বিপিএল দেশকে তথা দেশের ক্রিকেটকে কি দিয়েছে? প্রশ্নটা এখন করা না হলেও কিছুদিন পরে সমালোচকরা ঠিকই করবে।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে বিপিএল এর প্রথম আসর শেষ হচ্ছে পরশু। কে হবে চ্যাম্পিয়ন দুরন্ত রাজশাহী নাকি খুলনা রয়েল বেঙ্গলস। আমার মনে হয় দুরন্ত রাজশাহী চ্যাম্পিয়ন হবে বিপিএল ২০১২ এ। মন খারাপ করবেন না, ঢাকা, খুলনা বা চাটগাঁর সমর্থকেরা, এটাতো খেলার অংশ।
শুরুতে অনেক কিছুরই সমস্যা থাকবে যা বিপিএল এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। স্পটফিক্সিং অপতৎপরতা সনাক্তকরণ ও আইনের প্রয়োগ খেলোয়াড় ও এর সাথে জড়িত সবাইকে সতর্ক করে দেবে যে, যারা এর সাথে জড়িত থাকে তাদের কাজ শুভ হবে না।
পাকিস্তানের মানুষ ক্রিকেট শুধু খেলেই না, বরং খেলাকে জুয়া খেলা বা ব্যবসা মনে করে, সুদুর ইংল্যান্ডে ও এর ব্যাবসা চলে, আর বাংলাদেশে তো এর ব্যবসা করা অনেক সহজ।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
কিন্ত, দেশের কোন কেউ এর সাথে জড়িত আছে বলে মনে হয়, না হলে এট সতর্ক হওয়ার পরেও কেন জু্যাড়িরা ফাঁদ পাতবে। যাহোক বিসিবি ও আইন কতৃপক্ষ এর সমূল উৎপাটন করবে বলে আমরা আশা রাখি।
বিপিএল ভালোই চলছিল, কিন্তু পরপর দুইবার স্পটফিক্সিং এর আভাসে বিবর্ন হতে যাচ্ছিল জমজমাট লড়াইয়ের এর ক্রিকেটধারা।
যাহোক, অনেক অনিশ্চয়তার খেলা বিপিএল টি২০ এর সেমিফানালের লড়াই কাল থেকে। কিন্তু এখানে আরেক সমস্যা। সবাইকে সন্দেহে রেখে, বরিশালকে টপকে চাটগাঁ এখন ফাইনালে মঞ্চে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, যদিও একমাত্র বাধা দুরন্ত রাজশাহী।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
কিন্তু বরিশালের বিষয়টি খারাপ লাগারই কথা, সবাই জানে বরিশাল চট্টগ্রামকে হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে গেল, কিন্তু সেই চাটগাঁই শেষ পর্যন্ত সেমিতে। অন্যদিকে, নিট রানরেটের ঝামেলা এই শেষ সময়ে কেন হল, এসব বিষয় কেউ খেয়াল রাখেনা কেন?
আবার রেডিওতে শুনলাম ধারাভাষ্যকারের বলছে, খেলা শুরুর ৫ মিনিট আগেও তারা কোন খেলোয়াড় বা আম্পায়ার বা ম্যাচ রেফারির নাম জানেনা। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে অনেক ক্রিকেটপাগল আছেন যারা টিভিতে বা এফএম এ খেলা শুনতে পারেন না, ঢাকা ক রেডিও চ্যানেল টিউন করে শুনতে হয়, তাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করা দরকার।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
দুরন্ত রাজশাহী বিপিএলর সবচেয়ে বড় চমক ও ফাইনালের দাবিদার, ২ ম্যাচ হেরে যেভাবে ঘুরে দাড়িয়েছে, তাতে অনেক বিষয় ভাবতে হবে, বিশেষ করে দেশি কোচ নিয়োগ করে জাতীয় পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নয়ন করা।
বিভাগীয় এলাকায় ভেন্যু করা হলে বিপিএলে দর্শক বাড়বে, এটা মাথায় রেখে পরবর্তীতে অবশিষ্ট ভেন্যুগুলো সংস্কার ও ময়দান বাড়াতে হবে।
ভালমন্দ হিসেব করে বিপিএল আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের একটি বড় উত্থান। আর এর ফল সবাই ভোগ করছে এবং এটাকে ভবিষ্যৎ ক্রিকেটের জন্য গড়ে তুলতে হবে।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
বিপিএলে প্রথমবার যে বিষয়টি লক্ষ্য করা গেল তা হল দেশি ক্রিকেটারদের অনুজ্বল সাফল্য, ভাল গতি ও বৈচিত্র্যময় পেস বোলার, দক্ষ ও মারকুটে ব্যাটসম্যান, বৈচিত্র্যময় স্পিন বোলার, তৃণমুল পর্যায়ে শক্তিশালী ক্রিকেট সংগঠন, খেলার মাঠ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে বিকেন্দ্রীকরণ, দেশীয় ক্রিকেট মিডিয়া ও ক্রিকেট প্রযুক্তির উন্নয়ন। এতে করে দেশের মেধার মুল্যায়ন ও কর্মসংস্থান হবে।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
দীর্ঘ মেয়াদে, বিপিএল এর সম্ভাবনা ভাল যদি এটাকে শুধু খেলা বা ব্যবসা মনে না করে, খেলোয়াড় তৈরির কারখানা বলে মেন করা হয়। বিদেশী ভাল খেলোয়াড়দের সাথে খেলে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করা হবে তা যেন জাতীয় পর্যায়ে কাজে লাগানো হয়।
একটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে যে, বিপিএল কিন্তু আইপএল এর নকল খেলা, আইপিএল এর কারণে ভারতীয় ক্রিকেটের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ওদের ব্যবসা রমরমা।
আমাদের ক্রিকেটের অমন যেন না হয়। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করা হচ্ছে তাই যেন হ্য়, না হলে খবর আছে।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
সবশেষে, বিপিএল, সোনার বাংলাদেশের টাইগারময় ক্রিকেট যেন বিশ্বক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র হয়। ভবিষ্যতে, যেন পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়েরা এখানে খেলে অবদান রাখে। ভারত যেন, ভবিষ্যতে আমদের পায়ে ধরে অনুরোধ করে সিরিজ খেলার জন্য। তবে আমরা যাব না ভারতে, কারণ ওদের অপমানের জ্বালা সইতে হবে অনেক দিন ধরে, সবেমাত্র অরুণ লাল এসেছে, আস্তে আস্তে সব লাল চাঁন আসবে।
বিপিএল এর সাফল্য, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ ও সম্ভাবনা
ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্য সকল খেলার উন্নয়ন ঘটাতে হবে, বিশেষ করে, মৃতপ্রায় ফুটবলের, মেসি এসে যেমন বাংলাদেশ মাতিয়েছে, হাজার হাজার বঙ্গ-মেসি যেন এখান থেকে বিদেশের বিখ্যাত ক্লাবে খেলে বাংলাদেশের মান বাড়ায়। তা কি আসলেই সম্ভব? সব তিনি জানেন আর জানে আবুলরা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





