মানুষ হিসেবে নয় বরং নিতান্ত যৌনলালসাপূরনকারী মাংসপিন্ড হিসাবে দেখা হয় । ধর্ষনের পর এই মাংসপিন্ডটি সেকেন্ড হ্যান্ড নিম্নমানের পন্যে পরিনত হয় । বিয়ের বাজারে তার মূল্য আর অবশিষ্ট থাকেনা । শুধু তাই নয় সামাজিকভাবে তাকে বয়কট করা হয়(যেখানে উচিত ধর্ষককে সামাজিকভাবে বয়কট করা), পারিবারিকভাবে হতে হয় লাঞ্ছনার শিকার । অশিক্ষিত ও রক্ষনশীল অনেক পরিবার তার দায়িত্ব নিতেও অস্বীকৃতি জানায় অথবা ধর্ষকের সাথে তার বিয়ে দেয়ার দাবি তুলে ধর্ষককে পুরষ্কৃত করা হয় (কোন মধ্যযুগীয় সমাজে আমরা থাকি) । তাই মেয়েটি আইনের আশ্রয় নেয়া দূরে থাক যথা সম্ভব সব কিছু চেপে রাখে আর প্রতিমূহুর্তে অপরিমেয় মানসিক অশান্তির মধ্যে জীবন অতিবাহিত করে । কারন সমাজ তাকে শিখিয়েছে ধর্ষিতার সম্মান থাকেনা । এভাবে সমাজ তাকে পরোক্ষভাবে সবকিছু চেপে রাখতে বাধ্য করে । অসমসাহসী দৃড়চেতা কিছু মেয়ে হয়তো নিতান্ত নিজের যোগ্যতায় প্রতিকূল পরিবেশে প্রতিটি পদক্ষেপে বৈরি এক সমাজের সাথে লড়াই করে বেচে থাকে । তাদের সংখ্যা নিতান্তই হাতে গোনা । এই চিত্র পুরো দক্ষিণ এশিয়ার । তাই এই অঞ্চলে ধর্ষন পরবর্তী বিচার এর সাথে মেয়েটির পুনর্বাসন সংক্রান্ত জটিলতা সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করে । অন্যদিকে মেয়েটির পুনর্বাসন নিয়ে মাথা ব্যথা থাকেনা কারও ।তাই দেখা যায় চাঞ্চল্যকর কিছু ধর্ষন ঘটনার ক্ষেত্রে (যেখানে ভিকটিম উচ্চবিত্ত শ্রেণীর একটি মেয়ে) মেয়েটির বিচার নিয়ে গনমাধ্যম যতোটা সোচ্চার হয় মেয়েটির পুনর্বাসন নিয়ে নিয়ে ততোটা আগ্রহ থাকেনা । পত্রিকাগুলো কয়টি নির্যাতিতা মেয়ের মানসিক , পারিবারিক, সামাজিক লাঞ্ছনার খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে ? (এখানে আমি ধর্ষিত মেয়েটির নির্যাতনের ঘটনাকে নিয়ে গনমাধ্যমের রগরগে সেনসেশন তৈরি ও টি আর.পি ব্যবসার ঘোরবিরোধী ।) যেহেতু টঙ্গে চড়ে সং সেজে চিতকার না করলে আমাদের কানে কিছু পৌছায়না তাই চোখের সামনে সামাজিক নির্যাতন এর চিত্রটি আমরা এড়িয়ে চলতে পছন্দ করি । কারন তা না করলে সমাজের ভিত্তিমূলে কুঠারাঘাত করতে হয় । একটি মেয়েকে মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হয় । যৌনতৃপ্তিদায়ক , সন্তান উতপাদক , স্থায়ী চাকর বা অর্থউপার্জনকারী বস্তুটির নিয়ন্ত্রনের অধিকার আর সমাজপতিদের থাকেনা । চলচ্চিত্রে ধর্ষনের দৃশ্য দেখে একদিকে যৌনসুড়সুড়ি আর অন্যদিকে মেয়েটির কষ্ট থেকে বিমলানন্দ নেয়ার সুযোগ থাকেনা । তাই ধর্ষককে কালেভদ্রে বিচার এর কাঠগড়ায় তুলে (ধর্ষক যদি সমাজের নিম্নশ্রেণীর ক্ষমতাহীন) সমাজ তৃপ্তির ঢেকুর তোলে । কিন্তু নির্যাতিত মানুষটিকে রক্ষনশীল সমাজের বিষযন্ত্রনা থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব কার ? সমাজ কি সামনের দিনগুলোতে ও ধর্ষিতাকে এভাবে অসম্মান করবে ? মানসিকতা পরিবর্তনের কোন লক্ষন দেখতে পাইনা যখন রাষ্ঠ্রের সবচেয়ে ক্ষমতাধারী ব্যাক্তি যে নিজেও নারী হয়ে বলেন ধর্ষক নারীর ইজ্জত লুটে নিয়েছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
লিখেছেন
ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।...
...বাকিটুকু পড়ুন
মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন...
...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল...
...বাকিটুকু পড়ুন

জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি...
...বাকিটুকু পড়ুনলিখেছেন
এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন