somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চুমু এবং হাতের তালু (আমি জানি আমি লোকটা সুবিধের নই)

০৩ রা জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :









ছোট বেলায় এই এইট নাইনের যুগে এক মামাত বোনকে আমার ভালো লেগে গেল।
ভীষন প্রেমে পড়ে গেলাম ওর চোখের। মনে মনে ওকে নিয়ে নাটক সিনামার নায়ক নায়ীকাদের মতন কতযে টুকরো টুকরো প্রেম করেছি তা ভেবে পাইনা। ছোট একটা নাম ছিল ওর ‘বকুল’। ওর সাথে আমার খানিকটা প্রেম মতো হয়ে গেলে। ভীষন নিরব আর কাটাকাটা কথা বলতো।
তখন মামা বাড়ীতে যাওয়া হত বছরে দুই ঈদে, ঢাকা আসার দিন আহ্‌ কি? বিরহ। সব কিছু কেমন ধুষর মনে হত, ভিষন কান্না পেত তখন, কিন্তু কাঁদা হতোনা ছেলেদের কি কাঁদতে আছে?

তখন মামা দের কারো বিয়ে হলে

আমাদের দল বেধে- উঠনে, রাস্তায় আল্পনা আকতে হতো, কতো রঙের ছড়া ছড়ি হতো উঠনে, রাস্তায়। আমরা রাত জেগে জেগে আল্পনা আঁকতাম, তখন ও আর আমি কতো যে টুকরো টুকরো কথা বলেছি তার কোন হিসেব পাইনা। ও লাল রঙ খুব পছন্দ করত। লাল রঙের ওর একটা জামাছিল, জামাটা পরলে ওকে পরির মতন লাগত, ও কে বলিনি কখন সেকথা। একদিন ওই জামাটা পরে ও আমার সাথে মামাদের ছাদে এসে ছিল কথা বলতে, ব্লেডের মতোন সচ্ছ রোদ উঠেছিল সেদিন, কিশরী বাঁশের পাতারা মৃদু কাঁপছিল বাতাসে। আমিও কাঁপছিলাম ভেতরে ভেতরে, কতো কথা হয়ে ছিলো সেদিন সব মনেও নেই আমার, কেবোল মনে আছে দূরে কোন এক ঘরে তখন কিশোর কুমারের একটা গান বাজছে, ‘আজ এই দিন টাকে স্মৃতির পাতায় ধোরে রাখো, আমায় পরবে মনে কাছে দূরে যেখানে থাকো’।

মেয়েটাকে মনে হয় বিয়েও করতাম আমি। তো সেই বকুলের একদিন হুট করে বিয়ে হয়ে গেলো, বর ব্যাবসা করে, খুব খানদানি পরিবার। বিয়ের দিন তো আমি ছিলাম না কেবল সুনেছি বকুল নাকি বিয়ের দিন একটুও কাঁদেনি।

