গাবতলীতে আ'লীগ-যুবলীগের হামলায় বিএনপি সর্মথকদের
অর্ধশতাধিক বাড়িতে ভাংচুরঃ লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ
জি এস এস নিউজ ঃ বগুড়ার গাবতলীতে দুর্বৃত্তদের হাতে যুবলীগ নেতা মামুনুর রশিদ মামুন (৩৫) খুন হওয়ার জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় আওয়ামী যুবলীগের হামলায় বিএনপি সমর্থিতদের অর্ধশতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাদের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি বিধবা ও ভিক্ষুক পরিবার। তারা নিরীহ প্রাণী একটি ছাগলকে পিটিয়ে জবাই করে রেখে গেছে।
জানা যায়- গত ২২ সেপ্টেম্বর গাবতলী উপজেলার নাড়ুয়ামালা ইউপির তেঁতুলগছি হাটে চোর সন্দেহে আজিমুদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের পর পানির পরিবর্তে মুখে প্রস্রাব ঢেলে দেয়া হয়। পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর যুবলীগ নেতা মামুন এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে দূর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসার পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল পৌনে ৮ টায় মামুনের মৃত্যু ঘটে। পর দিন ২৯ সেপ্টেম্বর তার লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন শেষে স্থানীয় আ'লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে রামদা, লাঠি-সোঠাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মামুনের হামলাকারীদের বাড়িতে ব্যাপক ভাবে ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। প্রত্যক্ষ দর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল অনুমান সাড়ে ৯ টার সময় চককাতুলি গ্রাম থেকে কয়েক শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোটা হাতে নিয়ে নাড়–য়ামালা ইউপির মধ্যকাতুলী গ্রামের উত্তর, দণি, পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ায় প্রায় ৫ ঘন্টা ব্যাপি দফায় দফায় হামলা চালিয়ে স্থানীয় বিএনপি সমর্থক পিন্টুর ৫টি পাকা রুম, ১টি দোকান, আমিনুরের ৫টি পাকা রুম, মন্তেজার রহমানের ২টি, জাহাঙ্গীরের ২টি, আজিজার রহমানের ৪টি, রাজিব উদ্দিনের ৩টি, মুকুল হোসেনের ২টি টিনের ঘরে অগ্নি সংযোগ, ব্যাপকভাবে ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। হামলা কারীরা মামুন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ছাড়াও ঐ এলাকায় ভিুক জাবেদা, বিধবা সাহেরার একমাত্র শোবার ঘর সহ অর্ধশতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ ছাড়াও তারা ৫ ঘন্টা ব্যাপী তান্ডবে ১০/১২টি খরের পালা, পাটখরির স্তুপে অগ্নি সংযোগ, বিভিন্ন গাছপালা কেটে সাবার করে দেয়। প্রত্যদর্শীরা আরো জানায়, মামুন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এমাজ উদ্দিনের ভাইয়ের ৪টি গরু যার আনু মানিক মূল্য দেড় ল টাকা সহ বিভিন্ন লোকের বাড়ি থেকে ১০/১২টি গরু লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে। হামলা কারীরা জনৈক ব্যক্তির ১টি খাসি ছাগল পিটিয়ে আহত করার পর জবাই করে ফেলে রেখে গেছে। এসময় ঘরের আসবাব পত্র, টিউবয়েল, দোকানপাটে ব্যাপকভাবে ভাংচুর করা হয়। লুটপাট, হামলা ও ভাংচুরে প্রায় ১০ লাধিক টাকা ঊর্ধ্বে তি হয়েছে বলে প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা ও কর্মীরা পুলিশের উপস্থিতিতে আ'লীগ যুবলীগের কর্মীরা এ ধরণের নেক্কারজনক হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। তবে আ'লীগের প থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। এ সময় মধ্যকাতুলী গ্রামের ৪টি পাড়ায় পৃথক পৃথক হামলাকারীদের ঠেকাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। ঘটনা সামাল দিতে থানা পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি, গ্রামপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদেরকে কাজ করতে দেখে গেছে। বগুড়ার এসপি সার্কেল এহসান এবং এ এসপি আরিফ রহমান ঘটনার পর থেকেই এলাকায় অবস্থান নেয়। হামলার সময় স্থানীয় এলাকাবাসী নারী ও পুরুষ ভয়ে দিক-বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। তেতুলগাছি বাজারে সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। মধ্যকাতুলী সম্পূর্ণ গ্রামে নারী-পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। তবে এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারে নাই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




