somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময় গেলে সাধন হবে না (লালনের কিছু গান)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

" বাউলরা মানুষে মানুষে জাতী, ধর্ম, বর্ণ, ধনী, গরীব যাবতীয় ভেদাভেদ অস্বীকার করে, সাম্যতার ডাক দেয়, মানবতার ডাক দেয়। এই কি তাদের অপরাধ? নাকি তারা নিরীহ এটাই তাদের অপরাধ? শাহ্ আব্দুল করিম, হাছন রাজা, কুদ্দুস বয়াতির ভূমি সিলেটে বাউলদের উপর এই আক্রমণ লজ্জাস্কর।"




সময় গেলে সাধন হবে না

সময় গেলে সাধন হবে না
দিন থাকতে দ্বীনের সাধন কেন জানলে না
তুমি কেন জানলে না
সময় গেলে সাধন হবে না
জানো না মন খালে বিলে
থাকে না মিল জল শুকালে ।।
কি হবে আর বাঁধা দিলে
মোহনা শুকনা থাকে, মোহনা শুকনা থাকে,
সময় গেলে সাধন হবে না
সময় গেলে সাধন হবে না
অসময়ে কৃষি কইরে মিছা মিছি খেইটে মরে
গাছ যদি হয় বীজের জোরে ফল ধরে না
তাতে ফল ধরে না,
সময় গেলে সাধন হবে না ।।
অমাবস্যায় পূর্নিমা হয়
মহা জোগ সে দিনের উদয় ।।
লালোন বলে তাহার সময়
দনডোমো রয় না, দনডোমো রয় না,দনডোমো রয় না
সময় গেলে সাধন হবে না
দিন থাকতে দ্বীনের সাধন কেন জানলে না
তুমি কেন জানলে না
সময় গেলে সাধোন হবে না


ধন্য ধন্য বলি তারে

ধন্য ধন্য বলি তারে
বেঁধেছে এমন ঘর
শূন্যের উপর ফটকা করে।।
সবে মাত্র একটি খুঁটি
খুঁটির গোড়ায় নাইকো মাটি,
কিসে ঘর রবে খাঁটি
ঝড়ি-তুফান এলে পরে।।
মূলাধার কুঠরি নয় টা
তার উপরে চিলে-কোঠা
তাহে এক পাগলা বেটা
বসে একা একেশ্বরে।।
উপর নীচে সারি সারি
সাড়ে নয় দরজা তারি
লালন কয় যেতে পারি
কোন্‌ দরজা খুলে ঘরে।।


বাড়ির কাছে আরশী নগর

বাড়ির কাছে আরশী নগর
(একঘর) সেথা পড়শী বসত করে-
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।।
গেরাম বেড়ে অগাধ পানি
নাই কিনারা নাই তরণী পারে,
বাঞ্ছা করি দেখব তারে
(আমি) কেমনে সেথা যাই রে।।
কি বলব পড়শীর কথা,
হস্ত পদ স্কন্ধ মাথা নাই-রে
ক্ষণেক থাকে শূণ্যের উপর
(ওসে) ক্ষণেক ভাসে নীরে।।
পড়শী যদি আমায় ছুঁতো,
যম যাতনা সকল যেতো দূরে।
সে আর লালন একখানে রয়-
(তবু) লক্ষ যোজন ফাঁক রে।।


ও যার আপন খবর আপনার হয় না

ও যার আপন খবর আপনার হয় না
একবার আপনারে চিনতে পারলে রে।
যাবে অচেনারে চেনা, যাবে অচেনারে চেনা।।
ও সাঁই নিকট থেকে দূরে দেখায়
যেমন কেঁশের আড়ে পাহাড় লুকায় দেখ না।
আমি ঘুরে এলাম সারা জগৎরে।
তবু মনের গোল তো যায় না।।
ও সে অমৃত সাগরের সূধা।
সূধা খাইলে জিবের (জিহ্বা) ক্ষুধা তৃষ্ণা রয় না।
ফকির লালন মরল জল পিপাষায়রে।
আছে থাকতে নদী মেঘনা।।


কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?

আছেন কোথায় স্বর্গপুরে কেউ নাহি সন্ধান জানে
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?
আছেন কোথায় স্বর্গপুরে কেউ নাহি সন্ধান জানে
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?
জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে
পৃথিবী গোলাকার শুনি-অহর্নিশি ঘোরে আপনি
তাইতে হয়,তাইতে হয় দিন-রজনী,
জ্ঞানী-গুনী তাই মানে
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?
জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে
আরেকদিকে নিশি হলে অন্যদিকে দিবা বলে
একদিকে নিশি হলে অন্যদিকে দিবা বলে
আকাশতো দেখে সকলে,খোদা দেখে কয়জনে?
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?
জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে।
আপন ঘরে কে কথা কয় না জেনে আসমানে তাকায়
লালন বলে
লালন বলে কেবা কোথায় বুঝিবে দিব্যজ্ঞানে
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?
আছেন কোথায় স্বর্গপুরে কেউ নাহি সন্ধান জানে
কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে?
জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে।


কে কথা কয় রে দেখা দেয় না?