একেবারে হাসতে হাসতে আমার আঁকা আল্পনার উপর দিয়ে ওর শ্বশুর বাড়ী চলে গেছে। কত সহজে? বিরাট একটা প্রেমের মিমাংসা হয়ে গেল, আমি ভেবে ছিলাম কষ্টে কষ্টে মরেই যাব, কিন্তু কিছুই হলোনা, একটু কাঁদা ভিষন দরকার ছিল, কাঁদতে খুব চেষ্টা ও করেছিলাম, অনেক পুতুল খেলার স্মৃতি মনে করে, তাও হলোনা। কেবল কান্না কান্না একটা ব্যাপার মনের মধ্যে আটকে রইল। না কাঁদতে পারাটা আমার তখন কার অপারগতা ছিল, ছোট বেলায় কতো সহজে কাঁদতে পারতাম। বাকের ভাইয়ের ফাঁসির দিন হাউ মাউ করে কেঁদে ছিলাম। আলোর মিছিল ছবি দেখে কেঁদে কেটে আকুল হয়েছি, সে দিন কেন পারলাম না? কাঁদতে। চোখের জ্বল বড়ো হারামী জিনিষ, ঠীক সময়ে আসেনা। না হয় কেন আমি কাঁদতে পারলাম না? কেন বকুল কাঁদলো না? বকুল নাহয় না কাঁদল, আমি কেন কাঁদতে পারলাম না? আসলে ইট কাঁঠের এই নগরে এসে আমি নিজেই যে কবে স্বার্থপর হয়ে গেছি? তা টেরও পাইনি। এই নগর নাগরিক এরা সবাই কি? আমার মতন স্বার্থপর। যদি স্বার্থপর না হয়, তবে কেন কষ্ট বোঝেনা ঢাকা নগর? আমি চিন্তার খেই হারাই। নগর নাগরিকেরই বা কি দোষ? আমার সেই চির চেনা গ্রাম্য মেয়ে বকুল বা কেন কষ্ট বুঝলনা? যাকে আমি রাত জেগে জেগে ভালোবেসেছি, যার বিরহে আমার রমনা ভালো লাগতনা।

পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান গুলোকে মনে হত কেমন ফিকে, ধুষর, মরা শ্যাওলার মতন। সেই বকুল চলে যাবার আগে একবার জানালো ও না!

বকুলের সাথে ওর বিয়ের পর একবার দেখা হয়ে ছিল, ও জানতে চাইল কি বন্ধু ক্যামন আছ? আমার ভিষন কষ্ট হয়ে ছিল সেদিন, আমি নাকি ঐ বকুলের কেবল বন্ধু ছিলাম আর কিছুনা। আর একদিন জানতে চেয়ে ছিলাম তোর কি মনে পরে? সেই সব দিনগুলর কথা।
আমরা উঠনে গোল্লাছুট খেলতাম, ছোঁয়া ছুঁই খেলতাম। অনু থাকত, মানু থাকত আরো কতো নাম? ভুলে গেছি। উঠনে আমরা গোল হয়ে বসে ভূতের গল্প বলতাম, ভয়ে একজন আর একজনকে জড়া জড়ি করে বসে থাকতাম, বিসাল আকাশ ভরা থাকত তারারা, পূর্নীমার সেই প্রাচীন চাঁদ, ধবল বধুর সাজে আকাশে উঠত। আমরা তারা গুনতাম, তুই কেবল জানতে চাইতি কোনটা ‘সুক’ তারা? উঠনের কোনে অনুদের একটা বড়াই গাছ ছিল, আমরা এক এক রাতে গাছে ঢিল মেরে বড়াই পারতাম, এক রাতে আমার মারা ঢিল গিয়ে পড়ল তোর কপালে, তুই ভিষন রাগ করে ছিলি। আর একবার তুই কোথা থেকে এক অদ্ভুত খেলা শিখে এসে আমাকেও বললি খেলতে, জানিস? আমার একটুও ভালো লাগতনা সে খেলা। কেবল তুই থাকতি বলে যেতাম, তোর সেই কথা চালার খেলায়। কি অদ্ভুত সে খেলা সবাই পাসা পাসি বসবে, একজন আর একজনের কানে একই শব্দ বলবে, একজন আর একজনকে না শুনিয়ে, শেষ জনার কাছে গিয়ে শোনা হবে শব্দের কি অবস্থা দাড়াল? কি বিকট পরিবর্তনই না হত এক একটা শব্দের, একবার তোর পাশে গিয়ে বসল তোর চাচাত ভাই, তুই যখন ওর কানে কানে কথা বলছিলি তখন আমার কষ্টে কষ্টে মরে যেতে ইচ্ছা করে ছিল।

