somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আগের ফেসবুক আর এখন ফেসবুক।

২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুকের নতুন রুপ আমার কাছে একটু ও ভালো লাগে না। আমি যখন প্রথম প্রথম ফেসবুক চালাতাম তখন ফেসবুক চালানো একটা আভিজাত্যের ব্যাপার ছিলো। ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষার শেষের দিকে একটি নকিয়া মোবাইল ক্রয় করি। Nokia 5130। এটা দিয়ে তখন ইন্টারনেট চালানো যেতো। গান শুনা যেতো।

সেই Nokia 5130 এ বাই ডিফল ওয়েব ব্রাউজার ছিলো ওপেরা মিনি।

ওপেরা মিনি দিয়ে ঠিক এমন ভাবে নিউজ ফিড আসতো।

আমাদের ২০১১ সালের এসএসসি বেইসে, ২০১১ সালে মুষ্টিমেয় কিছু ছেলে ফেসবুক চালাতাম। তখন ফেসবুকে পোস্ট দিতাম। বন্ধুদের হাই হ্যালো করতাম। প্রায় অধিকাংশ সময়ে বন্ধুরা একে অপরের টার্চে থাকতাম। এখন অধিকাশ বন্ধুরা কর্মজীবন ও পারিবারিক কাজে ব্যাস্ত। তাই আগের মত যোগাযোগ হয় না। আমিও তেমন চ্যাটিং করার সময় পাই না। অধিকাংশ সময়ে ইনবক্স এ কোন ম্যাসেজ থাকে না। একটা সময়ে ফেসবুক ম্যাসেজ অপসনে ৫ থেকে ৬ ম্যাসেজ জমা থাকতো।

২০১১ সালে আমরা তখন গল্প লিখে পোস্ট করতাম। ছবি পোস্ট করতাম। তখন 2G ছিলো, আর সবার কাছে স্মার্ট ফোন ছিলো না। তাই কেউ ফেসবুকে ভিডিও দেখতো না।

২০১৪ সালে 3G আসলো। এন্ডোয়েট এর মত স্মার্ট ফোন আসলো। ফেসবুক app আসলো। অনেকের জন্য ফেসবুক চালানো সহজ হলো। তখন আমাদের এসএসসি বেইসের অনেক বন্ধুদের ফেসবুকে দেখলাম। তখনও ফেসবুক একটি ভালো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিলো।

২০১৬ সালের দিকে 4G আসলো। ঐ সময় ইউটুবে ভিডিও দেখার এক প্রকার ঝোক সৃষ্টি হয়। তখন ফেসবুকেও সবাই ভিডিও দেখতো। কেউ ভিডিও ছাড়তো। এই সময় থেকে আসতে আসতে আমার কাছে বিরক্তির কারন হয়ে দাড়ায়। তখন গ্রামের ছোট ভাই ব্রদারেরাও ফেসবুক চালাতে থাকে।

তখন তাদের মধ্যে একটা নেশা সৃষ্টি হয়। সেটা হচ্ছে ভাইরাল হবার চেষ্টা। এই ভাইরাল হবার জন্য সবাই নোংরা, আজেবাজে, মানহীন কনটেন্ট বানাতে থাকে। এগুলা আমার মজার ছলে ভাইরালও হতো। যে জিনিসটা একবার ভাইরাল হয়, দেখা গেছে নেই জিনিসটা বারবার নিউজ ফিডে ভাসতে থাকে। কিছু দিন আগে সম্ভবত কোন এক ছাত্রীর ছবি ভাইরাল হয়। আমি ফেসবুকে ঢুকলেই দেখতাম ঐ মেয়ের ছবি।

আর টিকটকের দেখাদেখি ফেসবুক রিল বাহির হয়েছে। এখন ভাইরাল হবার জন্য অশালীন ভাবে ভিডিও করে। ডাবল মিনিং ওয়ালা শর্ট ভিডিও বানায়। আর ওরা যে সকল ড্রেস পড়ে সেগুলো দেখলে যে কারো কাম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আধুনিকতার নামে বেহায়া এর মত চলে। কাপড়ে কোন স্মর্টনেস নাই। এই কাপড়ে ধর্মের কোন ছোয়া নাই। এমনকি মর্ডান ধাচের কাপড়ও সেগুলা না।

আর এখন ফেসবুকে বেশী ছড়াচ্ছে গুজব। ২০১৫ সালে বা ২০১৬ সালে। ছেলে ধরা নিয়ে একটি গুজব সৃষ্টি হয়। এই ছেলে ধরা সন্দেহে এক অভিবাবক কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। একই সময়ের দিকে কোন এক বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালানো হয়। আবার ফেসবুকে ধর্মীয় অববাননা বেশী হয়। হিন্দুরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটায়। আবার মুসলিমরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটায়। যার প্রভাব পড়ে রাজ পথে। দাঙ্গা সৃষ্টি হয়। অনেক মানুষ মারা যায়। অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়।

আমাদের সময়ে এসব ছিলো না। আমরা আমাদের মনের আবেগ প্রকাশ করতাম। নিজেদের ছবি প্রকাশ করতাম। কোন বাজে কমেন্ট করতাম না। এখন মানুষ কোন কিছু শেয়ার করার নামে নিজেদে প্রাইভেসি নষ্ট করছে।

যাই হউক। আমাদের সময় রিল ছিলো না, ভাইরাল হবার নেশা ছিলো না, আজে বাজে মানহীন কনটেন্ট ছিলো না, অহেতুক কোন কিছু ভাইরাল হতো না। আমাদের সময় ফেসবুকে একে অপরের খোজ খবর নিতাম। বাপ মা কে সময় দিতাম। বাস্তব বন্ধুদের বেশী সময় দিতাম। তাই আমাদের সময় এর ফেসবুক খুব ভালো ছিলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৫:২০
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×