জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গাইবান্ধা
এক
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১২ স্বাধীনতা প্রাঙ্গন, গাইবান্ধা। চারিদিকে সবুজ আর লালের সমারোহ। লাল-সবুজের ব্যানার। সব একই রকমের। লেখার ধরণও এক রকম। স্টলে স্টলে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্ক্রীন, ডিজিটাল অন্যান্য ডিভাইস, ডিজিটাল সংগীত। স্টলে স্টলে উৎসুক জনতা। স্বাধীনতা প্রাঙ্গনের বাইরে ব্যানার দেখে থমকে যাচ্ছে জনতা। কী হতে চলেছে! এ এক অন্যরকম আয়োজন, এ এক মেলা- ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক অনন্য প্রদর্শনী।
দুই
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২, সময়ঃ সকাল ১০-৩০ টা।
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০১২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সম্মানীয় বিশেষ অতিথি জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় প্রকল্প পরিচালক, সাপোর্ট টু ডিজিটাল বাংলাদেশ (এটুআই) প্রোগ্রাম ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একামত্ম সচিব-১ গাইবান্ধাবাসীর প্রশংসা করলেন। বললেনঃ ‘‘গাইবান্ধাবাসীর রুচি ও মননশীলতায় আমি অভিভূত। একই রকমের স্টল, একই রকমের ব্যানার, ল্যাপটপ, স্ক্রীন, প্রজেক্টর, একই রকমের সাজসজ্জা। এই জনপদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর আধুনিক রুচিশীলতার বহিঃ প্রকাশ। অভিনন্দন গাইবান্ধাবাসীকে।
মাননীয় প্রধান অতিথির রস্ট্রামে গর্বিত উপস্থিতি। গাইবান্ধাবাসীর প্রতিনিধিতব করলেন জনাব মাহাবুব আরা বেগম গিনি, মাননীয় সংসদ সদস্য, ৩০-গাইবান্ধা-২। তিনিও অভিভূত। ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা আয়োজনের পর্দার অমত্মরাালের কারিগর তিনি। তিনি সফল। দারণভাবে সফল। তাঁর হাসি-খুশি উজ্জবল মুখায়ব ও সাবলীল স্বভাব সুলভ সুগঠিত উচ্চারণ গাইবান্ধাবাসীর অর্জনকে আরেক ধাপ উপরে নিয়ে গেল। তিনি বললেনঃ ‘‘জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ হবেই।’’ ডিজিটাল গাইবান্ধা গড়ার এই কারিগরদের আমরা কৃতজ্ঞা জানাই। তাঁদের সাহস, উদ্যম, প্রচেষ্টা ও আমত্মরিকতায় গাইবান্ধা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শেষ প্রামেত্ম।
বিশেষ অতিথি বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর বিভাগ, রংপুর জনাব জসীম উদ্দিন আহমেদ জানালেন, ‘‘রংপুর বিভাগের ৮ জেলার মধ্যেই গাইবান্ধা জেলার এই আয়োজন অভূতপূর্ব ও ঐতিহাসিক। সমগ্র বিভাগে গাইবান্ধা প্রথমসহান দখল করে নিল। অভিনন্দন আপনাদেরকে।’’
তিন
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করতে গিয়ে জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ শহীদুল ইসলাম (যুগ্ম-সচিব)। ডিজিটাল গাইবান্ধা গড়ার নায়ক তিনি। তাঁর আমত্মরিক, গঠনমূলক ও তথ্যসমৃদ্ধ উপসহাপনায় ডিজিটাল বাংলাদেশের ছবি ফুটে ওঠে সকলের সামনে, হৃদয়ের মনিকোঠায়; কোন দ্ব্যর্থবোধকতায় সহান সেখানে নেই। নেই কোন কৃত্রিমতার ছাপ। জনগণের সেবক জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলাম সেবাকে জনগণের দোরগড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যেই আয়োজন করেছেন '' ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০১২''।
মেলায় সস্ত্রীক উপসিহত ছিলেন রংপুর জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক জনাব বি এম এনামুল হক ও বগুড়া জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক জনাব সরোয়ার মাহমুদ। মেলার প্রতিটি স্টল তাঁরা পরিদর্শন করেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সেবা সম্পর্কে জেনেছেন এবং প্রতিটি মুহুর্তকে ফ্রেমবন্দী করেছেন। তাঁরা গাইবান্ধা জেলার এইরুপ আয়োজনকে নিজ নিজ জেলায় বাস্তবায়নের জন্য অভিজ্ঞতা লাভ করলেন। আমরা তাঁদের সাফল্য কামনা করি।
