somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Ovid এর Art of Love ভালবাসার ছলাকলা

০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুবলিয়াস ওভিডাস নাসো(ওভিড)
জন্মস্থানঃসুমিলো,রোম
সময়কালঃখ্রীষ্টপূর্ব ৪৩-১৭/১৮ খৃষ্টাব্দ
লেখাঃমেটামরফেসিস,আমোরেস আরও অন্যান্য


শুধু শিল্প সংস্কৃতি না,দক্ষতা-শিক্ষা দরকার জাহাজ চালানোর জন্যে,যুদ্ধের রথের জন্যে,তাহলে এটা কি বেমানান প্রেম ভালবাসার জন্যেও দরকার একটা দক্ষ মনের ছোঁয়া,উপদেশ।আমার বিশ্বাস ভালবাসা,শরীর খেলার এই উপদেশে অনেকেরই উপকার হবে।হাগমাসের ছেলে,টাইফাইস দেবী এথেনার অনুরোধে আর্গো জাহাজের নাবিক হিসাবে,জেসন তার সঙ্গী সাথীদের সোনালী ভেড়ার লোমের অভিযানে যোগ দেয়।সমুদ্র ঝড়ে যখন হতাশ হয়ে হিমসিম খাচ্ছিল সবাই,ভেঙ্গে পড়া জাহাজকে দক্ষ হতে তীরে নিয়ে টাইফাস অভিযানের সফলতাকে সাহায্য করে।আমি টাইফাইসের মতই নিপুন দক্ষতায় তোমাদের ভালবাসার নৌকাটাকে জায়গামত পৌঁছে দেব।
আকিলিসের রথচালক অটোমেডনের দক্ষতার কথা কার না জানা,বালিয়ুস আর যানথোস দুই ঘোড়াকে রথে জুড়ে,কত যুদ্ধক্ষেত্রে আকিলিসকে নিয়ে গেছে সে।আকিলিসের জয়ে তার অবদান কি খুব একটা কম?ট্রয়ের যুদ্ধের ইতিহাসে আকিলিসের সাথে সাথে অটোমেডনের রথের কথাও লেখা আছে হোমারের কাব্যে।আমি অটোমেডনের দক্ষতা নিয়ে তোমাদের ভালবাসার রথকে নিয়ন্ত্রন করতে চাই,অবশ্য দায়িত্বটা স্বয়ং ভালবাসার দেবী ভেনাস আমার হাতে তুলে দিল।বেশীর ভাগ সময় মানুষ ভালবাসার ঝড়ো বাতাসে দিগবিদিগ হারায়,পুরুষ হিসেবে হয়তো আমার উপদেশ ঐ উন্মাদনার পরিবেশে শান্তির সুর আনতে সাহায্য করবে,এটা আমার বিশ্বাস।আকিলিস ছিল চাইরনের শিক্ষক,চাইরন তার ডানপিটে,দুরন্ত শিষ্য আকিলিসের দৌরাত্ম দুষ্টুমি ভাব থামানোর জন্যে গান বাজনা,খেলা করে তাকে মানিয়ে নিত।আকিলিসের মত দুধর্ষ যোদ্ধা যার ভঁয়ে কেঁপে উঠেনি এমন কোন যোদ্ধা ছিল না সে সময়,যার হাতে হেক্টরের মত নামকরা যোদ্ধা মূহুর্তেই মাটিতে তছনছ হয়ে গেছে,সেই আকিলিস শিক্ষক চাইরণের গলার স্বরে শান্ত সুবোধ বালকের মত সব কথায় মেনে নিত-ওটা সম্ভব ছিল চাইরণের দক্ষতা,অভিজ্ঞতার জন্যেই।
চাইরন আকিলিসের শিক্ষক,আমিও প্রেমের শিক্ষক,আমার কাজ ভালবাসার শিক্ষা দেয়া,শুধু মরলোকের শিষ্যদের না,দেবতাদেরও।ঠিক যে ভাবে দুরন্ত ঘোড়া মেনে নেয় সহিসের আদেশ,ষাঁড় ঘাড় এগিয়ে দেয় লাঙ্গলের জোয়ালে,সময়ে ভালবাসাও মানানসই হবে আমার উপদেশে।কাজটা যে খুব একটা সহজ,বা হেসে ফেলার মত ব্যাপার তা না।অনেকের সমালোচনা,কটুক্তির তীরের লক্ষ্য হবো আমি,হয়তো জ্বলন্ত আগুনও ছুটে আসবে আমার দিকে।কিন্ত ঐ ক্ষত,অত্যাচার আমাকে আমার উদ্দেশ্য থেকে সরাতে সক্ষম হবে না,বরং আরও উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে যাব আমি উদ্দেশ্য সিদ্ধির কাজে।