শুনে ও কিছুই বলেনি, আমার ভিষন জানতে ইচ্ছা হচ্ছিল ও কি ভাবে? সেইসব দিন গুল নিয়ে? পরে জানতে চেয়েছিলাম তোর কি মনে পরে সেই প্রথম দিনের কথা? আমি তোকে আইলাভ পর্যন্ত বললাম, তুই আচ্ছা আচ্ছা করে বাকি টুকু বলতে দিলিনা। আমি উওর জানতে চাওয়াতে তুই কেবল মাথা নেড়ে ছিলি। চুমু খেতে গিয়ে ছিলাম হাত দিয়ে গাল ঢেকে ফেলায় চুমু গিয়ে পরলো তোর হাতের পিঠে, এর পর তুই বেদম হেসে ছিলি, তুই আমকে তার দিয়ে Hurt sine বানিয়ে দিয়ে ছিলি। ও উওরে কেবল বলে ছিল সবই মনে পড়ে তবে ওসব আমি কেবল নিছক খেলা ভেবে ছিলাম। আমি আর কিছু বলিনি কেবল চেয়ে ছিলাম অর দিকে অপলক নিরবে।

বকুল সুবিরের একটা গান খুব শুনত ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’ পরে জেনেছি ও নাকি সেটা মানত ও, আমার মাঝে মাঝে ভিষন অবাক লাগত-তবে ও ওর স্বামির সাথে করে ছিল কি? প্রেম জদি না থাকে। সেটাও কি স্রেফ খেলা ছিল, আমি তার উওর খুজেছি, খুজে পাইনি।

বকুল এখন আর নেই। রেখে গেছে ওর অস্তিত্ব ওর সন্তান। বকুল মরে গেল ‘ডেলিভারি এক্সিডেন্টে’। কত সহজে স্বার্থপর বকুল বিদায় নিল। ও মারা যাবার আগে ওর মেয়ের নাম রেখে গেছে জুঁই। এখন বকুলের কৈশরের একটা ছবি আছে আমার কাছে। আমার খুব অবাক লাগে এই কি আমার বকুল যার কপালে আমার মারা ঢিল গিয়ে পরে ছিল বলে এক টানা সাতদিন কথা বলেনি। পরে মান ভাংতে গিয়ে বলে ছিলাম আমাদের যদি মেয়ে হয় তবে নাম রাখব জুঁই, আর যদি ছেলে হয় তবে নাম রাখব......। বকুল আমার মুখে হাত চাপা দিয়ে বলল ‘জারুল’। এর পরত ও হেসেই খুন।

বকুল তুই জানিস তোকে আমি আজো ভালোবাসি তবে সেই সময় টুকু যতটুকু সময় তুই আমাকে ভালবাসতি যখন তোকে আমি যখন তখন ছুঁতে পারতাম, অর্থাৎ তোর

নাইনের জীবন টাকে আমি তোকে পাগলের মতন ভালবাসি। এরপর আমি আর তোকে কোথাও খুঁজেপাইনা। না উপরে না নীচে, কোথাও না।
এখন নিজেকে আমার বড়ো একা মনে হয় মনে হয় গভির রাতের অমাবস্যার কালো অন্ধকারে আমি তলিয়ে যাচ্ছি, যেখানে আলো জ্বালানোর কেউ নেই, দুঃস্বপ্নের অর্ধঘুমে প্রহর গুনি, কখন সকাল হবে? কান পেতে থাকি দেয়ালে যদিকোন ভোরের পাখি আমাকে জাগায়। কিন্তু কেউ জাগাতে আসেনা, কেউ না। বকুল আমি এখন সম্পূর্ন একা ভিষন একা। তুই কি মৃত্যুর আগে বুঝতে পেরেছিলি তুই আমার প্রতি অবিচার করেছিলি? তাই হয়ত তোর মেয়ের নাম রেখে গেছিস ‘জুঁই’।

এখনো পুর্নীমার সেই প্রাচীন চাঁদ, ধবল বধুর সাজে আকাশে ওঠে, বিশাল সেই একই আকাশে তারাদের হাট বসে, সুক তারা এক কোনে মিট মিট করে, নদীতে ভাসে বুন লতা, শ্রাবনে নুপুরের শব্দে ঝড়ে বৃষ্টি, বাতাসে ছড়ায় বুন ফুলের গন্ধ, তখন তোকে কাছে পেতে মন কেমন করে। সুনেছি মানুষ মরে গেলে তার আত্মা প্রিয়জনদের কাছেই থাকে, তুই কি সুনঅতে পাচ্ছিস বকুল?

