নতুন উপদেষ্টাদের কাছে আমার আকুল আবেদন “ রাষ্ট্র সমাজে নামাজকে বাধ্যতামূলক করা হোক”। নামাজ মানুষের মনোনশীলতাকে পরিচ্ছন্ন করে। নামাজ পড়লে আমাদের কারো কোন ক্ষতিতো হয়ই না বরং নামাজ নৈতিকতা শিক্ষার অন্যতম চাবিকাঠি। যা ইদানিং বৈজ্ঞানিক ভাবে স্বিকৃত। আসুন এ ব্যাপারে আলোচনায়।
অনেকদিন পর আপনাদের মাঝে আসলাম। আসলে ধর্ম নিয়ে গবেষনা করা আমার একটি নেশা। ২০ বছর ধরে আমরা যা করে যাচ্ছি। ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করে আমি কেমন যেনো আনন্দিত হই আর এই আনন্দটাই আমাকে মাঝে মধ্যে আপনাদের সামনে নিয়ে আসে। আজকের বিষয়বস্তু হলো নামাজ বা প্রার্থনা আমরা কেনো করবো? পৃথিবীতে যুগে যুগেই অসংখ্য ধর্ম এসেছে প্রতিটি ধর্ম এই জাতীয় বিষয়বস্তু নিয়ে ব্যস্ত রেখেছে ধার্মীক শ্রেনিদের মাঝে। কিন্তু কেনো প্রাথনা, ধ্যান, নামাজ মানুষের জীবনে এসেছে। ধর্মের মধ্যে দিয়ে মানুষের বাস্তব জীবনে এগুলো প্রবেশ ঘটানো কি অপরিহার্য ছিলো? কেনো মানুষরে যুগে যুগে ধ্যান করেছে। প্রাথনা করেছে। নামাজ পড়েছে? এতি কি মানুষের জীবনের কোন উপকারিত আছে নাকি অযথা মানুষেরা নিজেদের স্বার্থে এগুলো সৃষ্টি করেছে। একটি শ্রেনি তো মাঝে মাঝে বলে এই সকল নিয়ম সৃষ্টি করে একটি শ্রেনির মানুষেরা তাদের নিজেদের পেশা সৃষ্টি করতে বা আয়ের নতুন ক্ষেত্র উদঘাটনে ধর্মীয় নিয়ম কানুন সৃষ্টির মাধ্যমে সমাজে পুরোহিত বা মৗলভী জাতীয় পেশা সৃষ্টির জন্য সমাজে বিভিন্ন নিয়মকানুন বা ধর্মীয় প্রথা সৃষ্টি করেছে। আচ্ছা আমরা না হয় মেনেই নিলাম নাস্তিকদের এই অভিযোগ একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন সৃষ্টি করে। কিন্তু আসলে কি তাই? নামাজ, ধ্যান বা প্রার্থনা কি মনোজগতে কি কোন পরিবর্তন সৃষ্টি করে না? এটা কি শুধুমাত্র ফালতু নাকি এটা মানুষের জন্য কোন প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু ? এই অমিমাংশিত প্রশ্নের উত্তর দিতেই আজ আমার আপনাদের সামনে আসা।
নুরানী চেহারা শব্দটির সাথে হয়তো আপনার পরিচিত আছেন। একসময় আমি এ শব্দটি নিয়ে হাসতাম। ভাবতাম নুরানী চেহারা আবার কি? কিন্তু পরে যখন আমি শব্দটির অর্থ বুঝতে পারলাম তখন অবাকই হইছি কতটা বৈজ্ঞানিক চিন্তা চেতনা ধর্মের মধ্যে আছে। এই নুরানি চেহারা সম্পর্কিত আলোচনায় আমি সর্বপ্রথম আপনাদের সামনে মানবদেহের মস্তিস্ক ও দেহের ইলেক্ট্রোমেগনেটিক ওয়েভ সর্ম্পকিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। ইলেকট্রম্যাগনেটিক ওয়েভ নামের একজাতীয় রশ্নি যা মানুষের মস্তিস্ক এবং মানব দেহ থেকে এমনটাই ইলেট্রম্যাগনেটিক ওয়েভ বের হয়ে