প্রথম কিস্তি পাবেন এখানে।।
স্যাম আলাডাইস (ব্লাকবার্ন রোভার্স,১৩ ডিসেম্বর ২০১০ পর্জন্ত)
স্যামুয়েল আলাডাইস ১৯৫৪ সালে ইংল্যান্ডে জন্ম গ্রহন করেন।।স্যাম আলাডাইস তার জন্ম স্থান ডাডলী তে বড় হন।।সেখানে তিনি প্রাথমিক অ মাধ্যমীক শিক্ষা শেষ করে বোল্টন ওয়ান্ডারার্স দলে রক্ষনভাগের খেলোয়াড় হিসাবে যোগ দেন ১৯৭৩ সালে।।৭৭-৭৮ মওসুমে বোল্টন দ্বিতীয় বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে উন্নীতো হয় তখন তিনি তাদের হয়ে অসাধারন পারফর্মেন্স করেন।।১৯৮০ সালে তিনি সান্ডারল্যান্ডের হয়ে খেলেন।।এরপর তিনি কিছু ছোটো দলের হয়ে খেলে তার খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টানেন।।
১৯৮৯ এর ফেব্রুয়ারী তে স্যাম ওয়েস্ট ব্রমউইচ আলবিয়নের ততকালীন ম্যানেজার ব্রায়ন ট্যাবলটের সহকারী ম্যানেজার কাম খেলোয়াড় হিসাবে যোগ দেন।।তাদের হয়ে তিনি মাত্র একটি ম্যাচে পরিবর্তিতো খেলোয়াড় হিসাবে মাঠে নামেন।।৯১ এ ওয়েস্টব্রম রেলিগেটেড হয়ে তৃতীয় বিভাগে নেমে গেলে তিনি স্কটিস দল লিমারিকে যোগ দেন।।সেখানে এক বছর থেকে লিমারিককে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ন করে তিনি ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন প্রিস্টন নর্থ ইন্ডের সহকারী ম্যানেজার হিসাবে।।১৯৯৫ এ ব্লাকপুল ১৯৯৭ এ নটস কাউন্টির দায়িত্ব পালন করে তিনি ১৯৯৯ এ যোগ দেন বোল্টন ওয়ান্ডারার্সে।।
১৯৯৯-২০০০ মওসুমে বোল্টনকে নিয়ে তিনি প্লে-অফে জায়গা করে নেন,কিন্তু ইপসুইচ টাউনের কাছে হেরে যান।।২০০০-০১ মওসুনে বোল্টন প্লে-অফের ফাইনালে ওঠে এবং প্রিস্টন নর্থ ইন্ড কে হারিয়ে ৩ বছর পর প্রিমিয়ারলীগে খেলার যোগ্যতা লাভ করে।। ০১-০২ ও ০২-০৩ মওসুমে তারা লীগ টেবিলের শেষ অর্ধেকে থাকার পর ০৩-০৪ মওসুমে তারা ৮ম স্থান অধীকার করে।।২০০৬ এ বোল্টন ষষ্ঠ স্থন পায় এবং ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো উয়েফা কাপে খেলার যোগ্যতা লাভ করে।।২০০৭ তে লীগে ৭ম স্থান দখল করে আবারো উয়েফা কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বোল্টন।। এ সময় স্যাম আলাডাইস বোল্টন ছেড়ে ঐতিহ্যবাহী দল নিউক্যাসেলে যোগ দেন।।২০০৮ এর জানুয়ারী তে নিউক্যাসেলের ক্রমাগত বাজে ফলাফলের দায় ভার নিয়ে তিনি তাদের ম্যানেজার পদ থেকে অব্যাহতী নেন।।
২০০৯ এর ডিসেম্বর থেকে তিনি ব্লাকবার্ন রোভার্সের দায়িত্ব নেন।।তাদের বর্তমান ভারতীয় মালিকের সাথে মতোবিরোধ দেখা দিলে তাকে ১৩ই ডিসেম্বর ২০১০ তে বরখাস্ত করা হয়।। বর্তমানে লীগ টেবিলে তলানীতে থাকা ওয়েস্টহ্যাম তাদের কোচ আভ্রহাম গ্রান্টকে অব্যাহতী দিয়ে স্যাম আলাডাইস কে তার স্থলে নিযুক্ত করতে পারে বলে ফুটবল মিডিয়াগুলোতে গুজব শোনা যাচ্ছে।।