তোর মেয়ে জুঁই এখন মা মা বলে অস্ফুট শব্দ করে। তোর স্বমি আর বিয়ে টিয়ে করেনি, মনে হয় তোর স্মৃতি বুকে নিয়ে বাকি জীবন টা কাটেয়ে দিবে। কিন্তু আমি পারবনারে, মা বাবা বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমার একটা শেষ অনুরোধ রাখবি ভাই, একবার তোর সেই কৈশরের রুপ ধরে আয়না ঝক ঝকে সবুজ কৃষ্টালের মায়াবী আলোর মধ্যে তুই আসবি, কৈশরের তোর প্রিয় জামাটা পরে আসিস, তুই কেবল একবার আয় আমি কাউকে কিছু বলবনা। সুধু তোকে একটি বার দেখব। ছোট বেলার সেই ইট বালুর উঠন রাস্তা এখানে ওখানে নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তার দুইপাশের টবে লাগানো গাছগুল মরে গেছে প্রায়, তোর মতন ওগুলকে কেউ আর প্রতিদিন সকালে পানি দেয়না। এখন আর কেউ গোল্লা ছুট খেলেনা, অনু দের বড়াই গাছটার অর্ধেক মরে গেছে, বাকি অর্ধেক ও সুনেছি কেটে ফেলবে, তোর ছবিটা আজকাল কেমন ঘোলা হয়ে গেছে। ছবিতে তোর মাথায় যে হ্যাট টা ছিল সেটা নষ্ট হয়ে ফুলের তোরার মতন হয়ে গেছে, আমার মনের মধ্যে তোর যে ছবিটা আছে সেটাও আজকাল কেমন অস্পষ্ট ঘোলাটে লাগে, তুই আয় এসে সব দেখে যা।

তুই আসছিস না কেন, তার মানে তুই তোর স্বমির কাছে আছিস না? থাক কিন্তু আমি কেবল তোর যেটুকু সময় আমাকে ভালবাসত সেটুকু সময়ের ভাগ চাই। হ্যা বকুল হ্যা...............।

এখন মাঝে মাঝে আমি তোর গলার আওয়াজ সুনি, মনে হয় তুই সেই আগেকার মতন পংকজের গানটা গাইছিস, সেই যে ‘সুখে থাকো প্রিয়তমা পার যদি কর খমা’,এখন ও মাঝে মাঝে আমি গান টা সুনি আর ভাবি, আমি তোকে ক্ষমা করেছি ঠিকি কিন্তু, এ কোন সুখে আমাকে রেখেগেলি তুই? এ কেমন সুখ, আমি তার কিছু বুঝিনা। কেবল বুঝি তুই আমাকে কখন ভাল বাসিস নি কেবল খেলা করেছিলি- ছোঁয়া ছুঁই খেলার মতন, একবার ছুয়ে দিলেই সব শেষ।

তোর অপলক চোখের চাহুনি আমাকে ভীষন ভাবাত, তোর অপলোক চেয়ে থাকা চোখের চাহুনিতে কি যে এক মাদকতা ছিল আমি তা তোকে বোঝাতে পারবনা। আমি রাতজেগে জেগে ভেবেছি তুই আমার বৌ হয়েছিস, আমাদের ছেলে জারুল তোর পেছন পেছন পেছন ঘুরছে সে মেলায় যাবে বলে, আর জুঁই আমার বুকের উপর নিশ্চুপ ঘুমাচ্ছে, তুই ছেলের সাথে কপট অভিমান করছিস, এর পর তুই আমি জুঁই আর জারুল মেলায় যাব,