থাকে। বর্তমান শতাব্দির প্রথম দিকে লন্ডনের সেন্ট টমাস হাস্পাতালের ডাক্তার ওয়াল্টার কিলনার লক্ষ্য করেন Dicyanim Dye রঞ্জিত কাঁচের ভিতর দিয়ে তাকিয়ে মানুষের দেহের চার পাশে ছয় থেকে আট সেন্টিমিটার পরিমিত স্থান জুড়ে একটি উজ্জ্বল আলোর আভাকে মেঘের মত ভাসতে দেখা যায়। তিরিশের দশকে সোভিয়েত বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার গুরভিচ আবিষ্কার করেন যে,জিবন্ত সবকিছু থেকেই এক ধরনের বিশেষ এক শক্তি আলোর আকারে বের হয় অবশেষে সে বিশেষ আলোটি ধরা দেয় জনৈক সেমিউন দাভিদোভিচ কিরলিন নামক তুখোর এক ইলেকট্রেসিয়ান কতৃক আবিষ্কৃত অদ্ভুত এক ক্যামেরায়,যার নামকরন করা হয় কিরলিন ফটোগ্রাফি। এ ফটোগ্রাফির মাধ্যমে প্রাণি দেহ থেকে বিচ্ছুরিত আলোক রশ্মির ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে।এই আলো সূর্য বা ইলেকট্রিক বাল্বের আলোর ন্যায় সাধারন আলো নয় বরং সেটা অনেক দীপ্ত,চঞ্চল ও বর্ণিল। কিরলিন ফটোগ্রফি আরও দেখিয়েছে যে,মানুষের শরিরে বিভিন্ন গুরত্বপুর্ন বিন্দু রয়েছে সেখান থেকে তুলনামুলক ভাবে অনেক বেশি আলোক রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়, মনে হয় সে সব বিন্দু থেকে যেন আগ্নেয়গিরির অগ্নুতপাত হচ্ছে।কিরলিন তার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে মানব দেহে তেমন ৭০০ টি বিন্দু চিহ্নিত করেন।কিন্তু মজার বিষয় হল আজ থেকে প্রায় ১৫০০-২০০০ বছর পুর্বে চিনের প্রাচিন আকুপাংচার পদ্ধতির চিকিৎসকগন মানব দেহে যে এমন ৭০০টি প্রাণবিন্দু আছে তার মানচিত্র এঁকেছিলেন।কিরলিনের ক্যামেরায় ধারনকৃত ৭০০টি বিন্দুর সাথে সে মানচিত্রের হুবহু মিল আছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মানাবদেহের আলোক রশ্মির ঔজ্জল্যের উপর নির্ভর করে দেহের সামগ্রিক জিবনি শক্তি বা সুস্থতার পরিমাপ।
প্রিয় পাঠক আমি এই ইলেকক্ট্রোমেগনেটিক ওয়েভ এর সাথে নামাজের কি সম্পর্ক সেটি তুলে ধরবো । নামাজ মানবদেহ থেকে নিগর্ত ইলেকট্রোমেগনিক ওয়েভ ফিকোয়েন্সি লেভেলকে সুসংগঠিত করে। মানুষকে নুরানী চেহারাময় করে তোলে। একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় দেখা গেছে অপরাধী শ্রেণী মানুষের ইলেকট্রমেগনিক ওয়েভের ফিকোয়েন্সি লেভেল এলোমেলো এবং ওজ্জল্যতার পরিমান দুবল কিন্তু সৎ প্রকৃতির প্রাথর্না করা মানুষের ইলেকট্রমেগনিক ওয়েভের ফিকোয়েন্সি লেভেল সুসংগঠিত ও তার ওজ্জল্যতা অনেক বেশি। কিছু গবেষনায় দেখা গেছে মানুষের দেহের নিগর্ত অত্যাধিক ইলেকট্রমেগনেটিক ওয়েভ মানুষের মস্তিস্ক সঞ্জাত কিছু মানসিক রোগের সুস্থতার কারন হয়ে ওঠে। যেমন "মিথোম্যানিয়া" এটি সাধারণত একটি মানসিক রোগ। অকারণে মিথ্যা বলার অভ্যাস কে মিথোম্যানিয়া বলা হয়। এই জাতীয় রোগ সহ মানুষের অসংখ্য জিন বাহিত রোগও অত্যাধিক নামাজ বা প্রাথনার কারনে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে।

