ঈদে বাড়ি যেতে হবে। আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করে আছে কি না, জানি না। তবে আমি কাউকে দেখার অপেক্ষায় আছি। মায়ের কাছে যাব, মাকে দেখব। হয়তো বাবার স্মৃতিচিহ্নের পাশে দাঁড়িয়ে ঈদের আনন্দে আমি কাঁদব। হয়তো সেই স্মৃতিচিহ্নকে উদ্দেশ করে বলব, শুধু ভুলে যাওয়া স্মৃতি নিয়েই তো আমি পার করে দিলাম জীবনের ২১টি ঈদ। কি-ই বা হয়েছে তাতে!
মা বারবার ফোন করছেন ঈদে আমার নিজের জন্য কিছু কেনার। কিন্তু আমি? কিনেছি, তবে আমার জন্য নয়। ছোট বোনদের জন্য নতুন জুতা কিনেছি। আমি যখন তাদের মতো ছিলাম, জানি কী রকম অপেক্ষা থাকত বড় কারও কাছ থেকে কিছু পাওয়ার।
এখন আমি ওদের অপেক্ষা বুঝি। তাই ওদের হাসিমুখ কল্পনার চোখে দেখি। ভাবি, ওরা হয়তো ঈদের দিন এই নতুন জুতা পরে অন্য কাউকে দেখিয়ে বলবে, ‘দেখ, দেখ, আমার ভাইয়া এনেছে, ঢাকা থেকে এনেছে।’ কল্পনায় ওদের উত্তেজনায় চকচক করা চোখ দেখি। নতুন জুতাগুলো হাতে নিয়ে দেখি, পছন্দ হবে তো! মায়ের কথা ভাবছি। তিনি চান, তাঁর ছেলে যেন শুধু তাঁর কোলে ফিরে আসে। জানি, মা ঈদের জন্য কিছু না-কিছু হয়তো কিনেছেন। তবু ছেলের হাত থেকে পাওয়া উপহার তাঁকে যে কী আনন্দ দেবে, তাও আমার অজানা নয়। তাই মায়ের জন্য একটা শাড়ি কিনব ভাবছি। নাহ্। ভাবাভাবির কোনো সময় নেই, কিনতেই হবে। আচ্ছা, শাড়ির রংটা কেমন হবে? মায়ের শ্যামবর্ণ শরীরের সঙ্গে কোন শাড়িটা মানাবে? ভাবতে ভাবতে গুনগুনিয়ে গাই, ‘পথের ক্লান্তি ভুলে, স্নেহভরা কোলে তব/বল মা কবে শীতল হব, কতদূর আর কতদূর...।’ বেসুরো গলায় গাওয়া গান হারায় ঢেউয়ে। কিন্তু জানি, আমার জন্যই অপেক্ষা করে আছে আমারই মা। মা, আসছি আমি

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




