ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুসলেম উদ্দিনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত যুদ্ধাপরাধের মামলা ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খারিজ হয়ে গেছে । মামলার তদন্ত শেষে অ্যাডভোকেট মুসলেম উদ্দিন এমপিসহ ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়নি বলে গত ৩ মে আদালতে ওসি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর গত ৯মে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা আছে, উক্ত মামলার বাদি যদি অপরাপর বিবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধি বা মানবতা বিরোধী অপরাধের ডকুমেন্টারী কোন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করিতে পারেন তবে তাহাকে এই ব্যপারে যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারী সংস্থা এবং যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এদিকে মামলাটি খারিজের পর পর গতকাল বুধবার অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন এমপি মামলার বাদী ফুলবাড়িয়া উপজেলার জোরবাড়িয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে একটি মানহানির মামলা ও বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করেন। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক লুৎফর রহমান শিশির মানহানি মামলাটি আমলে নিয়ে যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলায় বিজ্ঞ বিচারক সমন জারি করেন।
জানা যায়, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুসলেম উদ্দিনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গত ৬ এপ্রিল জেলার জোরবাড়িয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফুলবাড়িয়া আদালতে একটি যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়ের করেন। পরে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ফুলবাড়িয়া থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। এরপর মামলাটি তদন্ত শেষে মুসলেম উদ্দিন এমপিসহ ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়নি বলে গত ৩ মে আদালতে ওসি একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। এছাড়া বাকী ১০ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারলে তা যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারী সংস্থা ও যুদ্ধাপরাধী ট্র্রাইব্যুনালের শরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। পরে গত ৯মে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি খারিজ করেন।
ফুলবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিনের দায়েরকৃত যুদ্ধাপরাধীর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১নং আসামী সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক তথা ডকুমেন্ট, তথ্য-উপাত্ত ও রেকর্ডপত্র উপস্থাপন বা প্রদান করতে পারে নাই এবং কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মোসলেম উদ্দিনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চূড়ান্ত তালিকাভূক্ত করেছে। এছাড়া তিনি ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, ১৯৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য এবং ১৯৮৬ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণেতাদের একজন এবং মূল সংবিধানের অন্যান্যেদের সাথে মোসলেম উদ্দিনের স্বার রয়েছে। অপরদিকে মামলার ৪নং বিবাদী আ: জব্বার, ৬নং বিবাদী মফিজ উদ্দিন ও ৮নং বিবাদী আ: জব্বার গেজেটে প্রকাশিত স্বীকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। এরা সকলেই সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। এদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের কোনো তথ্যগত বা ডকুমেন্টারী পাওয়া যায়নি।
অ্যাডভোকেট মুসলেম উদ্দিনের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরন মামলার বিবরনে বলা হয়, জালাল উদ্দিনের ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে প্রমানিত হয়েছে এবং গত ৯ মে জালাল উদ্দিনের বিদ্বেষমূলক মামলাটি বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক অবসান ঘটে। এদিকে জালাল উদ্দিনের দায়ের করা মিথ্যা মামলাটি সকল দৈনিক পত্রিকা, বেসরকারী টিভি চ্যানেল ও রেডিওতে প্রচারিত হওয়ায় ব্যাপক সম্মানহানী ঘটেছে। তাই মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক মোকাদ্দমা জনিত কারনে এবং পত্র-পত্রিকায় মিথ্যা ও মানহানীকর বক্তব্য প্রকাশ পাওয়ায় জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৫০০/৫০১/২১১ ধারায় একটি মানহানি মামলা ও বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করেন। ####

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