এবার আমরা আসি কোন কারনে মানবদেহের ওয়েভ ওজ্জল্যতা প্রবৃদ্ধি করে। আধুনিক বিজ্ঞান মানুষের মস্তিস্কের বিভিন্ন গবেষনায় নতুন কিচু চমকপ্রদ তথ্য পাই। অনেকে হয়তো জানেন মানুষের মস্তিস্কে টেম্পেলোর লোব নামে একটি স্থান আছে। অথাৎ মানুষের মস্তিস্কে সেরেব্রামকে ৫টি খণ্ডে বা লোবে বিভক্ত দেখা যায়। যেমন- ফ্রন্টাল লোব , প্যারাইটাল লোব, টেম্পোরাল লোব, অক্সিপিটাল লোব এবং লিম্বিক লোব। একেকটি লোব একেক ধরনের কর্মকান্ড করে থাকে তবে আমি এই আলোচনায় টেম্পোলের লোব নিয়ে কিছু বলি- ইদানিং আধুনিক বিজ্ঞান টেম্পোলের লোব পরীক্ষা করে চমৎকার কিছু তথ্য পাচ্ছেন। ১৯৫০ সালের দিকে উইল্ডার পেনফিল্ড নামের এক নিউরোসার্জন মস্তিস্কে অস্ত্রপ্রচার করার সময় ব্রেনের মধ্যে ইলেকট্রোড ঢুকিয়ে মস্তিস্কের বিভিন্ন অংশকে বৈদ্যুতিকভাবে উদ্দীপ্ত করে রোগীদের কাছে এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইতেন। যখন তিনি কোন রোগীর ক্ষেত্রে ‘টেম্পোরাল লোব-এ ইলেক্ট্রোড ঢুকিয়ে উদ্দীপ্ত করতেন, তাদের অনেকে নানা ধরণের ‘গায়েবী আওয়াজ’ শুনতে পেতেন, যা অনেকেটা ‘দিব্য দর্শনের’ অনুরূপ । তার উথ্থাপিত এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর দীর্ঘদিন গবেষনার শেষে জানা গেলো মস্তিস্কের সাথে মানুষের প্রাথনা বা ইবাদত করার একটি সম্পর্ক রয়েছে। অথাৎ নামাজ বা প্রাথর্ণা মানুষের মস্তিস্কের টেম্পোরাল লোবে প্রভাব সৃষ্টি করে অথাৎ মস্তিস্কে রেড ষ্ফিট বৃদ্ধি করে। প্রাথর্নার পর রেড শিফট বৃদ্ধিতে মানব দেহ থেকে কিছু হরমোন ক্ষয়িত হয়ে মানব দেহকে শীতল অনুভূতী সরবরাহ করে। মানুষের দেহ অভ্যন্তর একটি হিম অনুভূতী ফিল করে। মানুষ একটা ঐশ্বরিক শান্তি অনুভব করে। শুরু হলো গবেষনা! জানা গেলো টেম্পোলের লোবের মাধ্যমে মানুষ স্রষ্টাকে অনুভব করে। তাহলে টেম্পোলোর লোবের সাথে কি ঈশ্বর সংক্রান্ত কোন কানেক্ট আছে? নইলে কেনো এ ঘটনা ঘটে। জানা গেলো মস্তিস্কের এই অংশটাই আমাদেরকে উন্নত প্রাণী হিসেবে নিম্ন প্রাণী থেকে পৃথক করেছে; আর বিশ্বাসের ভিতকে শক্তিশলী করতে পারে। আর এই চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়েই মানুষ অর্জন করেছে মনুষত্ব, জয় করেছে প্রকৃতিকে, উন্নীত হয়েছে শ্রেষ্ট প্রাণীতে, শেষ অবদি নিম্ন প্রাণীর সাথে সৃষ্টি করেছে এক বিশাল ব্যবধান। প্রাথনা