somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজনেস আইডিয়াঃ 'ডিসকাউন্ট' বিক্রি

০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা হেভ্ভি বিজনেস আইডিয়া পাইছি।

বিজনেসটা হচ্ছে 'ডিসকাউন্ট' বিক্রি করা।

ভাবছেন ডিসকাউন্ট আবার কেমনে বিক্রি করে? আসেন বুঝাইয়া দেই।

প্রথমেই একটা ই-কমার্স সাইট খুলবো।

তারপর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য সেই সাইটে আপলোড করে বড়ো বড়ো ডিকসকাউন্ট দিয়ে বিক্রি করবো।

যেমন দেড় লক্ষ টাকার বাইক ১ লক্ষ টাকায়, ৫০ হাজার টাকার মোবাইল ৩০ হাজার টাকায়, ১০ হাজার টাকার টিভি ৭ হাজার টাকায়... এরকম।

ধরি, আপনি একটা বাইক কিনবেন। বাইকের দাম দেড় লক্ষ টাকা।

আমি আমার সাইটে এই বাইকের জন্য অফারটা দিলাম এভাবে - দেড় লক্ষ টাকার বাইক আমার সাইট থেকে কিনলে আপনি পাবেন ৫০ হাজার টাকার ক্যাশব্যাক!!

তবে কিছু শর্ত আছে। শর্তগুলো হলো -

এক - যারা কিনবেন তাদেরকে অর্ডারের সময় ফুল টাকা ( দেড় লক্ষ ) জমা দিতে হবে।

দুই - ডেলিভারি পাবেন ৪৫ দিন পর

তিন- ডিসকাউন্টের টাকাটা আপনার একাউন্টে যোগ হয়ে যাবে, তবে সেটা ক্যাশ ফর্মে না। গিফট ভাউচারের মতো করে ফেরত পাবেন - যেটা দিয়ে আবার এই সাইট থেকেই অন্য কোনো পণ্য কিনতে হবে।

চার - এই 'ভাউচার' ব্যবহার করে কোনো পণ্য কিনতে হলে আপনি সেই পণ্যের দামের সর্বোচ্চ ৬০% ব্যবহার করতে পারবেন বাকি ৪০% নগদ টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ বাইক কিনে যে ৫০ হাজার ক্যাশব্যাক পাচ্ছেন - পরবর্তীতে আপনি যদি কোনো পণ্য কিনতে চান যার দাম, ধরি ৫০ হাজার টাকা, তাহলে সেই ভাউচার থেকে আপনি সর্বোচ্চ পে করতে পারবেন ৩০ হাজার টাকা, বাকি ২০ হাজার আপনাকে নগদে পে করতে হবে।

এরকম একটা অফার পেলে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়বে আমার সাইটের উপর - কোনো সন্দেহ নাই।

এখন ব্যবসায়ী হিসেবে আমার লাভ -লোকসানের হিসাবটা একটু করি?

যে কোনো ব্যবসাতেই কোনো অবস্থাতেই দেড় লক্ষ টাকার পণ্য এক লক্ষ টাকাতে বিক্রি করে লাভ করাতো সম্ভবই না - সমান সমানে টিকে থাকাও সম্ভব না।

এটা পুরাটাই "বিশাল লসের" ব্যবসা।

তাহলে এই ব্যবসাটা আমি কেন করবো??

করবো, কারণ এই ব্যবসার মাঝে কয়েকটা ইন্টারেস্টিং "মজা" আছে।

আমি মূলত দেড় লক্ষ টাকার বাইক এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করার কথা বলে আপনার কাছে ৪৫ দিনের জন্য দেড় লক্ষ টাকা ধার নিচ্ছি।

এরপর ৪৫ দিন পরে আপনাকে বাইক এবং ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছি।

অর্থাৎ আপনার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়ে ২ লক্ষ টাকা ফেরত দিচ্ছি।

কিন্তু কোত্থেকে দিচ্ছি?