সুরের নয়জন দেবীর একজন,ক্লিও এর উৎসাহের সুরের জন্যে অপেক্ষা করিনা আমি,এমন কি আমি অপেক্ষা করি না এপোলো এর মন্দিরে ফিসফিস করে জানানো অস্পষ্ট ভবিষ্যত বানী-উপদেশ,সান্তনার জন্যে।যাদুর অচেনা কোন পাখী এসে শেখায়নি আমাকে নতুন কোন কৌশল,আমার অভিজ্ঞতা,চলায় দেখায়-শেখা আমার।অনভিজ্ঞ মেষ চরানো রাখালের মত আমি একগাদা অবুঝদের নিয়ে ছুটে যাচ্ছি না আসকারার মাঠে,আমার অভিজ্ঞতা,উপদেশে পৌঁছে দেব সবাইকে প্রেমের সার্থকতায়।
আমি যে ভালবাসার কথা বলছি,এমন না যে সেটা কোন আইন ভঙ্গ করে।আমি কাউকে ঠেলেও দিচ্ছি না কোন বিশ্বাসঘাতকতার দিকে বা আইন ভাঙ্গার খেলায়।প্রেম ভালবাসার খেলায় যারা একেবারেই নতুন,কাঁচা আমার উপদেশ বা শিক্ষা যাই হোক,সেটা বিশেষ করে তাদের জন্যেই প্রযোজ্য।
ভালবাসার খেলায় প্রথম কাজটা হলো একজন ভালবাসার মানুষ,সঙ্গী খুঁজে নেয়া,তারপর জানা দরকার তার সম্মতি,অসম্মতি।এরপর চেষ্টা করতে হবে কি ভাবে কাছাকাছি থাকা যায় ভালবাসার মানুষটার পাশে।এ সবকিছু সহজ ভাবে করার পদ্ধতিটাই আমার উপদেশ-বলা,শেখানো,যেটাই বলা যায়।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ভালবাসার সঙ্গী খুঁজে পাওয়া খুব একটা সহজ কাজ না,বাতাসে ভেসে কোন সুন্দরী ছুটে আসে না কখনও কারও কোলে।একটু বুদ্ধি খরচ করতে হবে অবশ্য,শিকারীর মত।শিকারী যেমন ফাঁদ পেতে রাখে হরিণ,বন্য শূয়রের জন্যে।পাখী শিকার করে যারা তারা পাখীর গতিবিধি খেয়াল করে বিশেষ ভাবে,মাছ ধরার জন্যে মেছো খাবার দিতে ভোলে না ছিপে।তোমাকেও খুঁজে বের করতে হবে প্রেমিকার ঠিকানা,আচার ব্যাবহার।কোন যুদ্ধ ক্ষেত্র বা সীমানাহীন কোন সমুদ্র পার হতে হবে না,এটা হ্রদয়ের খেলা,ভালবাসার যুদ্ধের আরেক পৃথিবী।
পারসিয়াস তার প্রেমিকা আন্দ্রোমেডিয়াকে দুর্গম পরিবেশ থেকে উদ্ধার করে আনতে দ্বিধা করেনি একটুকুও,আর প্যারিস রাষ্ট্রীয় কাজে স্পার্টায় গিয়ে খুঁজে পেল মানসী হেলেনকে,কোন কিছুই আটকায়নি তাদের মনের মানুষটাকে নিয়ে ছুটে যেতে।তোমাকে হয়তো মনের সুন্দরীকে খোঁজার জন্যে ছুটতে হবে না দূর্গম কোন জায়গায়,রাষ্ট্রীয় কোন চক্রান্তেও জড়াতে হবে না,খুঁজে পাবে মনের মানুষটা রোমের সুন্দরীদের মাঝেই।