বাসে আমরা সবাই কোনো না কোনো কাজে যাতায়াত করে থাকি।।একবারো কি ভেবে দেখেছেন,একই বাসে কতো রকমের মানুষ ভ্রমণ করে? সবাই কি একই রকম? আপনাদের কাছে আমার একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে আজ লিখতে বসলাম।।

২৫শে জানুয়ারী রাত ১১টার বাসে আমি ঢাকা যাবার জন্য ঢাকা-রাজশাহী রুটের অন্যতম একটি জনপ্রিয় বাসে ঊঠি।।বাসটি চাঁপাই থেকে ছেড়ে আসছিলো।।প্রায় সব আসনি পুর্ণ হয়ে আছে।।বাসে উঠে ভাবলাম ভালোই হলো,তাড়াতাড়িই বাস ছাড়বে মনে হচ্ছে।।কিন্তু এর পর থেকে যা হতে থাকলো তা সত্যিই অন্ততঃ আমার কাছে অপ্রত্যাশীতো ছিলো।।আমার আসন নাম্বার ছিলো ডি-১ ।। ডি ৩-৪ এ বসেছিলো চাঁপাই থেকে আসা দুই লোক,সম্পর্কে চাচা ভাতিজা।।ভাতিজা কাজ করতে দুবাই যাবে তাই চাচা তাকে বিদায় দিতে ঢাকা যাচ্ছে।।বরাবরের মতই রাজশাহী টার্মিনালে বাস চেক করা হলো,তাতে চাচা ধরা খাইলেন


!!!তিনি তখন গাঁজা খেয়ে নেশায় বুদ হয়ে ছিলেন,আর তার কাছ থেকে কিছু পরিমান গাঁজা উদ্ধার করা হয়


।।পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেলো,পরে ৩০ মিনিট ধরে গোটা বাস আবার তল্লাশী চালানো হলো।।অতঃপর আমার যা মনে হয় চাচা পুলিশকে কিছু উৎকোচ দিয়ে ছাড়া পেয়ে আবার বাসে উঠলেন।।আমাদের বাস যাত্রা শুরু করলো।।ভেবেছিলাম এখানেই সব শেষ !!!
রাত্রি প্রায় ৩ টার দিকে আমরা যমুনা সেতুর কাছাকাছি পৌঁছালাম।।লক্ষ করলাম র্যাবের একটা গাড়ী আমাদের বাসটাকে থামালো


।।তারা বাসের স্টার্ট বন্ধ করিয়ে সকল যাত্রীকে তাদের লাগেজ নিয়ে নামতে বললো।।কথামতো আমরা কাজ করলাম।। র্যাব বাস ও লাগেজ গুলো ভালোমতো চেক করে এক যাত্রীর কাছ থেকে কয়েক বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে।।র্যাব তাকে তো ধরে নিয়ে গেলোই,সাথে আমাদের আরেক দফা চেকাপ করা হয়।।রাত্রি ৩ টার দিকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বনাম ব্লাকপুলের খেলা হচ্ছিলো,তখনো আমার দল ২-০ তে পিছিয়ে


।।র্যাব যখন চেকাপ করছিলো,তখন আমি মোবাইলে লাইভ আপডেট দেখি যে স্কোর লাইন ২-২ !!! আমার মুখে নিজের অজান্তেই সুক্ষ্ম হাসি এসে যায়,দেখি এক র্যাব সদস্য আমার দিকে তাকিয়ে আছে


!!! আমি দ্রুতই স্বাভাবীক হয়ে যাই,যদি কিছু সন্দেহ করে এই ভয়ে ।। হটাত র্যাবের এক সদস্য বলে এই ডি-২ এর যাত্রী কে? আমি ছিলাম ডি-১ এর যাত্রী,ডি-২ আমার পাশের ভদ্র লোক।।তাকে একটা সিগারেটের প্যাকেট দেখিয়ে বলা হয় এইটা ডি-২ এর সিটের নিচ থেকে পাওয়া গেছে।।সিগারেটের প্যাকেট ভর্তি গাঁজা !!!অতোঃপর তারা তাকে ভালোমতো জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিলো,কারন লোকটা আসলেই ভালো।।আমার মনে হয় কেউ একজন বাস থেকে নামার সময় প্যাকেটটা তার সিটের নিচে ফেলে নেমে গেছে

।।যাই হোক,আর একটু হলেই প্যাকেটটা আমার সিটের নিচে এসে পড়তো।।এইকথা ভেবে তো আমার ভয়ই লাগছিলো !!!৩০-৩৫ মিনিট পরে আমাদের বাস আবার ছাড়লো।।
যমুনা সেতু পার হবার পরে আবার আমাদের বাসটি চেক করা হয়।।এইবার আমাদের বাস থেকে নামতে হয়নি,কিন্তু আমাদের শীতের উষ্ণ পোশাক খুলতে হয়েছিলো।।

মনে রাখার মতো একটা অভিজ্ঞতা ।।আপনারা বাস যাত্রার সময় আশে পাশের যাত্রীর কাছে থেকে সাবধান থাকবেন,না হলে আমার পাশের যাত্রীর মতো অবস্থা হতে পারে!!! সবাই ভালো থাকবেন ।। ।। ।।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:২১