somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শূন্যের গুনিতক
ছোট বেলায় বাংলা ছবির খুব একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলাম, আমাদের বাংলা ছবিগুলাতে নায়কদের উপস্থাপন করা হয় মোটামূটী দাগি টাইপের ভিলেনের সাঝভঙ্গিতে, শূধু আমাদের দেশে যে এই কালচার তা কিন্তু না, হলিউড, বলিউড সকল ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই রীতি পালন করা হয় নায়কদের উপস্থ

নরমাল প্যারানরমাল (গল্প ভাবলে গল্প, তবে ঘটনা বাস্তব )

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি তখন এতোটা ছোট না যে কিছু বুঝিনা, আবার এতোটা বড় না যে সব কিছু বুঝে একাকার করে ফেলেছি। পড়তাম ক্লাস ফোর কি ফাইভ। থাকতাম চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটে। আমাদের বাসা ছিল পাঁচতলা, খুব ছোটবেলা থেকেই ঐখানে থাকতাম আমরা। দেওয়ান হাট যে জায়গাটিতে আমরা থাকতাম, ওই এলাকাটাতে অনেক আগে একটা বিশাল দীঘি ছিল বলে লোকমুখে শুনেছি। চট্টগ্রামের মানুষরা অনেকেই এই কথা জেনে থাকবেন। তবে সেটা কোন সমস্যা ছিল না, ওই এলাকাটা প্রচুর ঘনবসতি পূর্ণ এলাকা। এবার মূল ঘটনায় আসিঃ
আমাদের ছিল দুই বেডের বাসা, এক বেড আব্বু আম্মু আর আরেকটাতে থাকতো আমার আপু আর আমার ছোট খালা। আমি ছিলাম পরিবারে সবচাইতে ছোট মানুষ, তাই আমাকে থাকতে হতো ড্রয়িং রুমে ডিভার্ন এ বিছানা করে। একরাত্রে গরমকাল, আমি জানালা খুলে ঘুমাচ্ছি। আমার রূমে ছিল একটা ডিম লাইট, নীল রঙ এর। হঠাৎ রাত দুইটা কি তিনটা এমন সময়ে ঘুম ভেঙ্গে যায়, সময়ের ব্যাপারটা আমার কাছে তখন সেই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ছিলনা তাই খেয়াল করে রাখিনি। আমার ঘুম থেকে উঠে দেখলাম সোফার উপরে একজন মহিলা শুয়ে আছে, চুল আঁচড়াচ্ছে। মহিলাটার বর্ণনা মোটামুটি এরকম, চেহার স্পষ্ট নয়, (অবশ্য আমি অতোটা খেয়াল করে দেখেছিলাম তাও নয়)। চুল গুলো লম্বা। আঁচড়ানোর সময়ে চুলটা সোফা থেকে নীচ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছিল (আমাদের সোফাটা বসার স্থান ভূমি থেকে প্রায় দেড় ফুট উপরে হবে)। শুয়ে ছিল সোজা হয়ে, একপাশে চুল ছড়ানো (বাইরের পাশে যেপাশে বসলে পা থাকে)। ফ্যানের বাতাসে কিছু চুল বাতাসেও উড়ছে। পরনে নীল রঙ এর শাড়ি( হয়তো সেটা নীল দেখাচ্ছিল ডিম লাইটের আলোতেই)। আমি এসব ব্যাপার লক্ষ করলাম, লক্ষ করলাম বলতে এটা এমনিতেই নজরে চলে আসে। আমি ব্যাপারটা নিয়ে কোন প্রকার বিচলিত হই নি ওই মূহুর্তে কারন ঠিক সেই মূহুর্তে আমার মনে হয়েছিল এটা আমার খালামনি, রাতের বেলায় হয়তো ঘুম আসছেনা, তাই আমার রূমে এসে শুয়ে আছে। আমার একটা অভ্যাস/ বদ অভ্যাস যা বোধহয় অনেকেরি আছে, সেটা হল রাত্রে ঘুম ভাঙ্গলে আমি ওয়াশরুমে গিয়ে হালকা ফ্রেশ হয়ে আসতাম। তো আমি মহিলার দিকে নজর নজর না দিয়ে আমার কাজ আমি করে ফ্রীজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে খেয়ে সেই বতলটা আলসেমী করে ফ্রীজে না রেখে রেখেছিলাম ফ্রীজের পাশে টেবিলে। পানি খেয়ে আমি আমার রূমে ঘুমাতে চলে এসেছি, তখনো ওই জিনিসটা চুল আঁচড়াচ্ছিল। আমার