প্রথম আলো, শনিবার ৩০-০৪-২০১১
RAB এর নিষ্ঠুরতার শিকার লিমনের বিরুদ্ধে ‘সাজানো’ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গত বৃহস্পতিবার ঝালকাঠির পুলিশ সুপারকে ফ্যাক্সে পাঠানো এক চিঠিতে এই উদ্বেগের কথা জানান। এই ব্যাপারে মিজানুর রহমান আইনি লড়াই চালানোরও ঘোষণা দিয়েছেন
ফোনে যোগাযোগ করা হলে গতকাল শুক্রবার মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটি আদালতের ব্যাপার, সরকারের এখানে কিছু করার নেই। তাই আমরা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি হবে বিচার বিভাগের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা।’ তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে স্বয়ং RAB এর মহাপরিচালক বললেন, ছেলেটি ঘটনার শিকার। একটি নিরপরাধ কিশোরকে RAB ও পুলিশ মিলে সন্ত্রাসী বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এখন আরও সাজিয়ে-গুছিয়ে, সাক্ষীসাবুদ জোগাড় করে ছেলেটির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এটা বন্ধ হতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যাঁরা বোঝাচ্ছেন, তাঁরা ভুল বোঝাচ্ছেন।’
ঝালকাঠি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে ফ্যাক্সে পাঠানো এক চিঠিতে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলেজছাত্র লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে RAB এর সাজানো মামলায় তড়িঘড়ি করে অভিযোগপত্র দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে লিমনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রসহ মামলার আনুষঙ্গিক কাগজপত্রের অনুলিপি চেয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মো. শামসুদ্দিন গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। আজ এসেছি। মানবাধিকার কমিশনের কোনো ফ্যাক্স এসেছে কি না, তা অফিসে খোঁজ নিতে হবে।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ঝালকাঠি পুলিশ সুপারের কাছে ফ্যাক্স পাঠানোর কথা স্বীকার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, লিমন যাতে ন্যায়বিচার পায়, তা নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কমিশন আইনজীবী নিয়োগ করবে। ঝালকাঠির আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়া না গেলে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাবে কমিশন।
গত ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে বাড়ির পাশে গরু আনতে গেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী লিমন RAB এর নিষ্ঠুরতার শিকার হয়। RAB এর গুলিতে লিমন পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে যায়। এরপর RAB কথিত বন্দুকযুদ্ধের কথা বলে লিমনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে।
কিন্তু লিমনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তার মায়ের দেওয়া মামলা পুলিশ প্রথমে নেয়নি। নানা টালবাহানার পর আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে। RAB এর মামলায় লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়েরকারী তদন্ত কর্মকর্তাকে এই মামলারও তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য পুলিশ সুপার ও আদালতের কাছে আবেদন করবেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




