somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিষয়: ইন্টার্নি ডাক্তারদের কর্মবিরতি ও আন্দোলনের বিবর্তন

০৯ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার আর আমার জমজ ভাই আদরের জন্ম ১৯৯০ সালে। সারাদেশজুড়ে তখন স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামের উত্তাল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও স্বৈরাচারবিরোধী সভা-সমাবেশ চলছেই। দেশের জন্য এ রকম ক্রান্তিলগ্নে গণপ্রতিরোধের ধাক্কায় দূর্বল এরশাদ সরকারের মত ভগ্নস্বাস্থ নিয়ে আমাদের দুজনের জন্ম । জন্মের পরপরই ইন্টেনসিভ কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয় আমাদের। পরে অবশ্য অবস্থার উন্নতি হলে আমাদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দেশের পরিস্থিতির সাথে সাথে আমাদের স্বাস্থ্যও আবার খারাপ হতে থাকে। একসাথে জন্ডিস ও ডায়রিয়ায় আমাদের অবস্থা যখন গুরুতর, ঠিক সেদিনই সামরিক জান্তার পেটোয়া বাহিনীর হাতে নিহত হন ডাক্তার মিলন। সারাদেশ তখন অচল হয়ে পড়লো। রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ-সংঘাত, আমাদের নিয়ে হাসপাতালে পৌছানোই দুষ্কর হয়ে উঠে। কোনো বেবিটেক্সিই রাস্তায় নামতে চায়না। হাতে পায়ে ধরে এক দয়াপরবশ ড্রাইভারকে রাজি করানো যায়। রাস্তায় বিক্ষোভকারিরা ২-৩ বার আটকালেও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরে শর্টকাটের সন্ধান দিয়ে দ্রুত ছেড়ে দেয়। কোনো রকমে হাসপাতালে পৌছেই আরেক বিপদ। এক তরুণ ডাক্তার এসেই অণল বর্ষন করলেন, “আপনারা কেন এসেছেন? জানেন না আমাদের ডক্টর মিলন শহীদ হয়েছেন, আমরা কর্মবিরতি ঘোষনা করেছি। আপনারা চলে যান!” এই বলে উনি চলে যেতে লাগলেন।
আম্মা তাকে পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললেন,“এক্সকিউজ মি, আমার দুটি কথা শুনবেন?”
ডাক্তারটি ফিরে আসলেন, “বলুন।”
“আচ্ছা আজকে স্বৈরাচারের হাত থেকে লাখো মানুষের প্রাণ রক্ষা করার জন্য ডাঃ মিলন জীবণ দিলেন, তার আদর্শ কি আপনাকে এই শিক্ষা দেয় যে তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য দুটি নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ চলে যাক? আর তাই যদি সত্য হয়, তাহলে এরকম চিকিৎসকের চিকিৎসার কোন প্রয়োজন নেই” এবার আব্বা-আম্মা আমাদেরকে নিয়ে প্রস্থানোদ্যত হলেন।
কিছুদুর যেতেই ডাক পড়লো,“প্লিজ আপনারা বাচ্চাদুটোকে নিয়ে ইমার্জেন্সীর দিকে একটু আসবেন?”
আল্লাহর অশেষ কৃপায় সে দফাও বেচে গেলাম।
প্রতিবাদ হবেই তবে অযথাযথ পক্ষকে কষ্ট ও ভোগান্তিতে ফেলে নয়!
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×