somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেলাই দিদিমনি এখন রোবট

০১ লা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পোশাক বুনতে মানুষের হাতের জুড়ি নেই। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব এখন বস্ত্র শিল্পে পাকা হাতের তুলনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বেছে নিচ্ছে স্বয়ংক্রিয় রোবট ব্যবহার। ব্যয় সংকোচনই এর মূল লক্ষ্য। আবার শ্রমিক খরচ কম থাকায় অনেক পোশাক কারখানা ঝুঁকছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর দিকে। এক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে এশিয়া। সস্তা দরে কাজ হাসিলের তালিকায় চীন-বাংলাদেশ তো রয়েছেই, এখন নতুন করে যোগ হচ্ছে মিয়ানমার। কিন্তু এ প্রক্রিয়া প্রাণহীন স্বয়ংক্রিয় সেলাই মেশিনের ব্যবহার ঠেকাতে কি যথাযথ? প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সেলাইকে স্বয়ংক্রিয় করার চেষ্টা চলছে অনেক। কাপড় কেটে পোশাক তৈরি থেকে শুরু করে পকেট অথবা বোতাম লাগাতে সাহায্য নেয়া হচ্ছে মেশিনের। কিন্তু জিন্স, টি-শার্টের মতো পরিপূর্ণ পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে সক্ষম— এমন যন্ত্র তৈরি অত্যন্ত কঠিন। বিশেষ করে দুটি কাপড় জুড়ে দেয়ার ব্যাপারটি রোবটিক করে তোলা সহজ নয়। দুটি কাপড়কে এক সমান্তরালে রেখে সুইয়ের নিচে নিতে হয়। তা যাতে স্থানচ্যুত না হয়ে পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হয়। তবে এটি বড় কোনো বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন আটলান্টার টেক্সটাইল সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার অটোমেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ডিকারসন। সফটওয়্যার অটোমেশন এমন কিছু যন্ত্রপাতি উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে, যা স্বয়ংক্রিয় সেলাই পদ্ধতিকে সহজ করে দেবে। কম্পিউটারে সংযুক্ত ক্যামেরা ব্যবহার হবে সেলাইয়ের লাইনিং ঠিক রাখার জন্য। গবেষকরা আগেও এ চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তা সফল হয়নি।

আটলান্টার দলটি হাই-স্পিডের ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে ১ হাজার ফ্রেমের ছবি নির্ভুলভাবে তোলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ ছবিগুলো পরবর্তীতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে তুলনা করতে ব্যবহূত হয়। এ রকম প্রাণবন্ত ছবিগুলো কম্পিউটারকে কাপড়ে ব্যবহূত সঠিক সুতা খুঁজে বের করতে ভূমিকা রাখবে। সফটওয়্যার অটোমেশনের নির্বাহী বিল লকহার্টের ভাষ্য অনুযায়ী, গেল বছর এ প্রকল্প প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো রকম বাধাবিঘ্ন ছাড়াই যুক্ত করা গেছে দুটি কাপড়কে। এখন কাজ চলছে মেশিনটিকে আরো উন্নত করার।

এ প্রক্রিয়ার নামকরণ হয়েছে ‘লওরি’। বছরের শেষ নাগাদ আমেরিকার এক কারখানায় লওরি পৌঁছে দেয়া হবে। তবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার সক্ষম মেশিন বাজারে আসতে আসতে আগামী বছর। দেশেই পোশাক তৈরির কাজ সম্পন্ন করা আমেরিকার বেশির ভাগ ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ইচ্ছে। অ্যালাবামাভিত্তিক টেক্সটাইল-ইকুইপমেন্ট ফার্ম হেন্ডারসন সৌইংয়ের মালিক ফ্রাঙ্ক হেন্ডারসন এমন ধারণার কথাই জানালেন। আর নতুন প্রক্রিয়াটি তাদের ইচ্ছে পূরণে যথাযথ ভূমিকা রাখবে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্লানকেট রিসার্চের বিশ্লেষক জ্যাক প্লানকেটের মতে, এশিয়ার বস্ত্র উৎপাদকরা ন্যূনতম মজুরি রাখছে খুবই কম। অন্যদিকে কাজের পরিসর বাড়ানোর জন্য অনেক গার্মেন্ট কোম্পানিই আগ্রহী হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটিতে। বাংলাদেশের এক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে প্রযুক্তিটি স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু এটিই পোশাক শিল্পে ব্যবহারযোগ্য একমাত্র প্রযুক্তি নয়। শীর্ষ পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাইকি ব্যবহার করছে ফ্লিঙ্কনিট নামের এক প্রযুক্তি। তবে প্রযুক্তি ব্যবহারের সময়সীমা সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। বর্তমানে কর্মীদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। অন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানও স্বয়ংক্রিয় মেশিন ব্যবহারে ঝুঁকছে। এতে ব্যয় কমানো সহজ হয়ে উঠলেও কর্মসংস্থান কমবে। ফলে আগামীতে বিশ্বব্যাপী বেকারত্বের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা অত্যধিক।