জারুল খুব বায়না ধরবে সে সার্কাস দেখবে তোর খুব আপত্তি থাকবে সার্কাস দেখায়, তবুও আমরা সার্কাস দেখতে ঢুকব জারুল বাঘ দেখে খুব ভয় পাবে জুঁই খুব হসবে বানরের খেলা দেখে ও হাসবে আর হাতে তালি দিবে, তুই ও খুব হাসবি ভাড়দের ভাড়ামো দেখে, এর পর যখন মেয়েরা নাচতে নাচতে মঞ্চে আসবে তুই তোর হাত দিয়ে আমার চোখ ঢেকে রাখবি, আমি তার পরও তোর হাতের ফাঁক দিয়ে নাচ দেখতে চেষ্টা করব তুই রাগ করে সার্কাস থেকে বের হয়ে আসবি, আমরাও আসব তোর পিছু পিছু, তার পর আমরা মিষ্টি খাব তুই খুব দূরে দূরে থাকতে চাইবি, আমি তোর খুব কাছে কাছেই থাকব, এসময় তুই বলবি দেখত অনুপ এই পুতুলটা কত দাম চায়? আমি তোর জন্য একটা লাল শাড়ী কিনে ফেল্ব, তুই ভিষন ভকা দিবি, জুঁই বলবে মা আমি আলতা কিনব তুই ছুটবি মেয়ের জন্য আলতা কিনতে, জারুল নাগর দোলায় উঠতে চাইবে তুইও গিয়ে উঠবি সাথে, জুঁই আমার কোলে থাকবে সে তার আলতার বোতল খুলে আমার সাদা জামায় ভরিয়ে দিবে লাল রঙ্গে, ফিরে এসে তুই খুব রাগ করবি, আমি বোকা বোকা চেহারা নিয়ে তাকিয়ে থাকব তোর দিকে, এক সময় তুই আমার বোকা বোকা চেহারা দেখে হেসে ফেলবি, আমিও হাসব বাচ্চারাও হাসবে। এরপর আমরা একগাদা খেলনা নিয়ে বাড়ী ফেরব, জারুল একটা কাগজের টুপি কিনে আনবে মেলাথেকে তাতে লেখা থাকবে ‘সুর্যমুনির ম্যালা ১৯৯৮ ইং’। আমার এখন ভাবতে খুব কষ্ট হয় যখন তোকে নিয়ে আমি স্বপ্নের বুনট বুনেছি রাত জেগে জেগে, তখন তুই নিটোল স্বপ্নহীন ঘুমিয়ে ছিলি।

তোর মনে আছে একবার এক বিয়ের অনুষ্ঠানথেকে ফেরার সময় তোর সেই চাচাত ভাই তোর পাশে বসে ছিল, ও তোর পিঠের উপর দিয়ে হাত দিয়ে ছিল বলে আমি ভিষন রাগ করে ছিলাম, তুই পরে আমকে বলেছিলি এই আপনার ভালবাসা, এই আপনার বিস্বাস, তুই জানিস এর পর আমি তোকে খুব বিস্বাস করেছিলাম কিন্তু কি হলো সেই বিস্বস করে,পরে জেনেছি তুই নাকি তোর সেই চাচাত ভাই কে ও ভালো বেসে ছিলি, সেটা জানার পর এখন আমি বিস্বাস করতে সিখে গেছি, সত্যিই পৃথীবিতে প্রেম বলে কিছু নেই ‘Only have live togather, bed pratner’.- এর পর বাচ্চা জন্ম দাও বড়ো কর, বুড়ো হও অথবা তোর মতন মরে যাও।

এসব কথা লিখতে লিখতে অনুপ লক্ষ্য করে একফোটা জল ছিটকে ওর লেখার খাতার উপর পড়ে। অনুপ চারিদিকে তাকায় কোথা থেকে এল এই জল, তবে কি অনুপ কাঁদছে, অনুপের মনের ভেতর থেকে কেবল একটা কথাই বার বার গুমরে ওঠে বকুল তুই ফিরে আয়, কেবল একবার.........।।