চার
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা চলছে। হাজার হাজার দর্শনার্থী। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ থেকে দল বেঁধে আসছে শিক্ষার্থীরা। পরনে তাদের পরিচ্ছন্ন ইউনিফর্ম। এসেছে প্রিয় গাইবান্ধাবাসী। সারাদিন প্রচন্ড ভীর। স্টলের প্রতিনিধিগণ ব্যস্ত তাদের ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সেবা প্রদর্শন নিয়ে। এই অভূতপূর্ব গণজোয়ারে আমরা অভিভূত, উচ্ছাসিত। আবেগের বাধ আর ধরে রাখা যায় না। মধ্যদুপুরেও খুবই ভীর। দুপুর ৩টা হতে বিকাল ৫টা পর্যমত্ম একটু যেন বিশ্রাম প্রয়োজন সকলের। মেলায় দর্শক সমাগম একটু কম। আয়োজক কমিটির একটু বিশ্রাম প্রয়োজন। কিন্তু কোথায় ? সেমিনার করতে হবে যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে সেমিনার, সেমিনার হচ্ছে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র নিয়ে। অধ্যাপক মাজহারুল মান্নান একটি সেমিনারে এসে ডিজিটাল কথামালার খই ফুটালেন। অভিনন্দন তাঁকে।
বিকাল ৫টা। আবার জমছে মেলা। উচ্ছ্বাস ও আবেগের মহাসম্মিলন। চলছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। সন্ধায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী, গাইবান্ধার পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক আয়োজন। কী জনসমুদ্র! আমাদের আবেগের বাধ আর ধরে রাখা যায় না। বাধ ভাঙ্গা মানুষের জোয়ার অপ্রতিরোধ্য।
পাঁচ
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২, সময়ঃ ৮-৩০ মিঃ।
সমাপনী অনুষ্ঠান।
শেষ করতে ইচ্ছে হচ্ছে না। জনগণের দাবী মেলা অমত্মতঃ আরো ১দিন পর্যমত্ম বাড়ানো হোক। কিন্তু না। শেষ করতেই হবে। আয়োজন সংশিস্নষ্ট সকলের সাথে সেই রকমই চুক্তি। সমাপনী বক্তব্য দিলেন, গাইবান্ধার প্রিয়মুখ মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মাহাবুব আরা বেগম গিনি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় আবরো ব্যক্ত করলেন। সফল মেলার জন্য অভিননদন জানালেন গাইবান্ধাবাসী ও আয়োজন সংশিস্নষ্ট সকলকে।পর্দা নামল ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার।
পর্দা নামল গাইবান্ধার একটি সফল আয়োজনের।
পরিশেষঃ ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় ছাত্র-ছাত্রীগণ ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে জেনেছে। দর্শনার্থীরা দেখেছে ডিজিটাল ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোট প্রদান পদ্ধতি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান পদ্ধতি, ভিডিও কনফরেন্সিং, টেলিনফারেন্সিং, স্মার্ট ট্রাফিক কণ্ট্রোল সিস্টেম, ইণ্টারনেট, ব্রাউজিং ইএমও প্রভৃতি। হাজার হাজার দর্শনার্থী/ছাত্র-ছাত্রী বিনামূল্যে ই-মেইল ও ফেসবুক একাউণ্ট খুলেছে। দেখেছে জেলা প্রশাসন, গাইবান্ধা এর ই-সেবা কার্যক্রম।দেখেছে ইউনিয়ন তথ্য ওসেবা কেন্দ্র -এর কার্যক্রম। দেখেছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন। দেখেছে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পদ্ধতিসমূহ।
আমরা জানি, দেখার মাধ্যমে শিক্ষার ভূমিকা অনেক। ডিজিটালের আলোয় আলোকিত হবেই আগামীর ভবিষ্যৎ ছাত্র-ছাত্রীরা। গড়ে উঠবে স্বপ্নের, সোনার ডিজিটাল বাংলাদেশ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