আকাশে অগুনতি নক্ষত্র আছে যেমন,মেথাইমনা বাগান যেমন আঙ্গুরের প্রাচুর্যতায় ছড়ানো,সমুদ্রে আছে যেমন অফুরন্ত মাছ,রোমও ভঁরা সুন্দরীদের্ দলে।তুমি যদি সবুজ পাতার অনভিজ্ঞ কিশোরীদের চাও,যদি চাও অভিজ্ঞ বয়সের সুন্দরীদের,এমন কি ওদের মাঝামাঝি কাউকে চাও,খুঁজে নাও তোমার মনের চাওয়া,অন্যদের মন্তব্যে কিই বা যায় আসে।পম্পেয়ীর সুন্দরীদের হেঁটে হেঁটে দেখবে দেখতে গ্রীষ্মের অসহনীয় বিকেলে,না হয় হেঁটে যাবে বিদেশ থেকে আনা মার্বেল পাথরের দেয়ালের পাশে,তোমার লোভী চোখ খুঁজে পাবে অনেক কিছুই।আর যদি সূযোগ হয় ঐ উঁচু উঁচু মার্বেল পাথরের স্তম্ভের সারির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়,লিভিয়ার এলাকা হিসেবে পরিচিত যেটা,হয়তো দেখা হতে পারে দেনায়দেসের সাথে চক্রান্তে ব্যাস্ত,মাসতুতো ভাইদের খুন করার পরিকল্পনায়।আর হ্যা সিরিয়ান ইহুদী মহিলাদের এডোনিস শোভাযাত্রার অনুষ্ঠান দেখতে ভুলবে না,কিন্ত।সংকোচ করো না,চেষ্টা করো লোকজনের সাথে খোলামেলা ভাবে মিশতে, আদালত,বিচারের জায়গাতেও,খুঁজে পেতে পার মনের মানুষকে।দেবী ভেনাসের মার্বেল পাথরের মুর্তির পাশ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে আপ্পিয়ান নদীর স্রোত,ওখানেও অনেক আইনজীবীরা খুঁজে পেয়েছে তাদের মনের মানুষ,বল অবাক হওয়ার কি আছে।যে লোকটা দক্ষতায় মক্কেলের বিচারে হাজারটা যুক্তির কথা বলে,সেই মানুষই কথা হারায় প্রেমিকাকে দেখে।ঐ যে দাঁড়িয়ে আছে নামকরা আইনজীবী কথা হারায় সুন্দরী মেয়েদের দেখে,ভেনাসের হাসির পাত্র সে একজন।খোঁজার জন্যে সবচেয়ে ভাল জায়গা হলো নাট্যশালা।পচ্ছব্দের মেয়েটাকে খুঁজে পেতে কোন কষ্ট হবে না সেখানে,এক রাত্রির জন্যে,এমন কি জীবন সঙ্গী হিসেবেও।পিপড়ারা যেমন দল বেঁধে ছুটে যায় খাবারের সন্ধানে,মৌমাছিরা ছূটে বেড়ায় ফুলে ফুলে,সুন্দরী মেয়েরাও দল বেঁধে ছোটে নাটকে,অনুষ্ঠানে।এটা ঠিক নিঃসন্দেহে বেশ কষ্টকর ঐ সুন্দরীদের দল থেকে মনের পচ্ছন্দসই মানুষটা খুঁজে নিতে,এটাই সেই জায়গা যেখানে রুপগুনের স্রোতে ভঁরা ছুটে আসে সবাই,আর চোখ জুড়োনো সুন্দরীদের দেশে মন ভোলানো সবাই,তবে ওর মাঝে খুঁজে পাবে মনের একজন।
আমাদের পূর্বপুরুষ,রোমোলুস অবশ্য আমাদের জন্যে আরেকটা সুন্দর দৃষ্টান্ত রেখে গেছে যখন সাবিনের মেয়েদের সৈন্যদের ভোগের জন্যে ছেড়ে দিতে দ্বিধা করে নি,সে।পুরোনো দিনে নাট্যশালায় ছিল না কোন যবনিকার পর্দা,সাজানো হতো না ষ্টেজ নকল দেয়াল দিয়ে।নাটকের মঞ্চ ছিল জাফরান আর গাছের ডালপালায়।দর্শকেরা মাটিতে বসে সরল আনন্দে উপভোগ করতো নাটক,বিজ্ঞের মন্তব্য,আতলামি কোনটার বালাই ছিল না তখন।
