আমি এক সময় মানুষ ও মানবতার পক্ষে কবিতা লিখতাম তা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ছাপা হত (আমার পেন নেইম ছিল রুদ্র ইসলাম ) আমি তখন পরিচিত মহলে সংগ্রামী কবি হিসেবে বেশ সুনাম !! অর্জন করেছিলাম,
অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেশ কয়েক বার জেলও খাটতে হয়েছে। কিন্ত দেখলাম এই কবিতা লিখে আর এইভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে তেমন কিছু করা যাচ্ছে না , অবশেষে যোগ দিলাম আমাদের দেশের সুপরিচিত লোকাল একটা মানবাধিকার সংগঠনের সাথে । প্রায় ২ বছর কাজ করলাম এখানে , নিজের কর্ম-দক্ষতা, সাহসীকতা, সততা ও কঠোর পরিশ্রমের জন্য আমি এই সংগঠনের একজন সাধারন কর্মী থেকে ধাপে ধাপে হয়ে গেলাম এই সংগঠনটির চীফ কো-অর্ডিনেটর । কিন্ত হায়রে কপাল একদিন দেখলাম এই সংগঠনটির প্রধান নিজেই মানবাধিকার লংঘন করেন , তীব্র প্রতিবাদ করলাম কিন্ত উনি আমাকে খোঁড়া যুক্তি দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করলেন উনি যা করেছেন তাতে কোন দোষ নেই ।
মানতে পারলাম না ওনার যুক্তি , চলে এলাম সংগঠনটি থেকে ।
অবশ্য সাথে করে নিয়ে এলাম একজন মানবাধিকার সংগঠক হিসেবে কাজ করার কিছু ভাল যোগ্যতা , শুধু মাত্র এই যোগ্যতাটুকু পুঁজি করে শুরু হল আমার নতুন করে পথ চলা । তখন আমি একা , মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে গভীর রাতে নত-জানু হলাম, প্রার্থনা করলাম '' হে আমার পালনকর্তা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ , তোমার এই অধম-বান্দাকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন কর ,আমি গাড়ী-বাড়ী ব্যাংক ব্যালেন্স দুনিয়ার সম্পদ চাই না তুমি আমাকে নিযার্তিত অধিকার বঞ্চিত অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করার ক্ষমতা দাও তুমি আমাকে একমাত্র তোমার মুখাপেক্ষী রাখো, তুমি আমাকে দুনিয়ার অন্য কোন অপশক্তির মুখাপেক্ষী করে দিও না আর আমার সকল ভাল কাজে সহযোগীতার জন্য দক্ষ কর্মী-বাহিনী তৈরী করে দাও'' । এই রকম প্রার্থনা আর ১ বছরের প্রচেষ্টায় মহান আল্লাহ্ ২০০৭ সালে ১১ই জুলাই আমাকে একটি মানবাধিকার সংগঠন প্রতিষ্ঠা করার তৌফিক দান করেন । আলহামদুলিল্লাহ্ ।
এর পাশাপাশি পেলাম ১০-১২ জনের কর্মী -বাহিনী , শুরু হলো যাত্রা ।
বাঁধার সম্মুখিন হলাম , প্রথম বাঁধা অর্থবল দ্বিতীয় বাধাঁ ক্ষমতাশীন দলের কিছু অসৎ নেতাদের প্রতিরোধ । চিন্তায় পরে গেলাম , সব কর্মীদের কে নিয়ে মিটিং করলাম তারা অনেকেই অর্থিক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিলো আবার কেউ কেটে পরলো । আমার পৈত্রিক-সুত্রে পাওয়া শেষ সম্বল বিক্রি করে দিলাম, নিজের সন্তানদের জন্য কিছুই রাখলাম না ।
এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা গুলোর সাথে যোগাযোগ করলাম এবং তাদের সমর্থক - সহযোগী হিসেবে কাজ করতে লাগলাম , একসময় তাদের সদস্য পদ লাভ করলাম আর অর্জন করলাম মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন কলা কৌশল ।
এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন এই মানবাধিকার কর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বহু বার আমার জীবন হুমকির সম্মুখিন হয়েছে । এখনো থাকি ঝুঁকির মধ্যে , তার পাশাপাশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের কালো হাতের হাতছানি তো আছেই ।
কিন্তু আমি সবকিছু উপেক্ষা করে আমার কর্মী-বাহিনী নিয়ে এগিয়ে যাই দুর্গম পথে, স্বপ্ন একটাই :
এই শিথিল সমাজের মানুষগুলোকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মন্ত্র দিয়ে সবল সংগ্রামী আর অগ্রগামী করে তুলবোই তুলবো । ইনশাল্লাহ্ ।
আমার লিখা কবিতার পান্ডুলিপি থেকে
আমার লিখা কবিতার পান্ডুলিপি থেকে