আস সালামু আলাইকুম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। করোনা মোকাবেলায় যে সমস্ত পদক্ষেপ আপনি নিয়েছেন তা সঠিক হয়েছে। বাহাত্তর হাজার কোটিরও বেশি টাকার যে প্যাকেজ করোনায় ক্ষতিগ্ৰস্থদের জন্য আপনি ঘোষণা করেছেন তা অত্যন্ত বিজ্ঞচিত, সাহসীক ও সময়োচিত পদক্ষেপ। তবে এ বিশাল অংকের টাকা যথাসময়ে, যথাস্থানে যথাযথভাবে পৌছা দরকার। অবশ্য আপনি এ ব্যাপারে মিসম্যানেজমন্ট এর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে ভালো করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এ অধমের বেয়াদবি মাফ করবেন। হুঁশিয়ারিটা যেন শুধু কাগুজে বাঘ না হয়। বিপদের দিনে বন্ধুর পরিচয়। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রায় আঠারো কোটি মানুষ মহাদূর্যোগগ্ৰস্থ। এই বিপদের সময়ে প্রায় সকলে আপনার দিকে তাকিয়ে আছে । আর মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর ব্যাপারে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন তাও যথার্থ হয়েছে। মুসলমানদের তীর্থভূমি মক্কা মদিনাসহ সৌদি আরবের সকল মসজিদ আগেই লকড্ ডাউন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার মাথার ওপর প্রায় আঠারো কোটি মানুষের বোঝা। এদের ভাল মন্দ আপনারই দেখতে হবে। মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর ব্যাপারে আপনার সিদ্ধান্তের কেউ কেউ সমালোচনা করতে পারে । এতে আপনি চিন্তিত হবেন না। দুনিয়াতে সব সময় ভাল মানুষও থাকে আর ধর্মান্ধ ও নির্বোধ মানুষও থাকে। মহান আল্লাহ পাক যেমন কঠোর তেমন দয়ালুও । আমাদের ইসলামী শরীয়তে নামাজের কাজা, ওমরী কাজাসহ আরো অনেক সুবিধার কথা বলা আছে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে নবীজীকে আল্লাহ পাক বিরূপ পরিস্থিতির কারণে উটের পিঠে নামাজ আদায় করারও আদেশ দিয়েছেন। এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে নামাজ কমিয়ে (কসর) পড়তে বলেছেন। আল্লাহ পাক মানুষের অন্তর্যামী । তিনি মানুষদের উদ্দেশ্যর দিকে খেয়াল রাখেন। শেখ সাদী ( রহঃ) বলেছেন, এক বাদশাহর দরবারে দুজন উজির ছিল। তাদের একজন ছিল হিংসুটে। একদিন বাদশাহ এক কয়দিকে হত্যার আদেশ দিলে কয়দি রাগে বাদশাহকে খুব খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করল। বাদশাহ এক উজির ( যিনি সৎ)কে জিজ্ঞাসা করল, " কয়দি কি বলেছে?" উজির উত্তর দিলেন যে রাজা মহাশয়," কয়দি আপনার খুব প্রশংসা করেছে। " বাদশাহ খুব খুশি হলেন এবং কয়দিকে খালাস করে দিলেন। দ্বিতীয় উজির একটু রাগান্বিত স্বরে বললেন, " রাজ দরবারে কারো মিথ্যা কথা বলা উচিত না। রাজা মহাশয়, "কয়দি আপনাকে খুব বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেছে।" বাদশাহ উত্তর দিলেন, "তোমার সত্য কথা বলার চেয়ে তার মিথ্যা বলা উত্তম। কারণ , তার উদ্দেশ্য সৎ।"(গুঁলিস্তা)
যাই হোক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার উদ্দেশ্য যে সৎ তা মহান আল্লাহ পাক ভালোভাবে দেখতেছেন। আর একটা কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সংসদে ধর্ম সম্পর্কে যে কথাগুলো আপনি বলেছেন তাও অত্যন্ত সাহসীক ও যথার্থ হয়েছে। মুসলমানদের ভিতরে এতদল, এতমত, এতপথ এতভাগ, এতজামাত, এতফেরকা এর মধ্যে কোনটা সঠিক আর কোনটা অঠিক, কে কাফের আর কে মুমিন এটা বিচারের ভার আল্লাহর হাতে। কোন মানুষের হাতে এর বিচারের ক্ষমতা আল্লাহ দেয় নাই। আপনার এ কথা অত্যান্ত সত্য, সঠিক। এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক তৌফিক দিলে পরের চিঠিতে একটু খোলাসা করে লেখার আশা রাখি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অধম গোলাম ক্ষমাপ্রার্থী। আমার লেখায় যদি কোন ভুল ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়ে থাকে তাহলে নিজ থেকে আল্লাহর ওয়াস্তে ক্ষমা করবেন। আজ আর বিরক্ত করছি না। আল্লাহ পাক আপনাকে সুস্থ রাখুন ও হায়াত দারাজ করুন, আমিন
ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন
সেক্রেটারি
বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি আহবায়ক সমিতি
খোলা চিঠি ১
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:১৬