স্যাম আলাডাইসের সমস্যাক্রান্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দলে টানার এক দারুন যোগ্যতা ছিলো।। অন্য দলে ভালো খেলতে পারছেনা,কিন্তু সম্ভাবনা আছে তেমন খেলোয়াড়দের তিনি সুযোগ দিতেন।। আল হাজী দিউফ,ইউরী জার্কাইভ, ফার্নান্দো হাইরো তার উতকৃষ্ট প্রমান।। ২০১০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ বোল্টন তাকে ডক্টর অফ সায়েন্স ডিগ্রী প্রদান করে।। ২০০৬ সালে তার নামে একটি ঘুষ কেকেঙ্কারীর অভিযোগ ওঠে,যাতে বলা হয় তিনি তার ছেলে ক্রেগ এর হাতে অন্য কয়েকজন খেলোয়াড় কে দলে ভিড়ানোর সময় তাদের এজেন্টের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন।।যদিও স্যাম আলাডাইস সব সময় এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।।
স্টিভ কিন (ব্লাকবার্ন রোভার্স, অন্তঃরবর্তীকালিন কোচ)
স্টিভ কিন একজন স্কটিস ফুটবল কোচ এবং একজন অবসর প্রাপ্ত ফুটবল খেলোয়াড়।।স্টিভ কিন বর্তমানে ব্লাকবার্ন রোভের্সের খন্ডকালীন কোচের দায়িত্বে আছেন।।গত ১৩ ডিসেম্বর রোভার্সের ভারতীয় মালিক বিগ স্যাম কে বরখাস্ত করে কিন কে ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজারের দায়িত্ব প্রদান করেন।।সাবেক আর্জেন্টাইন কোচ ও কিংব্দন্তী খেলোয়াড় ডিয়াগো মারাডোনাকে রোভার্সের নতুন মালিক কোচ হিসাবে পেতে চায়।।কোচ হিসাবে না পেলেও তাকে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োগ দিতে আগ্রহী তারা।।
স্টিভ ব্রুস (সান্ডারল্যান্ড)
পুরো নাম স্টিভেন রজার ব্রুস, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৬০ এ ইংল্যান্ডে জন্ম গ্রহন করেন।।খুব ছোটো বেলা থেকে ফুটবল খেলে আসা ব্রুস একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় ছিলেন,কিন্তু কোনো ভালো ফুটবল দল তাকে প্রথমে কোনো প্রকার সুযোগই দেয়নি।।খেলা পাগল স্টিভ ব্রুস যখন কোন দলে নিজের জায়গা খুজে পেলেননা,তিনি খেলাধুলা ছেড়ে অন্য কাজ করার কথা চিন্তা করেন।।ঠিক এই সময়ে তখনকার ইংলিশ ফুটবলের তৃতীয় বিভাগের (বর্তমান এন পাওয়ার চ্যাম্পিয়নশীপ লীগ-২) দল জিলিঙ্গহ্যাম তাকে কয়েক দিনের জন্য ট্রায়েলের জন্য ডাক দেয়।।তিনি নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে জিলিংহ্যাম এর প্রথম একাদশে জায়গা করে নেন।।
১৯৭৯ থেকে ৮৪ পর্জন্ত জিলিংহ্যামে খেলে তিনি যোগ দেন নরউইচ সিটি দলে।।নরউইচ দলের হয়ে তার অভিষেক ম্যাচের প্রথম মিনিটেই তিনি একটি আত্মঘাতী গোল করেন।।সেখানে তিনি তিনটি সফল মওসুম পার করে নজর কাড়েন তখন শিরোপা খরায় ধুকতে থাকা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের।।