কে কথা কয় রে দেখা দেয় না?
নড়ে চড়ে হাতের কাছে
খুঁজলে জনমভর মেলে না।।
খুঁজি তারে আসমান জমিন
আমারে চিনি না আমি,
এ বিষম ভ্রমের ভ্রমি
আমি কোন্‌ জন, সে কোন্‌ জনা।।
হাতের কাছে হয় না খবর,
কি দেখতে যাও দিল্লির শহর!
সিরাজ সাঁই কয়, লালন রে তোর
সদাই মনের ঘোর গেল না।।


আর আমারে মারিস নে মা

বলি মা তোর চরণ ধরে
ননী চুরি-ই আর করব না
আর আমারে মারিস নে মা
ননীর জন্যে আজ আমারে
মারলি মাগো বেধে ধরে
দয়া নাই মা তোর অন্তরে…এ..
সাল পেতেই গেল জ্বালা
পরে মারে পরের ছেলে
কেদে যেয়ে মাকে বলে
সেই মা জননী নিষ্ঠুর হলে..এ .এ.
কে বোঝে শিশুর বেদনা
আর আমারে মারিস নে মা
ছেড়ে দে মা হাতের বাধন
যাই যে দিকে যায় দুই নয়ন
পরের মাকে ডাকবে লালন
তোর গৃহে আর থাকবে না মাগো
তোর গৃহে আর থাকবে না
আর আমারে মারিস নে মা
বলি মা তোর চরণ ধরে
ননী চুরি-ই আর করব না
মাগো ননী চুরি-ই আর করব না
আর আমারে মারিস নে মা


এ দেশেতে এই সুখ হল

এ দেশেতে এই সুখ হল
আবার কোথা যাই না জানি।
পেয়েছি এক ভাঙ্গা নৌকা
জনম গেল ছেঁচতে পানি।।
কার বা আমি, কেবা আমার
প্রাপ্ত বস্তু ঠিক নাই তার,
বৈদিক মেঘে ঘোর অন্ধকার
উদয় হয় না দিনমণি।।
আর কি রে এই পাপীর ভাগ্যে
দয়াল চান্দের দয়া হবে
কতদিন এই হালে যাবে
বহি এ পাপের তরণী।।
কার দোষ দিব এ ভুবনে
হীন হয়েছি ভজন-গুণে
লালন বলে, কতদিনে
পাব সাঁইর চরণ দুখানি।।


কররে পিয়ালা কবুল শুদ্ধ ঈমানে

মিশবি যদি জাত ছেফাতে এদিন আখেরের দিনে
কররে পিয়ালা কবুল শুদ্ধ ঈমানে।।
পিলে নুরের পিয়ালা খুলে যাবে রাগের তালা
অচিন মানুষের খেলা দেখবিরে দুই নয়নে।
ধর তরি যা পারি নুরি চিনরে সেই নুর জহরি
এহি চার পিয়ালা ভারি আছে অতি গোপনে।
ফানাফি শেখ ফানাফি রাসুল ফানাফিল্লা ফানা বাকাই কুল
এহি চার মোকামে লালন ভজ মুর্শিদ নির্জনে।।


নবী না চিনলে সেকি খোদার ভেদ পায়

নবী না চিনলে সেকি খোদার ভেদ পায়
চিনিতে বলেছেন খোদে সেই দয়াময়।।
কোন নবী হইল ওফাত
কোন নবী বান্দার হায়াত
নিহাজ করে জানলে নেহাত
যাবে সংশয়।।
যে নবী পারের কান্ডার
জিন্দা সে চার যুগের উপর
হায়াতুল মুরছালিন নাম তার
সেই জন্য কয়।।
যে নবী আজ সঙ্গে তোরো
চিনে মন তার দাওন ধরো
লালন বলে পারের কারো
সাধ যদি রয়।।


আমায় চরণ ছাড়া কোরো না হে

আমায় চরণ ছাড়া কোরো না হে
দয়াল হরি।
পাপ করি পামরা বটে
দোহায় দিই তোমারি।।
অনিত্য সুখে সর্ব ঠাঁই,
তাই দিয়ে জীব ভোলাও গো সাঁই।
তবে কেন চরণ দিতে
করো হে চাতুরী।।
চরণের ঐ যোগ্য মনো নয়,
তথাপি মন রাঙা চরণ চাই।
দয়াল চাঁদের দয়া হলে
যেতো অসুখ সারি।।
ক্ষম অধীন দাসের অপরাধ
শীতল চরণ দাও হে দ্বীননাথ
লালন বলে ঘুরাইও না,
হে মায়াচারী…


ধর রে অধরচাঁদেরে অধরে অধর দিয়ে

ধর রে অধরচাঁদেরে অধরে অধর দিয়ে।
ক্ষীরোদ মৈথুনের ধারা ধর রে রসিক নাগরাযে
রসেতে অধর ধরা, থেক রে সচেতন হয়ে।।
অরসিকের ভোলে ভুলে, ডুবিস নে কূ-নদীর জলে
কারণবারির মধ্যস্থলে, ফুটেছে ফুল অচিন দলে
চাঁদ-চকোরা তাহে খেলে, প্রেমবাণে প্রকাশিয়ে।।
নিত্য ভেবে নিত্য থেক,
লীলার বাসে যেও না কোসেই দেশেতে মহাপ্রলয়,
মায়েতে পুত্র ধরে কায়ভেবে বুঝে দেখ মনুরায়,
সে দেশে তোর কাজ কি যেয়ে।।
পঞ্চবাণের ছিলে কেটে, প্রেম যাচো স্বরূপের হাটে
সিরাজ সাঁই বলে রে লালন, বৈদিক বাণে করিস নে রণ
বাণ হারায়ে পড়বি যখন রণ-খোলাতে হুবড়ি খেয়ে।।


ও সে ফুলের মর্ম জানতে হয়

ও সে ফুলের মর্ম জানতে হয়।
যে ফুলে অটল বিহারে শুনতে লাগে বিষম ভয়।।
ফুলে মধু প্রফুল্লতা
ফলে তার অমৃত সুধা
এমন ফুল দীন-দুনিয়ায় পয়দা
জানিলে দুর্গতি হয়।।
চিরদিনে সেই যে ফুল
দীন-দুনিয়ার মকবুল
যাতে পয়দা দীনের রসুল
মালেক সাঁই যার পৌরুষ গায়।।
জন্মপথে ফুলের ধ্বজা
ফুল ছাড়া নয় গুরু পূজা
সিরাজ সাঁই কয়, এ ভেদ বোঝা
লালন ভেঁড়ের কার্য নয়।।


জানতে হয় আদম ছফির আদ্য কথা


জানতে হয় আদম ছফির আদ্য কথা
না দেখে আজাজিল সেরূপ
কীরূপ আদম গঠলেন সেথা
আনিয়ে জেদ্দার মাটি
… গঠলেন বোরখা পরিপাটি
মিথ্যা নয় সে কথা খাঁটি
কোন চিজে তার গঠলেন আত্মা
সেই যে আদমের ধড়ে
অনন্ত কুঠরি গড়ে
মাঝখানে হাতনে কল জুড়ে
কীর্তিকর্মা বসলেন সেথা
আদমি হইলে আদম চেনে
ঠিক নামায় সে দেল-কোরানে
লালন কয় সিরাজ সাঁইর গুণে
আদম অধর ধরার সুতা


এলাহী আলমীন (গো) আল্লা

এলাহী আলমীন (গো) আল্লা বাদশা আলামপানা তুমি
ডুবাইয়ে ভাসাইতে পার, ভাসায়ে কিনার দেও কারো
রাখো মারো হাত তোমারম তাইতে তোমায় ডাকি আমি।।
নুহু নামে এক নবীরে, ভাসালে অকুল পাথারে
আবার তারে মেহের করে, আপনি লাগাও কিনারে
জাহের আছে ত্রিসংসারে আমায় দয়া কর স্বামী।।
নিজাম নামে বাটপার সেত, পাপেতে ডুবিয়া রইত
তার মনে সুমতি দিলে, কুমতি তার গেল চলে
আউলিয়া নাম খাতায় লিখিলে, জানা গেল এই রহমি।।
নবী না মানে যারা, মোয়াহেদ কাফের তারা
সেই মোয়াহেদ দায়মাল হবে, বেহিসাব দোজখে যাবে
আবার তারা খালাস পাবে, লালন কয় মোর কি হয় জানি।।



