বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রক্টর-ভিসিদের পদত্যাগ দাবী আজকাল মিডিয়ার একটা প্রধান শিরোনাম। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রক্টর তারও আগে জাবি ভিসি, অথবা BUET ভিসি সহ বাংলাদেশের অনেক দায়িত্ববান ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব জ্ঞানহীন, নির্লজ্জ কাজ কারবার দেখলে হতভম্ব হয়ে যেতে হয়। আমার এক সহকর্মী বন্ধুকে কথাচ্ছলে একদিন বললাম,” ভাই এদের কি লজ্জা শরম কিছু নাই নাকি?” উত্তরে আমার বন্ধুটি একটা গল্প শোনালো। গল্পটার সার সংক্ষেপ এরকমঃ
এক গাঁয়ে, চরিত্র দূষণে দুষ্ট এক রমনী বাস করত। রমনীর ক্রিয়া কর্মে বিরক্ত গ্রাম বাসী তাকে একদিন পঞ্চায়েতে বিচারের মুখোমুখি করল। বিচার কার্যের এক পর্যায়ে পঞ্চায়েত প্রধান খুব রাগতঃ স্বরে রমনীকে ধমক দিয়ে প্রশ্ন করলেন, “ তুই যে এসব করে বেড়াস, তোর লজ্জা করে না রে?” গ্রামবাসী এতক্ষণ রমনীটির নামে যেসব সত্য মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছিল, লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে তা সে মজলিশের এক কোনায়, এক হাত ঘোমটা টেনে বসে বসে মুখ বুজে সহ্য করছিল। কিন্তু বৃদ্ধ মাতবরের শেষ কথাটিতে সে প্রতিবাদ না করে থাকতে পারল না। রমনীটি তাই ঘোমটার আড়াল থেকে নিজেকে উম্মোচন করে বলল, “এইডা কি কইলেন মাতবর সাব। লজ্জা পাইলে কি আমার চলে? আমি তো লজ্জা বেচেই খাই!”
সত্যিই তাই লজ্জা বিশেষণটা এখন অতি দূর্লভ। পুরোটা দেশ এখন নির্লজ্জতার অভয়ারন্য। ভিসি, ডিসি, আমলা, কামলা, শিক্ষক, ভিক্ষুক, মুক্তার, ডাক্তার, রাবিশ, খোবিশ, দুদক, সাধক, ফুটবলার, ক্রিকেটার, ব্লগার, হেল্পার, নির্বাচন কমিশনার, টুপি ওয়ালা, ধুতি ওয়ালা, সংবাদ কর্মী, সংস্কৃতি কর্মী, দেহজীবী, বুদ্ধিজীবী, চোর, ডাকাত, পুলিশ,ইতর, ভদ্র, কাউয়া, বাদুর, শিল্পপতি, ভগ্নিপতি, বিচারপতি, রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধান মন্ত্রী- বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ এখন দেদারসে লজ্জা বেচেই খায়।
ডিসেম্বর ০৩, ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১৭