পরিশিষ্টঃ
অনুপের জন্য যে কান্নাটা একসময় অপারগতা ছিল তা এখন খুব সহজ হয়ে যাচ্ছে, সে কাঁদতে থাকে অঝরে, টেবিল ল্যাম্পের আধো আলোতে সে দেখতে পায় তার চোখের জলে ঝাপ্সা হয়ে যাচ্ছে সাদা পাতার উপরের লেখা গুল।

বকুলরা কোন দিন ফিরে আসেনা বড় নির্বাক আর স্বার্থপর এরা। তাদের স্মৃতি একদিন ঝাপ্সা হতে হতেও থেকে যায় অনুপদের মনে, এরা থেকে যায় অস্তিত্ব ছুঁয়ে,

অনুপকেও একদিন বিয়ে করতে হয় জীবনের নিয়মে, বিয়ের পর অনুপের বৌ ওকে একটা ফুট ফুটে ছেলে উপহার দেয় যার নাম রাখা হয় "জারুল"।

মুখবন্ধঃ গল্প টি একটি প্রমের গল্প, না পাওয়ার কিছু বেদনা আছে গল্পে, গল্পটি লিখতে গিয়ে বার বার আমার একবন্ধু এসে আমার পাসে দ্বাড়িয়ে ছিলো, চেতনার কোন এক অন্ধকার প্রকষ্ঠে যার মুখ দিন রাত নক্ষত্রের মতন জলজল করছিলো।

ছেলেটা প্রেমিকা কে না পেয়ে আত্মহত্যা করেছিলো, কাঠাল গাছে গলায় দড়ি দিয়ে, ও আর আমি প্রায় দিনই এক সাথে এক আকাশের নিচে জীবন নিয়ে ভাবতাম, জীবন বয়ে গেছে ওর ভুল সিদ্ধান্ত ওকে সরিয়ে দিয়েছে জীবনের গতি পথ থেকে, আমি থেকে গেছি সে পথে একা একা। না পাওয়া থেকে আত্য হনন কখোন বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারেনা, আজকে যে আপনার কাছে না পাওয়া কাল হয়তো আপনার দরোজায় সেই কড়া নাড়বে, আর জদি সে ফিরে নাও আসে মনে রাখবনে আপনার চাওয়া কোন না কোন ভাবে পুরন হবেই, ধর্মে আছে একটা দরজা বন্ধ হলে হাজার টা দরজা খুলে যায়। জারুল রা জন্মাবেই কেবল আপনাকে বেচে থাকতে হবে,

বকুলরা নির্বাক আর সার্থপর হয়ে বিলিন হয়ে যায়, অনুপরা মনে রাখলেও বকুল দের সুখ হয়না, আমি হতে দেখিনি। ভালোবাসয় না পাওয়া থেকে বা জীবন যুদ্বে না পওয়া থেকে যারা আত্য হননের পথে পা বাড়ায় তাদের কেবলছি, গলায় বিষ ঢালা, অথবা গলায় দড়ি পড়ার আগে, কলকের দিনটা নিয়ে ভেবেছেন কি? আপনি বেচে থাকলে হয়তো আপনার হাতেই লেখা হতে পাড়ে নতুন সকালের কাব্য।

উৎসর্গঃ মিনার মাহমুদ কে, প্রিয় মানুষ, সম্ভাবনা ময় এক জীবন ছেড়ে, জিনি নিজেকে বলিয়ে দিয়েছেন অন্ধকারে।

আমার রিসেন্ট আর একটি লেখাঃ
যৌন দাসত্ব (ডলারের দর কমলে, ওদের দর বদলায়। চোখের জ্বল কিম্বা পানি, সেতো নোনতাই থেকে যায়।)
ফেইস বুকে আমাকে আমার পেইজ দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যানঃ
View this link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৫৯
৫১টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×