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ১৯৮৭তে যোগ দিয়ে তিনি তার খেলোয়াড়ী জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন।।১৯৯০-৯১ মওসুমে তিনি মোট ১৯ টি গোল করেন।।তারসাথে মার্ক হিউজের পার্টনারশীপ ৯০ এর দশকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সবথেকে সফল পার্টনারশীপ।।৯২-৯৩ মওসুমে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড যখন লীগ শিরোপা জেতে (১৯৬৭ এর পর প্রথম) তখন তিনি বেশিরভাগ ম্যাচেই অধিনায়কত্ত করেন।।স্টিভ ব্রুস প্রথম ইংলিশ ফুটবলার যিনি বিংশ শতকে ক্যাপ্টেন হিসাবে ডাবল শিরোপা (প্রিমিয়ার লীগ ও ইংলিশ এফ.এ. কাপ) জয় করেন (১৯৯৩-৯৪ মওসুমে)।।খেলোয়াড় থাকাকালীন সময়েই তিনি অনেক ক্লাবের কাছ থেকে ম্যানেজার হবার আমন্ত্রন পান,যদিও স্যার এলেক্স ফার্গুসন তাকে নিজের দলে খেলোয়াড় হিসাবেই রেখে দেন।।১৯৯৬ সালে তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে ফ্রি ট্রান্সফার ফি তে বার্মিংহামে যোগ দেন দুই বছরের জন্য,২ বছরে তার বেতন ছিলো তখনকার সময়ের ২ মিলিয়ন পাউন্ড।।পরবর্তীতে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে কিছুদিন খেলেন ও ১৯৯৯ এ অবসর নেন।।ক্যারিয়ারে তার ৯২৬ ম্যাচের বিপক্ষে মোট গোল সংক্ষা ১১৩ টি।।
স্টিভ ব্রুস ৮০ ও ৯০ এর দশকে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হলেও তিনি কখনো ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি।।তার মায়েরজন্ম সুত্রে তিনি নরদার্ন আয়ারল্যান্ডের নাগরিক ছিলেন,তাই তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার ডাক পান,যদিও তিনি তাতে সাড়া দেননি।।
ম্যানেজার হিসাবে তিনি যাত্রা শুরু করেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে ১৯৯৮ তে।।সেই মওসুমে ইউনাইটেড লীগে ৮ম স্থান অর্জন করে।।এর পরে উইগন এথলেটিক,কুইন্স পার্ক রেনজের্স, ক্রিস্টাল প্যালেসে ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেন।।
২০০১ এ যোগ দেন বার্মিংহ্যামে।।সেখানে ২০০৭ পর্জন্ত থেকে তিনি আবার আসেন উইগন এথলেটিকে।।৩ জুন ২০০৯ থেকে তিনি বর্তমান দল সান্ডারল্যান্ডের দায়িত্বে আছেন।।
খেলোয়াড় হিসাবে তিনি নরউইচ সিটির হয়ে একবার লীগ-২ শিরোপা,একবার লীগ কাপ জেতেন।। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে তিনি ৩টি প্রিমিয়ার লীগ,৩ টি এফ.এ. কাপ, একটি লীগ কাপ, চ্যারিটি শিল্ড ৩ বার,উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ ১ বার ও উয়েফা সুপারকাপ ১ বার জয় করেন।।
“প্রিমিয়ারলীগ ডমেস্টিক টিম অফ দ্যা ডেকেড” ১৯৯০-১৯৯৯ এর একজন সদস্য ছিলেন তিনি।।
তিনি আত্মজিবনী মুলোক বই “হেডিং ফর ভিক্টোরী” লেখেন ।। Sweeper, Defender , Striker নামের তিনটি বই ও লিখেন স্টিভ ব্রুস।।
প্রথম কিস্তি পাবেন এখানে।।
দুইজন করে লিখতে গিয়ে লিখাটা অনেক বড় হয়ে গেলো।। এর পর থেকে একজন করে লিখবো।।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