তথ্যসূত্র: দি ইকোনমিস্ট পোশাক বুনতে মানুষের হাতের জুড়ি নেই। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব এখন বস্ত্র শিল্পে পাকা হাতের তুলনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বেছে নিচ্ছে স্বয়ংক্রিয় রোবট ব্যবহার। ব্যয় সংকোচনই এর মূল লক্ষ্য। আবার শ্রমিক খরচ কম থাকায় অনেক পোশাক কারখানা ঝুঁকছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর দিকে। এক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে এশিয়া। সস্তা দরে কাজ হাসিলের তালিকায় চীন-বাংলাদেশ তো রয়েছেই, এখন নতুন করে যোগ হচ্ছে মিয়ানমার। কিন্তু এ প্রক্রিয়া প্রাণহীন স্বয়ংক্রিয় সেলাই মেশিনের ব্যবহার ঠেকাতে কি যথাযথ? প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সেলাইকে স্বয়ংক্রিয় করার চেষ্টা চলছে অনেক। কাপড় কেটে পোশাক তৈরি থেকে শুরু করে পকেট অথবা বোতাম লাগাতে সাহায্য নেয়া হচ্ছে মেশিনের। কিন্তু জিন্স, টি-শার্টের মতো পরিপূর্ণ পোশাক তৈরির প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে সক্ষম— এমন যন্ত্র তৈরি অত্যন্ত কঠিন। বিশেষ করে দুটি কাপড় জুড়ে দেয়ার ব্যাপারটি রোবটিক করে তোলা সহজ নয়। দুটি কাপড়কে এক সমান্তরালে রেখে সুইয়ের নিচে নিতে হয়। তা যাতে স্থানচ্যুত না হয়ে পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হয়। তবে এটি বড় কোনো বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন আটলান্টার টেক্সটাইল সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার অটোমেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ডিকারসন। সফটওয়্যার অটোমেশন এমন কিছু যন্ত্রপাতি উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছে, যা স্বয়ংক্রিয় সেলাই পদ্ধতিকে সহজ করে দেবে। কম্পিউটারে সংযুক্ত ক্যামেরা ব্যবহার হবে সেলাইয়ের লাইনিং ঠিক রাখার জন্য। গবেষকরা আগেও এ চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তা সফল হয়নি।

আটলান্টার দলটি হাই-স্পিডের ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে প্রতি সেকেন্ডে ১ হাজার ফ্রেমের ছবি নির্ভুলভাবে তোলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ ছবিগুলো পরবর্তীতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে তুলনা করতে ব্যবহূত হয়। এ রকম প্রাণবন্ত ছবিগুলো কম্পিউটারকে কাপড়ে ব্যবহূত সঠিক সুতা খুঁজে বের করতে ভূমিকা রাখবে। সফটওয়্যার অটোমেশনের নির্বাহী বিল লকহার্টের ভাষ্য অনুযায়ী, গেল বছর এ প্রকল্প প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো রকম বাধাবিঘ্ন ছাড়াই যুক্ত করা গেছে দুটি কাপড়কে। এখন কাজ চলছে মেশিনটিকে আরো উন্নত করার।

এ প্রক্রিয়ার নামকরণ হয়েছে ‘লওরি’। বছরের শেষ নাগাদ আমেরিকার এক কারখানায় লওরি পৌঁছে দেয়া হবে। তবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার সক্ষম মেশিন বাজারে আসতে আসতে আগামী বছর। দেশেই পোশাক তৈরির কাজ সম্পন্ন করা আমেরিকার বেশির ভাগ ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ইচ্ছে। অ্যালাবামাভিত্তিক টেক্সটাইল-ইকুইপমেন্ট ফার্ম হেন্ডারসন সৌইংয়ের মালিক ফ্রাঙ্ক হেন্ডারসন এমন ধারণার কথাই জানালেন। আর নতুন প্রক্রিয়াটি তাদের ইচ্ছে পূরণে যথাযথ ভূমিকা রাখবে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্লানকেট রিসার্চের বিশ্লেষক জ্যাক প্লানকেটের মতে, এশিয়ার বস্ত্র উৎপাদকরা ন্যূনতম মজুরি রাখছে খুবই কম। অন্যদিকে কাজের পরিসর বাড়ানোর জন্য অনেক গার্মেন্ট কোম্পানিই আগ্রহী হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটিতে। বাংলাদেশের এক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে প্রযুক্তিটি স্থাপনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু এটিই পোশাক শিল্পে ব্যবহারযোগ্য একমাত্র প্রযুক্তি নয়। শীর্ষ পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাইকি ব্যবহার করছে ফ্লিঙ্কনিট নামের এক প্রযুক্তি। তবে প্রযুক্তি ব্যবহারের সময়সীমা সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। বর্তমানে কর্মীদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। অন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানও স্বয়ংক্রিয় মেশিন ব্যবহারে ঝুঁকছে। এতে ব্যয় কমানো সহজ হয়ে উঠলেও কর্মসংস্থান কমবে। ফলে আগামীতে বিশ্বব্যাপী বেকারত্বের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা অত্যধিক।


তথ্যসূত্র: দি ইকোনমিস্ট
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:১০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×