রোমানরা বসার জায়গা ঠিক করেই খুঁজতো তাদের পচ্ছন্দের মেয়েটা।অভিনেতারা তাদের কাঁচা প্রতিভায় ষ্টেজে চীৎকার আর লাফালাফি করে উপস্থাপনা করতো নাটকের চরিত্র,দর্শকেরাও(সৈন্যরা)হৈ হুল্লোড় করে যোগ দিতো আনন্দে,একসময় অভিনেতাদের একজন শারীরিক ইঙ্গিত দিয়ে জানান দিতো সবাইকে।বাজপাখী যেমন ঝাপিয়ে পড়ে শিকারের উপরে,লোকজন তাদের শ্যেন দৃষ্টিতে খুঁজে নিত পচ্ছন্দের মেয়েটা।শিশু ভেড়া যেমন নেকড়ে বাঘের ভঁয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়,সাবিনের মেয়েদেরও শিশু ভেড়ার মত সৈন্যদের কাছে সর্মপণ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো,চীৎকারও করতো অনেকেই,হাওমাও করেও কাঁদতো বেশ কজন,চুপচাপ সহ্য করতো অনেকেই,পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতো,আবার কেউ কেউ সমস্ত শক্তি নিয়ে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করতেও ছাড়তো না।কিন্ত কামনায় পাগল রোমানরা সব কিছু অবজ্ঞা করে পচ্ছন্দের মেয়েটাকে কাঁধে নিয়ে ছুটে যেত বিছানায়।দু একজন সৈন্য আবার ফিসফিস করে তাদের শিকারের কানে কানে বলতো, ‘ভঁয় পাওয়ার কিছু নাই,তোমার বাবা তোমার মায়ের সাথে বিছানায় যে খেলায় মত্ত থাকতো,এবার তুমি পাবে সেই স্বাদ’।
আমাদের রোমুলাসের জানতো যুদ্ধের সেনাদের কি উপহার দিতে হয়।এখন সৈন্যদের সেই সৌভাগ্য আর হয় না,তা হলে হয়তো রোমের সব নাগরিকরাই যুদ্ধে যাওয়ার জন্যে ছুটে যেতো।যাকগে,সেই রোমুলাসের সময় থেকেই নাট্যশালা প্রেম ভালবাসা দেখা সাক্ষাতের একটা জায়গা হয়ে গেছে।
গ্লাডিয়েটদের মল্লভুমি আরেকটা জায়গা যার কথা না বললে ঠিক হবে না,যোদ্ধাদের শক্তি দেখানোর জন্যে উৎসাহে অপেক্ষা করতো।লোকে লোকারান্য জায়গা সব সময়ই প্রেম ভালবাসার উপযুক্ত জায়গা,ওখানে কোন ইঙ্গিত দেয়ার প্রয়োজন হবে না।বসার জায়গাগুলো বেশ কাছাকাছি পচ্ছন্দের মেয়েটার কাছাকাছি বসার জায়গাটা খুঁজে নিলে একটু ছোঁয়াছুঁয়ি তো হবেই তারপর কথাবার্তায় মেতে যেতে খুব একটা কষ্ট হবে না।একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না,মনের মানুষের পাশাপাশি থাকলে কার মনটা না অস্থির হয়,তাই সহজ ভাবে আলাপ করতে না পারলে,ওখানে বসাটাই বোকামি।কেউ একটা ঘোড়া নিয়ে মল্লক্ষেত্রে ঢুকলে,তখন আলাপ করতে পার ঘোড়ার নাম,মালিকের নাম এ সব নানান ধরণের কথা নিয়ে।সুন্দরীর পচ্ছন্দের রংটা হবে তোমারও পচ্ছন্দের রং।দেবতাদের শোভাযাত্রা যখন তোমাদের সামনে দিয়ে যাবে,ভেনাসের শোভাযাত্রা দেখে তুমি বেশ উৎসাহ নিয়ে হৈচৈ করতে ভুলবে না।