আমি নারীবিদ্বেষী নই৷বরং যার যার প্রকৃতি প্রদত্ত বৈশিষ্ট্যের সংরক্ষনে আগ্রহী৷ নারী ও পুরুষ উভয়েরই কিছু প্রকৃতি প্রদত্ত ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ এক্ষেত্রে জোর করে নারী ও পুরুষ সমতাবিধান বরং তাদের উপর জুলুম করা ছাড়া কিছু নয়৷
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রতীক ভ্যানিটি ব্যাগ, পুতুল ইত্যাদি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে৷কেউ কেউ তো কয়েক কাঠি বেশি সরেস৷এটাকে সংবিধান পরিপন্থী বলেও রায় দিচ্ছে৷ আজ প্রথম আলো পত্রিকায় মিজানুর রহমান খানের লেখা দেখে কিছুটা বিস্মিত হলাম৷তিনি এগুলোকে দাসত্বের প্রতিক বলেছেন৷
ভ্যানিটি ব্যাগ কেন দাসত্বের প্রতীক হবে? বরং এটা নারীদের প্রিয় একটি দৈনন্দিন ব্যবহার্য সরঞ্জাম৷ এটা পশ্চিমা বিশ্বেও নারীরাই ব্যবহার করে৷ চুড়ি আমাদের দেশের বিবাহিত মহিলাদের জন্য একটি ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য্যের প্রতিক৷ এটা পেলে যেকোন মহিলাই খুশি হবে৷
পুতুল প্রতীক দেওয়াটা অন্যায় হল কিভাবে? বড়দের কথা বাদই দিলাম৷ তিন বা চার বছর বয়সী যাদের নারী পুরুষ বা লিঙ্গ সম্পর্কে ধারণাই নাই তাদের যদি দোকানে নিয়ে পছন্দের জিনিস কিনতে বলা হয় তাহলে একটি ছেলে পিস্তল, বল বা এজাতীয় যেকোন খেলনা পছন্দ করবে৷ অন্যদিকে একটি কন্যাশিশু প্রথমেই নির্দিধায় একটি পুতুল পছন্দ করবে৷ এটা প্রকৃতি প্রদত্ত৷ সুতরাং যার যেটা প্রিয় তাকে সেটা দেওয়া হলে তা নিয়ে সমালোচনা হবে কেন? যার যার প্রিয় জিনিস তা না দিয়ে সমতা বিধানের লক্ষ্যে উভয়কে জোর একই জিনিস ধরিয়ে দেওয়াটাই জুলুম৷ যার যার প্রিয় জিনিস তাকে দেওয়াটাই হল সমতা৷
সমঅধিকার মানে মহিলারা বাচ্চা জন্ম দেয় বলে পুরুষদেরও দিতে হবে এমন নয়৷ আপনার বস আপনাকে হুকুম করে বলে আপনিও সমঅধিকারের বলে আপনার বসকে হুকুম করবেন তা নয়৷ আর নারী পুরুষের ক্ষেত্রে প্রকৃতি প্রদত্ত স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেটা প্রাকৃতিকভাবে তাদের চরিত্রে ফুটে ওঠে৷
নারীকে সন্তানদানের পর মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান এবং সক্ষম পুরুষের উক্ত সময়ে নারীকে সার্বিক সহযোগিতা করার অর্থই হল সমঅধিকার৷ নারী মাতৃত্বকালীন সময়ে ঘরের ভিতর অবস্থান করে বলে পুরুষকেও ঘরের মধ্যে অবস্থান করতে বাধ্য করা সমঅধিকার নয়৷ পুরুষ যা করবে নারীকেও তাই করতে বাধ্য করাটাও সমঅধিকার নয়৷
আর মহিলাদের যে নির্বাচনের প্রতীক নিয়ে এত সমালোচনা হচ্ছে সেখানে তো মহিলারা নিজেরাই নিজেদের খাটো করে রেখেছে৷ যদি সমঅধিকার চাইতেই হয় তাহলে তারা মহিলা সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন করবে কেন? তারা প্রয়োজনে পুরুষের সাথে একই পদে লড়াই করুক৷ এই বিষয়টা অনেকটা কঠিন শোনায় বলে এই বিষয়ে বলতে আগ্রহী ছিলাম না৷ কিন্তু সমঅধিকার বলতে পুরুষ যা করবে মহিলাদেরও তাই করতেই হবে এই ধারণা থেকে বললাম৷
বিয়ের বয়স নিয়ে নারীবাদীরা একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছে৷বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার বিয়ের বয়স ১৬ রাখতে চাচ্ছে৷ আমার তো মনে হয় বিশেষ পরিস্থিতিতে বয়সের ধরাবাঁধা নিয়মই থাকা উচিত নয়৷ কারণ একটি মেয়ে অবৈধ সম্পর্কের কারণে যদি ১৮ বছরের আগেই গর্ভবতী হয়ে যায় তখন তার ক্ষেত্রে কি হবে? বাচ্চাটি কি জারজ হিসেবে জন্ম নিবে নাকি গর্ভপাত ব্যবস্থা চালু থাকবে? আমাদের সংস্কৃতি কোনটা সমর্থন করে? এবিষয়ে নারীবাদীদের মতামত জানলে খুশি হতাম৷
সম্প্রতি বিবিসির একটি সংবাদ পরিক্রমায় শুনেছিলাম, যুক্তরাজ্যের ইস্ট লন্ডন এলাকায় যেখানে উপমহাদেশীয় বংশোদ্ভূত এলাকা সেখানের হাসপাতালগুলোতে জরিপে দেখা গেছে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশের মহিলারা তুলনামূলক কম বয়সে সন্তান ধারনে শারীরিক পরিপক্কতা অর্জন করে এবং তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য অঞ্চলের মহিলাদের তুলনায় কম বয়সেই ফার্টিলিটি শেষ হয়ে যায়৷ সুতরাং বিশেষ ক্ষেত্রে যদি বিয়ের বয়স কমানো হয় তাহলে সেটা মেনে নিতে সমস্যা কি ঠিক তা নারীবাদীরা জানালে ভাল হয়৷
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



