somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রক্ত ঢেলে প্রতিবাদ, পলাশীতে অবরোধ

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


উপাচার্যকে না পেয়ে নিজেদের শরীর থেকে সংগ্রহ করা রক্ত প্রশাসনিক ভবনের সিঁড়িতে ঢেলে নতুন ধরনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁরা আজ সোমবার সকাল থেকে প্রতীকী রক্তপাত কর্মসূচি শুরু করেন। এদিকে পলাশীর মোড়ে অবস্থান করে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন তাঁরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল ভবনের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের শরীর থেকে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত সংগ্রহ করে তা বোতলে জমা করেন। এরপর সেই রক্ত দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান। সেখানে উপাচার্যকে না পেয়ে তাঁরা সামনের সিঁড়িতে দুই বোতল রক্ত ঢেলে দেন।
প্রতীকী রক্তপাত কর্মসূচি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘বুয়েটের বর্তমান উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে একটি খুনের ঘটনা ঘটে। এরপর তিনি সেখান থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। আমরা আশঙ্কা করছি, মিথ্যা মামলা ও সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা চালিয়ে বুয়েটেও রক্তপাত ঘটাতে চাইছেন তিনি। তাই আমরা নিজেরাই আমাদের রক্ত সংগ্রহ করে উপাচার্যকে দেব। আমরা তাঁকে বলতে চাই, আমাদের রক্ত নিন, তার পরও বিদায় হোন।’
বেলা একটার দিকে শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। তাই তাঁদের না পেয়ে সংগৃহীত দুই বোতল রক্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনের সিঁড়িতে ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
সকাল থেকেই পুরকৌশল ভবনের সামনে শত শত শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অবস্থান নিয়েছেন। তবে পুলিশ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কথা বলে তাঁদের মাইক ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। একই সঙ্গে প্রশাসনিক ভবনের সামনেও আন্দোলনকারীদের অবস্থান করতে দিচ্ছে না পুলিশ। রক্ত সংগ্রহের পর শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে থামে এবং রক্ত ঢেলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে রক্তপাত কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটান।
বেলা দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীরা পলাশীর মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে সেখানে অবস্থান করছিলেন। ক্যাম্পাসে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গতকাল রোববার বুয়েটের আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন সরকার-সমর্থক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা আন্দোলনকারীদের মাইক কেড়ে নেওয়া এবং প্রশাসনিক ভবনের দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া আন্দোলনকারীদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তাঁরা।
পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে শিক্ষকেরা গতকাল উপাচার্যের কার্যালয়ে দিনভর অবস্থান করেন। তবে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য কার্যালয়ে ছিলেন না। উপাচার্য গতকাল নিজ কার্যালয়েই যাননি। সহ-উপাচার্য সকালে গেলেও বেশিক্ষণ কর্মস্থলে ছিলেন না। শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এই দুজনের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন। এর পাশাপাশি বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে।
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি। তাই সরকার না বললে পদত্যাগ করব না।’
উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে বুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ১১ জুলাই থেকে লাগাতার আন্দোলন করে আসছিলেন। ৩১ জুলাই আদালত আন্দোলনের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। এরপর শিক্ষক সমিতি আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে। কিন্তু শিক্ষকেরা ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে ক্লাসে না যাওয়ায় দীর্ঘ ৪৪ দিন পর গত ২৫ আগস্ট বুয়েট খুললেও ক্লাস বা পরীক্ষা হচ্ছে না। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা।

(প্রথম আলো অন লাইন নিউজ)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×