অবশ্য তোমার সব প্রচেষ্টায় ব্যার্থ হবে যদি এক সময় তুমি অনিচ্ছার ভান করে কিছু ধুলাবালি তার বুকে ফেলে না দিতে পার।তখন অপ্রস্তত,কাঁচুমাচু হয়ে ক্ষমা চাওয়ার সূযোগ পাবে।চেষ্টাও করতে পার তার পোষাকের ধূলাবালি ঝেড়ে ফেলার সময় ভাগ্যবান হলে তার উরু দেখার সূযোগও হতে পারে।তবে খেয়াল রাখবে পেছনে কে বসে আছে,কোন বর্বর তার কাঁধে হাঁটু দিয়ে তাকে বিরক্ত ক্রছে নাকি,দেখবে সময়ে তোমার দৃষ্টির পুরস্কারটা।প্রেমের অনেক যুদ্ধের জয় হয়,শুধু বসার জায়গার অবস্থানে,হাত পাখার নাড়াচাড়ায়।বিশেষ সময়ে তৈরী করা ছোট্ট একটা চেয়ার হতে পারে অনেক অলৌকিক ঘটনার সূত্রপাত।সার্কাস,ঘোড়দৌড়ের মাঠও প্রেম করার জন্যে খুব একটা খারাপ জায়গা না।অনেক পচ্ছন্দের মেয়েকে রেসের বাজির ঘোড়ার কথা জিজ্ঞাসা করে,সেই ঘোড়ার বাজিতে হেরে বাহাদুরি দেখায়,ওটা বোকামি ছাড়া আর কিছু না।
এই তো কিছুদিন আগে আমাদের সিজার সমুদ্রে বিরাট একটা মহড়া করলো এথেন্স আর পারস্য রাজত্বের লোকজনদের দেখানোর জন্যে।হাজার হাজার রোমানদের,এমন কে ছিল যার ঐ দূর দেশের সুন্দরীদের চেহারা দেখে মনটা অস্থির হয়নি কিছুটা সময়?
এখন সিজার বিশ্বজয়ের পরিকল্পনা করছে,ঐ নাক উঁচু পার্থিনিয়ানদের বশীভুত করার জন্যে,সাথে সাথে আরও অনেক দেশে উড়বে রোমের পতাকা।কবরে শুয়ে থাকা আমাদের নিহত যোদ্ধাদের আত্মার শান্তি হবে তাতে নিশ্চয়ই,পার্থিনিয়াদের রোম কম নাজেহাল হয়নি।সিজারের বয়সের কথা চিন্তা করে ভঁয় পাওয়ার দরকার নেই,এ ধরণের দায়িত্বের জন্যে তার বয়স হয়নি এটাও ভাবার দরকার নেই,সিজার এমন একজন মানুষ যার ক্ষমতার কথা মানুষ জানবে যুগ থেকে যুগান্তরে।
জুসের স্ত্রী হেরার ঈর্ষায় চক্রান্ত করে পাঠানো দুটো বিরাট সাপকে শিশু হারকিউলিসের দোলনায় মেরে ফেলতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি,যাতে সহজেই বোঝা যায় তার সাহস,শক্তির কথা,আর এটাও বোঝা যায় সে দেবতাদের রাজা জুসের উপযুক্ত সন্তান।প্রতিভাবান মানুষদের করনীয় সাধারণ মানুষদের চিন্তা ধারণার বাইরে।ও ভাবেই বাকাস(জুসের ছেলে)যখন হেরার চক্রান্ত থেকে উদ্ধার পেয়ে দূর ভারতবর্ষের লোকজন তাকে উপাসনা করতে না চাইলে,তাদের বশ করতে সময় নেয় নি।
