
ধরুন, আব্দুর রহমান সাহেব তার বোনের ছেলের জন্য তার চেনা পরিচিত এক লোকের বোনের সাথে বিয়ের ব্যপারে কথাবার্তা বলে এবং বরপক্ষ ও কনেপক্ষকে বিয়ের জন্য একে অন্যকে দেখানোর ব্যবস্থা করে। দুই পরিবার একে অপরের সাথে জানাশোনার পরে তাদের বিয়ে হয়। ছেলের নাম মুন্না। মেয়ের নাম লিমা।
বিয়ের পর মুন্না ও লিমার মধ্যে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়ে মন কষাকষি হয়। ৩/৪ বছর একত্রে সংসার করার পর লিমা মুন্নাকে বলে সে তার শ্বাশুড়ির সাথে একত্রে থাকবে না। স্বামীকে আলাদা বাসা নিতে বলে। মুন্না তাতে রাজি হয় না। তখন লিমা রাগ করে তার বাপের বাড়ি চলে আসে এবং জানায় যে, আলাদা বাসা না নিলে সে আর ফিরে যাবে না। এভাবে ৬ বছর পার হয়। মুন্না ইতোমধ্যে লিমার কাছে ২ বার উকিল নোটিশ পাঠিয়ে লিমাকে সংসার করার জন্য তার কাছে যেতে বলে। কিন্তু লিমা সেখানে যায় না। এর মধ্যেই মুন্না ২য় বিয়ে করে।
মুন্নার সাথে লিমার বিয়ের দেনমোহর ছিল ৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া মেয়ে পক্ষ ছেলে পক্ষকে ৪ লক্ষ টাকা উপহারস্বরুপ দিয়েছিল। লিমা পরবর্তীতে সেই উপহারের টাকা মুন্নার কাছে দাবী করে। মুন্না তখন সালিশ ডাকে এবং বলে সে ৪ লক্ষ টাকা দিবে কিন্তু লিমার তাকে তালাক দিতে হবে। লিমা টাকা নিতে চায় কিন্তু তালাকের ব্যাপারে রাজি হয় না। তাই মুন্না বলে সংসার করতে চাইলে সে তাকে টাকা দিবে না। তার বাড়িতে এসে সংসার করলে সে তার খোরাকি দিবে। বাপের বাড়িতে গেলে দিবে না। সালিশে কোন ফয়সালা হয় না। লিমা আবার তার বাপের বাড়িতে থাকা শুরু করে।
এভাবেই বিয়ের ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়। লিমা আব্দুর রহমান সাহেবের কাছে আসে এবং মুন্নার কাছ থেকে তার ৪ লক্ষ টাকা তুলে দিতে বলে। আব্দুর রহমান সাহেব মুন্নাকে টাকা দিতে বললে সে বলে তার কাছে টাকা নেই। খরচ হয়ে গেছে।
পরবর্তীতে লিমা আব্দুর রহমান সাহেবের অফিসে এসে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বরাবর আবেদন করে যে, সে আব্দুর রহমান সাহেব কাছে ৫ লক্ষ টাকা পায়। সে যে তাদের বিয়ে করিয়েছে, এটা তার একটা ব্যবসা। কনে পক্ষ বর পক্ষকে উপহারস্বরূপ যে টাকা দেয় সেটা নাকি সেই পায়। প্রতিষ্ঠান প্রধান ব্যাপারটি প্রতিষ্ঠানের বাইরের ব্যাপার হওয়ায়, নিজেদের মধ্যেই মিমাংসার পরামর্শ দেয়।
তারপর লিমা তার ভাইকে নিয়ে আবার আব্দুর রহমান সাহেবের অফিসে আসে এবং তারা যে মুন্নাকে ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছে এই মর্মে ৩০০ টাকার একটি স্ট্যাম্পে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করতে বলে। এবং হুমকি দেয় যে, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর না দিলে তার নামে তারা মামলা করবে। আব্দুর রহমান সাহেব তাদের হুমকিতে ভয় পেয়ে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা তাকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে নিষেধ করে। উল্লেখ্য, লিমার ভাই সমাজের নেতৃস্থানীয় লোক। এখন আব্দুর রহমান সাহেব খুব ঝুঁকির মধ্যে আছে। কারণ কিছুদিন পরেই তার এলপিআর (অবসরকালীন ছুটি) শুরু হবে। তার বিরুদ্ধে সত্য, মিথ্যা যে কোন মামলা হলে অবসরকালীন টাকা পেতে তাকে মামলা নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখন আব্দুর রহমান সাহেবের করণীয় কি?
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