করবার পর টেম্পোলোর লোবের একটি স্থান লাল হয়ে যায়। আধুনিক বিজ্ঞান এই স্থানটির নাম দিয়েছে গড স্পট বা ‘স্রষ্টা-বিন্দু’ । অথাৎ মস্তিস্কের টেম্পোরাল লোবই হল স্রষ্টাবিন্দুর বাসস্থান এবং আধ্যাতিকতা অর্জনের পিঠস্থান। এটাই স্রষ্টার সৃষ্ট মানবকুলের সাথে সংযোগের মাধ্যাম। অতএব স্রষ্টা ব্যাতিরেকে স্রষ্টাকে ভাবার মতো সক্ষমতা মানুষ অর্জন করতে পারে না অতএব মানুষের মস্তিস্কে গড স্পট স্রষ্টাই সৃষ্টি করেছেন।
নীচের চিত্রটির দিকে লক্ষ্য করুন প্রাথনার আগের ব্রেনের স্ক্যানে লাল চিহিৃত জায়গা টি নেই কিন্ত পরের প্রার্থনার পর স্ক্যানকৃত চিত্রে লাল চিহিৃত জায়গা টি দেখা যাচ্ছে।

নামাজ বা গভীর প্রার্থনার পরবতূীতে ইলেকট্রো এনসেফালোগ্রাম পরীক্ষায় পরিস্কর ভাবে দেখা গেছে মস্তিস্কের টেম্পোরাল লোবের কম্পাঙ্ক তরঙ্গ পরিবর্তনের মাধামে পরিস্ফূটিত হয়ে উঠে। বর্তমানে FMRI and PET পরীক্ষার দ্বারা দেখা গেছে যে , প্রার্থনা বা ধ্যানের সময় মস্তিস্কের কয়েকটি অংশ শুধু কাজ করে, বাকী অংশগুলো তখন অকেজো থাকে, আর তা হল মস্তিস্কের সম্মুখভাগ যা মানুষের মনযোগ আনয়ন করে। তখন মানুষ যেন আপন মনেই স্রষ্টাকে খুঁজে পায়। স্রষ্টার প্রার্থনার ফলে রাসায়নিক যৌগের ক্ষয়িত হয়ে মস্তিষ্কে সৃষ্টি করে এমন কোনো পরিবেশ, যা চিরবিরাজমান সেই উচ্চতর সত্ত্বার উপলব্ধির জন্য একান্ত অনুকূল? মানুষ যখন মসজীদ, গীর্জায় প্রার্থনায় বসে তখন তার মনে একটা অপরাধবোধ উৎপন্ন হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো নামাজ মানুষের মস্তিস্কের টেম্পোলোর লোবে উজ্জলতা বৃদ্ধি বা রেড শিফট আনয়ন করে কেনো? এটি একটি শারিরীক সিস্টেম। আসলে স্রস্টার কথা ভাবলে ব্রেনের ঐ অংশটি আপনাআপনি রেড শিফট বেড়ে যায়। আর এই কারনেই আধুনিক বিজ্ঞান ব্রেনের ঐ অংশকে গড স্পট বলছে। আর এই মস্তিস্কের রেড শিফট বৃদ্ধির কারনে মানুষের ব্রেন থেকে এবং শরীর নিগর্ত ওয়েভ বর্নিল বা ঔজ্জল্যতা বৃদ্ধি পায়। সত্যিই খুব আশ্চর্যজনক বিষয় হলো মানুষ প্রাথনা করবার পর কেনো তার মস্তিস্কের ওয়েভ পরিবর্তন ঘটে আর কেনোই বা মানুষের ব্রেনের ভিতরেও এর পরিবর্তান হয় । ব্রেইন স্ক্যান করে দেখা গেছে প্রাথনা করবার পর মানুষের ব্রেন ওয়েভ কেমন যেনো সৌন্দর্যময় হয়ে ওঠে। মানুষের মস্তিস্কের অভ্যন্তরের এই গড স্পট বা এই রেডিয়েশন প্রবাহ সত্যিই অবাক বিস্ময় !
এই জন্যাই আধুনিক বিজ্ঞানীদের মধ্যে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন-
Is God sending electromagnetic messages to your brain?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