মহামান্য সিজার তোমার সাহস,শক্তির স্বর্গীয় আলো দেখলেই বোঝা যায় রোমের শত্রুদের দমন করতে তোমার কোন বেগ পেতে হবে না।এখন তুমি যৌবনের রাজকুমার,সময়ে বয়স্কদের সম্রাটও হবে।রোমানদের ভাই তুমি,নিঃসন্দেহে তুমি ভাইদের অপমানের প্রতিশোধ নিতে দ্বিধা করবে না,দেশের সন্তান হয়ে নিশ্চয় মাতৃভূমি রক্ষা করার জন্যে যা যা করা দরকার তার কোনটাতেই কার্পন্য করবে না।তোমার হাতে দেশ মাতার তুলে দেয়া রাজদন্ড যা তোমাকে সব সময় দিবে স্বর্গীয় সাহায্য।তোমার হাতের ঐ পবিত্র অস্ত্র সহজেই দমন করবে পার্থিনিয়ানদের।তুমি পার্থিনিয়ানদের সম্পদ এনে আরও শক্তিশালী করবে লাটিয়ামের ধন সম্ভার আর সাম্রাজ্য।জাতির পিতা সিজার,জানি যুদ্ধ দেবতা মারস সাহায্য করবে তোমাকে আগামী সব অভিযানে।আমার দূরদৃষ্টি বলে দিচ্ছে তোমার জয়ের কাহিনী।আমি তোমার জয়ের গানে সোচ্চার হয়ে উঠবো,আমার কবিতা তোমার জয়গানে রোমের সবাইকে মুগ্ধ করবে।আমি লিখবো ভীরু পার্থিনিয়ানদের পালানোর কথা,আর তুমি তোমার সৈন্যদের,শত্রুদের হাজারো তীর উপেক্ষা করে বিজয়কে মুঠোর মধ্যে নিয়ে আসার গল্প।
দিনটা খুব একটা দূরে নেই,যখন চারটা সাদা ঘোড়া টানা গাড়ীতে ঝলমলে পোষাকে তুমি ফিরে আসবে বিজয়ীর উজ্জল চেহারায়।সামনে থাকবে,মাথা নীচু করে শেকল পায়ে বন্দীরা।আর সারি বেঁধে দাঁড়ানো রোমানরা মন ভঁরা আনন্দে উপভোগ করবে তোমার বিজয়ের স্বাদ।
আর যারা আমার শিষ্য,সৈন্যদল যখন হেঁটে যাবে সারিতে,হয়তো কোন এক সুন্দরী পাশে দাঁড়িয়ে তোমাকে প্রশ্ন করবে পরাজিত সেনাপতির নাম,কোন দেশের-এটা ওটা।ধৈর্য নিয়ে তাকে বিস্তারিত সব কিছু বোঝানোর চেষ্টা করো,ভুলেও কোন বিরক্তি প্রকাশ করবে না।পারলে বিস্তারিত ভাবে বলে দিও পতাকার চিহ্নের গল্প,অস্ত্রশস্ত্রের কথা,পোষাকআশাকের গল্প,এমন কি পারলে বলতে ভুলো না পরাজিত দেশের নদীনালার গল্পকথা।এমন ভাবে বলবে যেন সবকিছুই তোমার নখদর্পনে,যদি খুব একটা না জানাও থাকে যতটুকু বলবে, বলো আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
‘নলের মত মুকুট মাথায় ওটা হলো ইউফ্রেটেস,আর ঐ যে নীল চুলের বুড়ো চেহারার ওটা টাইগ্রিস,ওরা আর্মেনিয়ান জাতির,আর ওরা হলো পারসী,যেখানে আক্রিসিয়াসের মেয়ে ডানায়ের জন্ম,যাকে তার বাবা দৈববানীর ভঁয়ে পাতালের লোহার জেলখানায় বন্দী করে রাখতে দ্বিধা করেনি।আর দূরের ও সব লোকজন একিমেনেসের,আর ওদিকে হেরে যাওয়া সেনাপতির দল’।নাম জানা থাকলে বলতে ভুলবে না,আর জানা না থাকলেও বানিয়ে বলতে দ্বিধা করো না।

