somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাকিস্তানি পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও বাঙ্গালীবিদ্বেষ-প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় প্রতিবাদ

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের পাঁচ জন বাচ্চাকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে পাঁচ রকম উত্তর পাওয়া যাবে ।কারন প্রত্যেক বছর তার পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বদলে যায় । বিশ্বের আর কোন দেশের মানুষ তাদের ইতিহাস নিয়ে এতো কনফিউজড কিনা আমি জানিনা । তবে ভুলে ভরা সাম্প্রদায়িকতায় পূর্ণ আত্নদাম্ভিক ইতিহাস শিখিয়ে শিশুদের কচি মনকে কলুষিত করার রেকর্ড আছে আর একটি জাতির, পাকিস্তান । পাকিস্তানের National commission for Justice and peace নামক একটি সংস্থা দেশটির সবগুলো প্রদেশে পঠিত ১ম ধেকে দ্বাদশ শ্রেণীর সবগুলো বই গবেষনা করে একটি সেমিনার করে যার শিরোনাম ছিল এরকম ‘Taalim Ya Nafrat ki Aabiari’ । এই রকম শিরোনাম করার কারন হল গবেষনায় দেখা যায় ২২ টি বইয়ের প্রায় ৫৫ টি অধ্যায় বাংলাদেশী ,হিন্দু , খ্রিষ্টান ও ভারত বিদ্বেষে ভরা ।সেই সাথে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যাচার ও বিষোদগার করা হয়েছে নির্লজ্জভাবে ।

মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পাকিস্তানের ৫ম শ্রেণীর উর্দু বইয়ে বলা হয়েছে

“আমাদের্ উচিত ভারতীয় হিন্দুদের ঘৃণা করা কারন তারাই পাকিস্তানকে বিভক্ত করেছিল”।

৮ম শ্রেণীর পাকিস্তান স্টাডিজ এর একটি অধ্যায়ের কয়েকটি লাইন এরকম

“ভারত পূর্ব পাকিস্তানের কতিপয় নেতার সাহায্যে পূর্ব পাকিস্তান আক্রমন করে ও পাকিস্তান থেকে আলাদা করে”।

৯ম ১০ম শ্রেণীতে পাকিস্তানী কিশোররা ৭১ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে । কি জানতে পারে? দেখুন

“পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার কারন :

১. ইয়াহিয়া সরকারের অদক্ষতা
২. পূর্বপাকিস্তানের ব্যবসা-বাণিজ্যে হিন্দুদের আধিপত্য
৩. ভাষা সমস্যা
৪. ৭০ এর নির্বাচন”।

বইটিতে আরও বলা হয়েছে
“পাকিস্তানের শিক্ষাখাত এর নিয়ন্ত্রক ছিল কিছু হিন্দু শিক্ষক । তারা মানুষকে উস্কে দিত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে । এ কারনে পশ্চিম পাকিস্তানীদের ঘৃণা করত পূর্ব পাকিস্তানীরা”।

আবার বলা হয়েছে,

“রাশিয়া ভারতকে সাহায্য করেছিল কারন পাকিস্তানে ছিল আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি”।

পাকিস্তানের পাঠ্যবইয়ে স্থান পায়নি বাঙ্গালীর ভাষা আন্দোলন , ৬ দফা আন্দোলন , গনঅভ্যুত্থান , শিক্ষা আন্দোলন । ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে বলা হয়েছে নিছক পাক ভারত যুদ্ধ ।যেখানে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী দেশপ্রেমের প্রতীক, ভারত আক্রমনকারী আর বাঙ্গালীরা বিশ্বাসঘাতক , ভারতীয় দালাল । এভাবে পাকিস্তানীদের মনে শৈশব থেকে বাঙ্গালীদের বিশ্বাষঘাতক জাতি হিসাবে পরিচিত করে রোপন করা হয় সাম্প্রদায়িকতার বীজ।

এবার আমার পয়েন্টে আসি । জাপানের পাঠ্যবইয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীন আক্রমন ও চীনাদের উপর জাপানীদের অত্যাচারের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার কারনে চীনা সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে অনেক আগে প্রতিবাদ জানায় কিন্তু বাংলাদেশ এর কোন সরকার কি এ পর্যন্ত পাকিস্তানীদের ঘৃণ্য এই ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদ একবারও কি করেছে ? করেনি । কারন সামরিক অপশক্তি আর নির্বাচিত অগণতান্ত্রিক সরকারগুলো নিজেরাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কখনো করেছে বিকৃত আবার কখনো লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে , আবার কখনো ইতিহাস পরিনত হয়েছে একক ব্যাক্তির গুনগাথায় । এইসব মেরুদন্ডহীন সরকারগু্লোর কাছে প্রতিবাদ আশা করা মূর্খের স্বর্গে বাস করার নামান্তর । এখনই যথার্থ সময় আমাদের জন্য ইতিহাসের প্রতিটি নায়ককে তার পূর্ন সম্মান দিয়ে সত্যকে স্বীকার করে নেয়া এবং পরাজিত শক্তিকে সত্য ইতিহাস স্বীকার করে নিতে বাধ্য করা ।

তথ্যসূত্র :
১.eurasia.com Pakistan
২.the radical truth (পাকিস্তানী ব্লগ)
৩.jihad watch
৪.what are we teaching our children –Raza Rumy (e tribune)
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×