মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ
কার্যকারণ নীতি সৃষ্টিজগতকে ব্যতিক্রমহীনভাবে শাসন করছে৷ এ সৃষ্টিজগতের সর্বত্রই এ নীতি বলবত্ রয়েছে৷ কার্য-কারণ নীতি অনুসারী এ বিশ্বের সকল কিছুই তার সৃষ্টির ব্যাপারে এক বা একাধিক কারণ বা শর্তের উপর নির্ভরশীল৷ আর ঐসব কারণ বা শর্ত সমূহ (পুর্ণাঙ্গ কারণ) বাস্তবায়নের পর সংশ্লিষ্ট বস্তুর বাস্তব রূপ লাভ (ফলাফল) অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে৷ আর তার প্রয়োজনীয় কারণ বা শর্ত সমূহের সবগুলো বা তার কিছু অংশের অভাব ঘটলে সংশ্লিষ্ট বস্তুর সৃষ্টি লাভ অসম্ভব হয়ে পড়ে৷ উপরোক্ত বিষয়ের বিস্তারিত বিশেষণের মাধ্যমে নিম্নোক্ত দু'টো বিষয় আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ঃ
১. যদি আমরা কোন একটি সৃষ্টি বস্তুকে (ফলাফল) তার সৃষ্টির পূণর্াঙ্গ কারণ সমূহের সাথে আনুপাতিক তুলনা করি, তাহলে ঐ সৃষ্ট বস্তুর (ফলাফল) অস্তিত্ব এবং তার কারণ সমূহের (পূণর্াঙ্গ) অনুপাত হবে অপরিহার্য তা৷ কিন্তু আমরা যদি ঐ সৃষ্টি বস্তুকে তার সৃষ্টির পূণর্াঙ্গ কারণের সাথে তুলনা না করে বরং তার আংশিক কারণের সাথে তুলনা করি, তাহলে সেক্ষেত্রে ঐ সৃষ্ট বস্তুর অস্তিত্ব (ফলাফল) আর তার আংশিক কারণের অনুপাত হবে সম্ভাব্যতা৷ কেননা, অসম্পূর্ণ বা আংশিক কারণ তার ফলাফল সংঘটনের ক্ষেত্রে শুধু সম্ভাব্যতাই দান করে মাত্র, অপরিহার্যতা নয়৷ সুতরাং এ সৃষ্টিজগতের প্রতিটি বস্তুই তার সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ কারণের উপর আবশ্যিকভাবে নির্ভরশীল৷ এই আবশ্যিকতা ও বাধ্যবাধকতা সৃষ্টিজগতের সর্বত্রই ক্ষমতাসীন৷ আর এর কাঠামো এক ধরণের আনুক্রমিক ও আবশ্যিক গুণক সমূহের (ঋধপঃড়ত্ং) দ্বারা সুসজ্জিত৷ তথাপি, প্রতিটি সৃষ্ট বস্তুর (যা তার সৃষ্টির আংশিক কারণের সাথে সম্পর্কিত) মধ্যে তার সৃষ্টির সম্ভাব্যতার বৈশিষ্ট্য সংরক্ষিত থাকবে৷ পবিত্র কুরআনে এই আবশ্যিক নীতিকে 'ক্বাযা' বা 'ঐশী ভাগ্য' হিসেবে নামকরণ করেছে৷ কেননা, এই আবশ্যিকতা স্বয়ং অস্তিত্ব দানকারী স্রষ্টা থেকেই উত্সারিত৷ এ কারণেই ভাগ্য এক অবশ্যম্ভাবী ও অপরিবর্তনশীল বিষয়৷ যার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোন ব্যতিক্রম বা পক্ষপাত দুষ্টতা কখনোই ঘটার নয়৷
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন ঃ "(জেনে রাখ) সৃষ্টি ও আদেশ দানের অধিকার তো তাঁরই"৷ (সুরা আল্ আ'রাফ, ৫৪ নং আয়াত৷)
মহান আল্লাহ বলেন ঃ ''যখন তিনি কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন বলেন হও, আর তা হয়ে যায়''৷ (সুরা আল্ বাকারা , ১১৭ নং আয়াত৷)
মহান আল্লাহ আরও বলেন ঃ "আর আল্লাহই আদেশ করেন যা বাধা দেয়ার (ক্ষমতা) কারো নেই " (সুরা আর্ রা'দ, ৪১ নং আয়াত৷)
২৷ পূর্ণাঙ্গ কারণের প্রতিটি অংশই তার নিজস্ব ক্ষমতা অনুযায়ী বিশেষ মাত্রা ও প্রকৃতি দান করে৷ আর এভাবেই সম্মিলিত কারণ সমূহের (পূর্ণাঙ্গ কারণ) প্রদত্ত মাত্রা ও প্রকৃতি অনুযায়ী পূণর্াঙ্গ কারণ নির্দেশিত পরিমাণ অনুযায়ী কারণ সমূহ (পুর্ণাঙ্গ কারণ) প্রদত্ত মাত্রা ও প্রকৃতির সমষ্টিই এই অনুকুল ফলাফল (সৃষ্টবস্তু)৷ যেমনঃ যেসব কারণ মানুষের শ্বাসক্রিয়া সৃষ্টি করে, তা শুধুমাত্র নিরংকুশ শ্বাসক্রিয়ারই সৃষ্টি করে না৷ বরং তা মুখ ও নাকের পাশর্্বস্থ নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ুকে নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার শ্বাসনালী দিয়ে ফুসফুস যন্ত্রে পাঠায়৷ একইভাবে যেসমস্ত কারণঃ মানুষের দৃষ্টিশক্তি দান করে, তা কোন শর্ত বা কারণবিহীন দৃষ্টিশক্তির জন্ম দেয় না৷ বরং একটি নিদিষ্ট নিয়মে ও পরিমাণে ঐ দৃষ্টিশক্তির সৃষ্টি করে৷ এ জাতীয় বাস্তবতা সৃষ্টিজগতের সকল সৃষ্টিনিচয় ও তাতে সংঘটিত সকল কর্মকান্ডেই বিরাজমান, যার কোন ব্যতিক্রম নেই৷ পবিত্র কুরআনে এ সত্যটিকে 'কাদ্র' বা ভাগ্য হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷
আর সকল সৃষ্টির উত্স মহান আল্লাহ প্রতি এ বিষয়টিকে আরোপিত করা হয়েছে৷ মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন ঃ "আমি প্রতিটি বস্তুকেই তার (নির্দিষ্ট) পরিমাণে সৃষ্টি করেছি"৷ (সুরা আল্ কামার, ৪৯ নং আয়াত৷)
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেছেন ঃ "আমারই নিকট রয়েছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার এবং আমি তা পরিজ্ঞাত পরিমাণেই সরাবরাহ করে থাকি"৷ (সুরা আল্ হাজার, ২১ নং আয়াত৷)
একারণেই মহান আল্লাহ নির্ধারিত ভাগ্য অনুযায়ী যে কোন কাজ বা ঘটনারই উদ্ভব ঘটুক না কেন, তার সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়ে৷ এভাবে আল্লাহ নির্ধারিত ভাগ্য অনুযায়ী যা কিছু সৃষ্টি বা সংঘটিত হোক না কেন, তা অবশ্যই আল্লাহ পক্ষ থেকে নির্ধারিত বিশেষ পরিমাণ ও মাত্রা অনুযায়ীই হবে৷ এব্যাপারে সামান্য তম ব্যতিক্রমও কখনো ঘটবে না৷
আলোচিত ব্লগ
তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল
সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।
আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?
অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়
১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷
চলুন গল্পটা শুনে আসি৷
বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন