ট্রাফিকের চাঁদাবাজি নেই...ট্রাফিক জ্যামও নেই। ইচ্ছে করছিল গাড়ি থেকে নেমে একটু হাটি। বাসা থেকে নিষেধ করছিল আজ অফিসে যাবার দরকার নেই। আমি তা উপেক্ষা করেই অফিসের পথে পা বাড়ালাম। মহাখালী নেমে দেখলাম সব দোকান পাট, খাবার হোটেল বন্ধ। এটা কেন করা হলো। দেশে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের দেখলাম কামান নিয়ে টহল দিতে, তার সাথে আছে র্যাব বাহিনী।
গতকাল আমাদের অফিসের গাড়ি তিন ঘন্টা আটকে ছিল টঙ্গী চেক পোস্ট। নিরাপত্তার জন্য তল্লাশি করেছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ঢাকার সাথে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে গেছে । একজন মহিলা তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে অসহায় হয়ে বসে থাকতে দেখেছি রাস্তায়। এটা হরতাল, ধর্মঘটের চেয়ে কম নয়। দূর পাল্লার বাস ও লঞ্চ বন্ধ থাকায় কি চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারন মানুষ আজকে যারা বাসা থেকে বের হননি তারা মোটেও টের পাবার কথা নয়। আর যেভাবে বিনা কারনে মানুষদের গণ-গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে তা মানবাধিকার লংঘন ও উদ্বেগ জনক।
আজ সকালের ঢাকার অন্যরকম চিত্র দেখে আমার কাছে স্বপ্নের ঢাকা শহর মনে হলো। যা আমাদের নগর পরিকল্পনাবিদরা শুধু কল্পনাই করে যায়।
কি না সম্ভাব এই দেশে? আমার কাছে এটাই বিস্ময়!
আজ সকালের ঢাকা দেখে মনে হলো- আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ইচ্ছা করলেই ঢাকা শহরের ছিনতাই, খুন, সন্ত্রাস, গুম, রাহাজানি, ট্রাফিক জ্যাম,মাদক সহ সব ধরনের অপতৎপরতা বন্ধ করতে পারে। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঢাকার রাস্তায় যে অসহনীয় যানজট বেঁধে থাকে প্রতিদিন তাও নির্মূল করা সময়ের ব্যাপার।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে নিরাপত্তা বেস্টনী তৈরী করেছে এটা আমাদের জন্য সুখকর একটা বিষয় হতো যদি সেটা জন নিরাপত্তার জন্য আজকের দিনটি ছাড়াও অব্যাহত থাকতো।
গতকালের একটা ঘটনা বলি।
অফিস থেকে বাসা ফিরছি। আমাদের অফিস বিকেল চারটেতেই ছুটি হয়ে গিয়েছিল রাস্তায় যান চলাচল কমে আসৈল বলে। যথারীতি কোন বাস পাচ্ছিলাম না। তাই লেগুনা খুঁজছিলাম, এবং পেয়েও গেলাম। কিন্তু বিপত্তি সাধলো সেই জায়গায়। লেগুনার হেলপার দ্বিগুন ভাড়া চেয়ে বসে। আমরা যাত্রীরা বললাম কেন?
হেলপার যা বলল_ "মামা, আইজ ওস্তাদ (ট্রাফিক সার্জেন্ট) ৫০০ টেহা নিছে, না দ্বেলে কেইস। আপনেদের কাছ থেইকা না নেলে এই টেকা দিব কেডা।"
অবশেযে ডাবল ভাড়া দিয়েই বাসা ফিরলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১১:০০