কুলের বৌ হয়ে মন আর কতদিন
থাকবি ঘরে।

ঘোমটা খুলে চল নারে যাই


ঘোমটা খুলে চল নারে যাই
সাধ-বাজারে।।
কুলের ভয়ে কাজ হারাবি, কুল কি নিবি
সঙ্গে করে।
পস্তাবি শ্মশানে যেদিন
ফেলবে তোরে।।
দিস নে আর আড়াই কড়ি, নাড়ার নাড়ি
হও যেই রে।
ও তুই থাকবি ভাল সর্বকাল
যাবে দূরে।।
কুল মান সব যেজন বাড়ায়, গুরু সদয়
হয় না তারে।
লালন বেড়ায়, কাতরে বেড়ায়
কুল ঢাকে রে।।


লণ্ঠনে রূপের বাতি জ্বলছে সদাই

দেখ দেখি মন দেখতে যার ঐ বাসনা হৃদয়
লণ্ঠনে রূপের বাতি জ্বলছে সদাই।।
বাতি যেদিন নিভে যাবে ভবের শহর আঁধার হবে
সুখ পাখি তোর পালাইবে ছেড়ে সুখালয়।
রতির গিরে ফসকা মারা শুধুই কথার ব্যবসা করা
তার কি হবে রূপ নিহারা মিছে গোল বাধায়।
সিরাজ সাঁই বলেরে লালন স্বরূপে তুই দে রে নয়ন
তবেই হবে রূপ দরশন পড়িসনে ধাঁধায়।।


এ বড় আজব কুদরতি


এ বড় আজব কুদরতি
আঠার মোকামের মাঝে
জ্বলছে একটি রূপের বাতি
কিবা রে কুদরতি খেলা
জলের মাঝে অগ্নি-জ্বালা
খবর জানতে হয় নিরালা
নীরে ক্ষীরে আছে জ্যোতি
ফণিমনি লাল জহরে
সে বাতি রেখেছে ঘিরে
তিন সময় তিন যোগ সেই ঘরে
যে জানে সে মহারতি
থাকতে বাতি উজালাময়
দেখতে যার বাসনা হৃদয়
লালন কয়, কখন কোন সময়
অন্ধকার হবে বসতি


সহজ মানুষ ভজে দেখনারে মন দিব্যজ্ঞানে

সহজ মানুষ ভজে দেখনারে মন দিব্যজ্ঞানে
পাবিরে অমূল্য নিধি বর্তমানে
ভজ মানুষের চরণ দুটি
নিত্য বস্তু হবে খাঁটি
মরিলে সব হবে মাটি
ত্বরায় এই ভেদ লও জেনে
শুনি ম’লে পাবো বেহেস্তখানা
তা শুনে তো মন মানে না
বাকির লোভে নগদ পাওনা
কে ছাড়ে এই ভুবনে
আচ্ছালাতুল মেরাজুল মোমেনীনা
জানতে হয় নামাজের বেনা
বিশ্বাসীদের দেখাশুনা
লালন কয় এই ভুবনে


আল্লাহ্ কে বোঝে তোমার অপার লীলা

আল্লাহ্ কে বোঝে তোমার অপার লীলা
কে বোঝে তোমার অপার লীলে।
তুমি আপনি আল্লাহ
ডাকো আল্লাহ বলে।
নিরাকারের তরে তুমি নুরী
ছিলে ডিম্ব অবতরী।
সাকারে সৃজন গড়লে ত্রিভুবন
আকারে চমৎকার ভাব দেখালে।
নিরাকার নিগম ধ্বনি
তাও তো সত্য সবাই জানি।।
তুমি আগমের ফুল নিগমে রসুল
আদমের ধড়ে জান হইলে।
আত্ম তত্ত্ব জানে যাঁরা
শাঁইর নিগূঢ় লীলা দেখছে তাঁরা।।
নীড় নিরঞ্জন অকৈথ্য সাধন ।।
লালন খুঁজে বেড়ায় বনজঙ্গলে।


দিবানিশি থেক সব রে মন বা-হুঁশিয়ারী

দিবানিশি থেক সব রে মন বা-হুঁশিয়ারী
রাছুল বলে ইয়ে দুনিয়া ।।
মিছে ঝাকমারী।
দিবানিশি থেক রে ও মন বা-হুঁশিয়ারী
দিবানিশি থেক রে থেক ও মন বা-হুঁশিয়ারী
পড়িও আউজবিল্লা
দূরে যাবে নানতুল্লা ।।
মুর্শিদরূপ করিলে হিল্লা ।।
শঙ্কা যায় তারই।।
দিবানিশি থেক রে সাধের মন বা-হুঁশিয়ারী
দিবানিশি থেক রে থেক ও মন সব বা-হুঁশিয়ারী
যাহের বাতেন ছপ ছফিনায়
পুছি দ্বার ভেদ দিলেম সিনায় ।।
অমনি মতন তোমার সবায়
বল সবারই।।
দিবানিশি থেক রে থেক সবে বা-হুঁশিয়ারী
অগত অভক্তজনা
তারে গুপ্ত ভেদ বইল না
বলিলে সে মানিবে না ।।
করবে অহংকারী।।
দিবানিশি থেক রে সবে মন সব বা-হুঁশিয়ারী