আরও একটা ভাল মেলামেশার জায়গা হলো বড় বড় অনুষ্ঠান,খাওয়াদাওয়ার আসর।খাবার ছাড়া মদের বোতলটাও প্রেমিকের বিরাট সহায়।কিউপিডের পাখা যখন মদে ভিজে থাকে,নেশার আবেশে তখন তার জগতটা বেশ চুপচাপ হয়ে যায়।নেশা কেটে গেলে জেগে সে তখন নতুন আরেক চরিত্র,তখন তার উপরে আসে দেবতা বাকাসের আর্শীবাদের ছোঁয়া।গরীব ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে,অযথা এটা ওটা বলে বেড়ায়।কুচকানো ভুরু সহজ হয়,পাথরের মত শক্ত মনটাও নরম হতে সময় নেয় না।সত্যি কথা চলে আসে ঠোঁটটায় যা ভঁরা বানানো গল্পে।ভালবাসার সাথে মদের অদ্ভুত একটা যোগাযোগ আছে,মদ তো ভালবাসার আগুনের জ্বালানী মত,নেশায় মানুষের অবিশ্বাসের আকাশটায় আসে বিশ্বাসের রাজ্য।তুমি যদি তার ঠোঁটের সত্যিকারের স্বাদ পেতে চাও তাহলে দেখা করো সাথে দিনের আলোতে।উজ্জল আলোতে প্যারিস সুন্দরী দেবীদের বিচার করার সময় খুব সহজেই ভেনাসকে বললো, ‘তুমি দেখতে আর যে কোন দেবীর চেয়ে অনেক সুন্দরী,ঐ হেরার কথা বল বা এথেনার কথাই বল’।
রাতের অন্ধকারের ছায়ায় লুকায় মানুষের চেহারার অনেক ক্ষত,দাগ,বলা যায় রাতের আলো আধারী খেলায় কাকেই বা না মনে হয় সুন্দরী?মেয়ে হলেই হলো।
এ ভাবে অবশ্য মেয়েদের সাথে দেখা সাক্ষাতের হিসেব করতে গেলে-ওটাতো সমুদ্রের জলের গভীরতার মত শেষ হবে না কোন সময়।আমি বলি কি বাইয়ার ঝর্নার কথা,ওখানকার জলের উষ্ণতা,সমুদ্রের মত ছড়ানো ধবধবে সাদা বালি।অনেক লোকজন ওখানে যারা চিকিৎসার জন্যে গেছে,ফিরে এসে বলে , ‘ওখানকার কথা এই যে লোকজন বলে কোনটাই সত্যি না,বরং বলা যায় ওটা প্রেম খেলার একটা রাজ্য’।রোম ছাড়িয়ে একটু দূরে আছে দেবী ডায়ানার মন্দির,মন্দিরের বাইরের বড় বটগাছটার নীচে কতই না ভালবাসার খেলার ইতিহাস সাজানো।নিষ্পাপ ঐ সব অপকর্মের প্রতিশোধ নিতে ভুলেনি,আর ভবিষ্যতে কমে যাবে না তার প্রতিশোধের স্পৃহা।
এ পর্যন্ত আমি তো শুধু পচ্ছন্দসই মেয়েটাকে খুঁজে নেয়ার জায়গাগুলোর কথা বললাম।এখন তো বলা দরকার মনের মানুষটাকে খুঁজে পাওয়ার পর তাকে জয় করা আর আপন করে নেয়ার হিসেব নিকেশ।এটাই আমার শিক্ষা,উপদেশের সবচেয়ে দূরুহ পর্ব।এটার প্রয়োজনীয়তা এতই বেশী যে বলার জন্যে সব দেশের,সব আবহাওয়ার লোকজনকে শোনাবো আমার কথা।
যাকগে,এগোনোর আগে মনে রেখ একটা কথা,তোমাকে বিশ্বাস করতে হবে পৃথিবীতে এমন কোন নারী নেই যাকে আপন করা তোমার পক্ষে সম্ভব না।মনে রাখবে ফসল তোলা,বীজ বপনের আগে মাটিটা তৈরী করতে চাষের উপযোগী।হয়তো হতে পারে বসন্তের পাখীদের গান থেমে গেছে,গ্রীষ্মে ফড়িংরা লাফালাফি না করে বিষন্ন হয়ে বসে আছে,খরগোসরা ছূটছে কুকুরের পেছনে,তবে বদলাবে না মেয়েদের প্রেমিক খোঁজার পর্ব।ভাবছো হয়তো মেয়েটা তোমাকে অপচ্ছন্দ করে,ওটা তোমার বোঝার সম্পূর্ন ভুল,আসলে হয়তো সে মনে প্রানে চায় তোমাকে।
০০০০০০
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×