নতুন করে ধার নিয়ে। কিন্তু নতুন একজনের কাছ থেকে তো আমি ধার পাবো দেড় লক্ষ টাক। আপনাকে দুই লক্ষ টাকা কিভাবে দিবো? তার মানে, আপনাকে ফেরত দিতে হলে আমাকে ধার নিতে হবে দুইজনের কাছ থেকে।

অর্থাৎ আমি একজন টাকা ফেরত দিবো নতুন দুজনের থেকে ধার নিয়ে।

আপনার অর্ডারের ৪৫ দিনের মধ্যে যদি আমি নতুন করে ২ জনের কাছ থেকে দুইটা বাইকের অর্ডার পাই ( ৩ লক্ষ টাকা ) তাহলে আপনার ২ লক্ষ টাকা দেবার পরে আমার কাছে আরো এক লক্ষ থেকে যাচ্ছে। এই এক লক্ষ টাকা আমি কিছুটা খেয়ে ফেলবো - আর বেশিরভাগই কোম্পানির বিজ্ঞাপনের কাজে ব্যয় করবো।

এরপর সে দুজনের অর্ডার ডেলিভারি দিতে হলে পরের ৪৫ দিনের মধ্যে আমার লাগবে লাগবে নতুন ৪ জনের অর্ডার।

সেই চারজনের জন্য লাগবে নতুন ৮ জন।

অর্থাৎ অর্ডারের একটা স্টিডি গ্রোথ লাগবে।

যেহেতু ৪৫ দিনের জন্য বিরাট অংকের টাকা সবসময় আমার হাতে পরে থাকবে, আমি প্রচুর টাকা এডভার্টাইজিং /ব্র্যান্ডিং এর পিছনে খরচ করতে পারবো।

এর ফলে আমার এই গ্রোথ চলতেই থাকবে।

যতদিন গ্রোথ থাকবে ততদিন আমি সবাইকে টাইমলি ডেলিভারি দিয়ে যাবো - আমার রেপুটেশন বিল্ড হবে - আরো নতুন নতুন লোক আমার সাইটে হুমড়ি খেয়ে পরে অর্ডার দিতে থাকবে - আমার গ্রোথ হতেই থাকবে, হিউজ "ক্যাশ ইনফ্লো" চলতেই থাকবে।

তা.....র ......প ......র

কো.....নো ...... এক সময় -

সেটা এখন হোক, এক বছর পরে হোক- কিংবা দশ বছর পরে হোক - এই গ্রোথ বন্ধ হতে বাধ্য।

তো, গ্রোথ বন্ধ হয়ে গেলে কী করবো ??

ব্যবসার আসল ফান্ডাটা এখানেই।

যেদিনই আমার এই গ্রোথটা বন্ধ হয়ে যাবে, সেদিনই আমি আর ডেলিভারি দিতে পারবো না -

ইচ্ছে করেই দিবো না-

দেওয়া সম্ভব না।

আমি নিজের পকেট থেকে পাবলিককে টাকা দিতে - ব্যবসা করতে আসিনি।

কাজেই তখন আমি করবো কী জানেন ?

৪৫ দিনের জন্য পাবলিকের যে টাকাটা সেই মুহূর্তে আমার কাছে রাখা থাকবে, সেই টাকা নিয়ে ভেগে যাবো - সিম্পলি ভেগে যাবো - কানাডা, আমেরিকা কিংবা মালয়েশিয়া।

এছাড়া এই ব্যবসা থেকে বের হবার আর কোনো সেইফ এক্সিট নাই - আর কোনো বুদ্ধি নাই - অল্টারনেট রাস্তা নাই।

ওহ, বাই দি ওয়ে, যদি ভেগে যাবার আগে ৩/৪ বছর ব্যবসাটা ঠিকমতো করতে পারি, পালানোর সময় আমি হাজার না হলেও কয়েকশ কোটি টাকা নিয়ে ভেগে যেতে পারবো কিন্তু।

বিশ্বাস না হলে একটু অংকটা করে দেখতে পারেন।

বিভিন্ন উপত্যকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অফারের পণ্য কিনতে অভ্যস্ত যারা তাদেরকে বলছি - আইডিয়াটা চেনা চেনা লাগে?

--Collected
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×