মাথায় তখন কিছুই খেলা করেনি, আমি শুধু ওইটাকে আমার খালামনি ভেবে খুব স্বাভাবিক চিন্তাভাবনাই করছিলাম। রূমে ঢুকে খুব স্বাভাবিকভাবেই ( তার দিকে ভাল করে না তাকিয়ে) জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি এখানে কি করেন? উনিও খুব স্বাভাবিকভাবে তবে অনেক ক্ষীন কন্ঠে (যেটা আমার খালার কন্ঠ না) বললেনঃ কিছুনা, এমনি শুয়ে আছি। আমি কন্ঠের ব্যাপারটা পাত্তা দিলাম না, কারন তখন ও আমার প্রচন্ড ধুম পাচ্ছিল। আমি ঘুমাতে গেলাম।
খুব ভোরে আমার ঘুম ভাংল সেদিন। এবং সাথে সাথেই মাথার মাঝে ঝড়ের বেগে কিছু ব্যাপার খেলে গেল। সেগুলো বলার আগে পাঠকদের কিছু কথা জানা প্রয়োজন। তা হলঃ আমাদের বাসার চারিপাশে ছিল অনেক লোহার কারখানা, তাই খুব সকাল সকাল সেখানে কাজ শুরু হয়ে যেতো আর আমার রূম টা বারান্দার সাথে থাকাতে সকালে এই আওয়াজে ঘুমাতে পারতাম না। তাই আমি আমার রূমের দরজা ভীতর থেকে বন্ধ করে ঘুমাতাম। যেটা সেদিন ও করেছিলাম। এবং ঠিক তখনি মনে পড়ল যে আমি আমার রূমের দরজা খুলেই রাত্রে ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম এবং এসে ঘুমানোর আগে সেই দরজা বন্ধ করেই ঘুমিয়েছিলাম।কিন্তু এই ব্যাপারগুলা ওই সময়ে আমার মাথায় কিছুই আসেনি। আমি সাথে সাথে সোফার দিকে তাকালাম, কেউ নেই। সাথে সাথে উঠলাম, দরয়াজ বন্ধ করাই আছে। ভাবলাম রাত্রে আমি হয়তো স্বপ্ন দেখেছি। তখন ও আমার ঘরের কেউ ঘুম থেকে উঠেনি। আমি তাড়াতাড়ি স্বপ্নের ব্যাপারটা নিশ্চিৎ হওয়ার জন্য ফ্রীজের কাছে গেলাম, পানির বোতলটার কথা খেয়াল ছিল। বোতলটা সেখানে সেই অবস্থাতেই ছিল রাত্রে যেই অবস্থায় আমি পানি খেয়ে রেখেছিলাম। আম্মুকে ডেকে তুললাম ভয়ে, চিৎকার শুনে খালাও উঠে গেল। আম্মুকে ঘটনা বলছিলাম আর খালা আমার সামনে এলো, তখন মনে পড়ল, আমার খালামনির চুল ঘাড় পর্যন্ত, সেটা কখনোই সোফার উপর থেকে এতোনীচে যাবেনা। আমি আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলাম। আম্মু আমার পুরা কথা শূনে দৌড়ে আমার রূমে গেল। সোফার পাশে পড়ে থাকতে দেখল একটা খুব স্বাধারন চিরুনী, যেটা আমাদের ঘরের নয়। ঘরের দরজা জানালা সব ই পরখ করে দেখল, সব ই স্বাভাবিক, ভীতর থেকেই আটকানো...... দিনটি (রাত্রিটি) ছিল সোমবার। দিনটির কথা বললাম কারন ঠিক এই দিনেই আমার জীবনে সেই রূমেই আরো অনেক ঘটনা ঘটেছে যা আমি ভবিষ্যতে শেয়ার করবো সময় পেলে।
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের জাতির কপালে শনি আছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:১১



একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তারা বলেছে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, সুতরাং ভারতের অধীন হওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অধীন থাকা ভালো। তারা মনে করেছে অধীকাংশ নাগরিক তাদের দলে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?

জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।

জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩



আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×