কাল আমাদেরই এক ভাই হারিয়ে গেল আমাদের মাঝ থেকে। কত স্বপ্নই না ছিল তার! দানব বাস এক জীবনের সব স্বপ্ন মুছে দিল। একটা পরিবারের সব আশা-আকাংখা মুছে দিল নিমেষেই। পৃথিবী থেকে ঝরে গেল একটি তাজা প্রান! কিভাবে নিজেকে স্বান্তনা দেয়া যায়!! এমন মৃত্যু যে কোন ভাবেই কাম্য নয়! এমনি শত প্রান হারিয়ে যাচ্ছে,প্রতিক্ষণ,প্রতিদিন সারা দেশের কোথাও না কোথাও! এটাই কি আমাদের নিয়তি?? এর থেকে কি পরিত্রানের কোন উপায় নেই?
ছোটবেলায় বইতে পড়েছিলাম,রাস্তা পার হতে হয় জেব্রা ক্রসিং হয়ে, লাল-হলুদ-সবুজ বাতির সঙ্কেত দেখে। ঢাকার রাস্তায় কোথায় সেই জেব্রা ক্রসিং আর কোথায় সেই লাল-হলুদ-সবুজ বাতির সিগন্যাল! ট্রাফিক পুলিশের হাত আর বাঁশি ই ট্রাফিক সিস্টেম!! সরকার আসে সরকার যায়,সিস্টেমের কোন পরিবর্তন নেই! কিছু মিথ্যা স্বপ্নের ফুলঝুরি ছাড়া।
সিগন্যাল বাতিগুলোর কোন কার্যকারিতা নেই,তবুও জ্বলছে নিভছে । লাল-হলুদ-সবুজ!সারাদিন সারারাত! কি পরিমাণ বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে তার হিসেব সরকারের কোন কর্তৃপক্ষের কি আছে?
জেব্রা ক্রসিং এর জায়গা দখল করে নিল ফুট ওভার ব্রীজ! কি আজব অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি!
একটা জরিপে দেখলাম ঢাকা শহরের পথচারীদের ৬৫ শতাংশ ট্রিপ ই হাঁটা দূরত্বের! অথচ আজ সেই হাঁটা দূরত্ব অতিক্রম করার জন্য যানবাহনের শরনাপন্ন হতে হচ্ছে। না হয়ে উপায়ও যে নেই! অধিকাংশ হাঁটা পথ মানে ফুটপাথ গিলে ফেলেছে হকার আর ডেভেলপার কোম্পানীগুলো। ব্যস্ত জায়গার ফুটপাথ তো স্থায়ী হকার মার্কেট!তারপর গাড়ী চলার রাস্তার অর্ধেক দখল করে রাখে পার্কিং করা গাড়ীগুলো! হাঁটথেই যদি চাই,রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটতে হবে। বেশ কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল, ১ নভেম্বর থেকে হকার উচ্ছেদ অভিযান চলবে। চাপের মুখে তা থেকে সরে আসল সরকার।
হকারদের পূনর্বাসন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আপাত স্বল্প মেয়াদী একটা পদক্ষেপ সরকার নিতে পারত, যে দিন যে অঞ্চলে মার্কেট বন্ধ থাকবে সেদিন সেই অঞ্চলের ফুটপাথ হকারদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যেতে পারে। সরকার কেন বিকল্প ব্যবস্থা গুলো ভেবে দেখে না??
কবে পাবো আমাদের জীবনের নিরাপত্তা? আরো কত সহস্র প্রাণ এভাবে ঝরে গেলে আমাদের হর্তাকর্তাদের ঘুম ভাংবে?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




