বারমুডা ট্রাইএংগেল, শয়তানী সমুদ্র ও ফ্লাইং সোসার্স এমন রহস্যময় বিষয়, যা আপনি বিভিন্নভাবে শুনে এবং পড়ে আসছেন। রহস্যময় ঘটনাবলী, ভয়ানক বিজ্ঞানী আর অবিশ্বাস্য সত্য ও বাস্তব কাহিনী সম্বলিত ঐতিহাসিক সাক্ষীসমুহকে এমনভাবে গড়বড় করে দেয়া হয়েছে যে, পাঠক পাঠান্তে কোন সঠিক ফলাফলে পৌছাতে সক্ষম হচ্ছেনা। বরং তার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটি এমন একটি অনানুভুবনীয় আকৃতি ধারণ করে, যাতে থাকে কিছু তদন্ত, কিছু ভয়, জনমন আকৃষ্ট করার মত কিছু নতুন নতুন তথ্য আর বানোয়াট কাহিনী।
কিন্তু বাস্তবে তা আসলে কি? এবং একজন মুসলমান হিসেবে এ বিষয়গুলিকে কোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত??। দুনিয়ার সামনে এ মুহূর্তে যা কিছু এ সম্পর্কে বলা হচ্ছে, এর সবই কি বানোয়াট নাকি বাস্তব??!! যদি বাস্তবই হয়ে থাকে, তাহলে সমুদ্রের ঐ পানির ভিতরে এমন কি আছে যা আজ পর্যন্ত হাজারো মানুষকে গিলে ফেলেছে, অজস্র সামুদ্রিক জাহাজ তাতে গায়েব হয়েছে, কারো কাছে এর কোন জ্ঞান নেই??!! তাহলে কি ইবলিসের সাথে ঐ এলাকার কোন সম্পর্ক আছে??!! নাকি কানা দাজ্জাল ঐ এলাকায় বিদ্যমান??!!
বড় বড় বিশালাকৃতির জাহাজসমুহ নিরব নিস্তব্ধ সমুদ্র এলাকায় কোন প্রকার ক্ষতি বা দুর্ঘটনা ছাড়াই আকস্মিক অদৃশ্য হয়ে যাওয়া। কখনো যাত্রীদের বেচেঁ যাওয়া এবং শুধু জাহাজকে গায়েব করে দেয়া। আর কখনো জাহাজ নিরাপদে বেচেঁ যাওয়া এবং যাত্রীদের হারিয়ে যাওয়া। এগুলি এমনসব ঘটনা ও রহস্যময় বিষয়, যার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আজ পর্যন্ত মনকে তুষ্ট করতে পারেনি। এদের গায়েব হওয়া এত দ্রুত প্রকৃতির হয় যে, বিমানের পাইলট বা জাহাজের ক্যাপ্টেনদের পর্যন্ত জরুরী সংবাদ বা সংকেত প্রেরণেরও সুযোগ হয়না। এত্থেকেও আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- গায়েব হয়ে যাওয়া বিমান, জাহাজ বা যাত্রীদেরও পরবর্তীতে কোন অস্তিত্ব বা খোজ খবর পাওয়া যায়নি। যদিও কতিপয় গবেষকের পক্ষ থেকে এর উত্তর এভাবে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে, ওখানকার সমুদ্রের গভীরে এমনসব তুফান আর মারাত্মক দ্রুত বাতাসের সৃষ্টি হয়, যারফলে জাহাজগুলি ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে যায় এবং পানির বিশালাকৃতির ঢেউ এগুলিকে বহুদুর পর্যন্ত নিয়ে যায়। কিন্তু এ ব্যাখ্যা মানুষের জ্ঞান এজন্য মেনে নিতে অস্বীকার করে যে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এ যুগে যেখানে বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের সুগভীর এলাকায় পৌছে মৎস এবং পানির অন্যান্য প্রাণীদের সার্বিক মতিগতি নিয়ে সর্বদাই দৃষ্টি রাখছে। তারা কি আজও বারমুডার ঐ ট্রাইএংগেলে গায়েব হয়ে যাওয়া বড় বড় জাহাজগুলির কোন হদিস বের করতে পারেনি??!! এটাও স্মরণ রাখার বিষয় যে, অদ্যাবধি ওখানে অদৃশ্য হওয়া সকল বিমান, সামুদ্রিক জাহাজ আর পাইলট-ক্যাপ্টেন-যাত্রীরা ছিল যুগের অত্যাধুনিক আর সুদক্ষ সব মানুষ। পাশাপাশি অদৃশ্য হবার সময় ওখানকার আবহাওয়াবস্থাও ছিল খুবই স্বাভাবিক। সুতরাং ঋতু খারাপ হওয়ারও কোন ব্যাখ্যা এখানে করা ঠিক না। এসব বিমান আর জাহাজগুলির সাথে হেডকোয়ার্টারের যোগাযোগও হঠাৎ এমনভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল যে মনে হচ্ছিল কে যেন রেডিও সিগনাল জাম করে দিয়েছে।
অধিকাংশ গবেষকই এ ব্যাপারে একমত যে, শয়তানী সমুদ্র এবং বারমুডার ট্রাইএংগেলে এমনসব রহস্যময় এবং ভয়ানক বস্তু রয়েছে যা, আমাদের স্বাভাবিক বিষয়াবলী থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অস্বাভাবিক প্রকৃতির। বারমুডার ট্রাইএংগেল এবং শয়তানী সমুদ্র আশেপাশের মানুষের জন্য এমন ভীতিকর এলাকা হিসেবে পরিচিত, যা মানুষের জন্য জ্ঞানের চাহিদাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কতিপয় মুসলিম গবেষকের ধারনা, শয়তানী সমুদ্র ও বারমুডার ট্রাইএংগেলের ভিতরে দাজ্জাল গোপন আস্তানা করেছে, যেখান থেকে সে দুনিয়ার সার্বিক পরিস্থিতি কন্ট্রোল করছে। এ ব্যাপারেও বিস্তারিত পোস্ট করব ইনশাআল্লাহ।