আমার হয় না রে সে মনের মত মন

আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।।
কিসে জানবো সেই রাগের কারণ
আমি জানবো কি সে রাগের কারণ
আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।।
পড়ে রিপু ইন্দ্রিয় ভোলে
মন বেড়ায় রে ডালে আলে ।।
দুই মনে এক মন হইলে ।।
এড়াই শমন ।।
হয় না রে সে মনের মত মন ।
আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।
রসিক ভক্ত যারা মনে মন মিশালো তারা ।।
শাসন করে তিনটি ধারা ।।
পেল রতন
তারা পেল রতন
হয় না রে সে মনের মত মন ।
আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।
কবে হবে নাগিনী বস সাধবো কবে অমৃত-রস ।।
দরবেশ সিরাজ সাঁই কয়, বিষে বিনাশ ।।
হলি লালন ।।
হয় না রে সে মনের মত মন ।
আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।
কিসে জানবো সেই রাগের কারণ
ও কিসে জানবো সেই রাগের কারণ
হয় না রে সে মনের মত মন ।
আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।


ক্ষম ক্ষম অপরাধ

বারে বার ডাকি তোমায়
ক্ষম ক্ষম অপরাধ……!
বড় সঙ্কটে পড়িয়া এবার
ওগো দয়াল
বারে বার ডাকি তোমায়
ক্ষম ক্ষম অপরাধ……!
দাসের পানে একবার চাও হে দয়াময়
ক্ষম অপরাধ।
তোমারি ক্ষমতায় আমি
যা ইচ্ছে তাই কর তুমি ।।
রাখ মার সে নাম নামি ।।
ওগো দয়াল
তোমারি এই জগৎময়
পাপী অধম তরাইতে সাঁই
পতিত পাবন নাম শুনতে পাই ।।
সত্য মিথ্যা জানবো হেথায় ।।
ওগো দয়াল তরাইতে আজ আমায়
কসুর পেয়ে মার যারে
আবার দয়া হয় গো তারে ।।
লালন বলে এ সংসারে
অগো দয়াল
আমি কি তোমার কেহই নই..


ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই

আমি ঐ চরণে
দাসের যোগ্য নই।
নিজগুনে পদারবিন্দু দেন যদি সাঁই দীনবন্ধু
তবে তরি ভবসিন্ধু নইলে না দেখি উপায়।
ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই।
আমি ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই।
আমি ভাব জানিনে প্রেম জানিনে দাসী হতে চাই চরণে।।
ভাব দিয়ে ভাব নিলে পরে ।।
সেই সে রাঙ্গা চরণ পায়।
ওরে সেই সে রাঙ্গা চরণ পায়।।
ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই।
আমি ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই।
অহল্যা পাষানী ছিলো
চরণ ধূলায় মানব হলো ।
লালন পথে পড়ে রইলো
ফকির লালন পথে পড়ে রইলো
যা করে সাঁই দয়াময়।
আমার যা করে সাঁই দয়াময়।


চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি

চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি
ভেদ-পরিচয় দেয় না আমায়
ঐ খেদে ঝরে আঁখি।।
আমার ঐ খেদে ঝরে আঁখি।
চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি…
পাখি বুলি বলে শুনতে পাই
রূপ কেমন তা দেখিনা ভাই
বিষম ঘোর দেখি।
আমি বিষম ঘোর দেখি।
কোন দিন জানি যাবে উড়ে ধুলো দিয়ে দুই চোখই।
আমার কোন দিন জানি যাবে উড়ে ধুলো দিয়ে দুই চোখই।
চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি…
পোষা পাখি চিনলাম না
এ লজ্জা তো যাবে না উপায় কি করি!
আমি উপায় কি করি!
চেনাল পেলে চিনে নিতাম যেতো মনের ধুকধুকি।।
চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি…
আছে নয় দরজা খাঁচাতে
যায় আসে পাখি কোন পথে ।।
চোখে দিয়ে রে ভেল্কি।
আমার দিয়ে রে ভেল্কি।
সিরাজ সাঁই কয় ।।
বয় লালন বয়
ফাঁদ পেতে রে সিঁদমুখী।।
চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি…

যখনই পারব এই লিঙ্কে নতুন গান যোগ করবো
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:০২
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×