বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আমরা অনেক নাটক, কাণ্ডকারখানা আর চমক দেখেছি। কিন্তু এবার যা ঘটলো, তা যেন চাঁদাবাজির ইতিহাসে এক বিরল এবং হাস্যকর অধ্যায় হয়ে থাকবে। কিছু বাচ্চা পোলাপান, যারা নিজেদের "সমন্বয়ক" বলে দাবি করে, তারা সাবেক একজন আওয়ামী লীগ এমপির জামাইর বাসায় গিয়ে, আরামদায়ক সোফায় বসে "জামাই আদরে" চাঁদা নিচ্ছে এই দৃশ্যটা কল্পনাও করতে কষ্ট হয়!
প্রশ্ন জাগে চাঁদাবাজি বাংলাদেশে এতটাই সহজ হয়ে গেছে নাকি?
এই তথাকথিত "সমন্বয়কেরা" এতটাই বোকা, না-বোঝা, না-ঘষা তরুণ, যে তারা সরাসরি একজন আওয়ামী পরিবারের বাসায় গিয়ে চাঁদা তুলতে সাহস দেখায়! একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ কিংবা বড় মাপের মাফিয়া গডফাদারও যেখানে ভয়ে উলটো রাস্তা ধরে পালায়, সেখানে এরা নির্লজ্জ নির্ভরতায় গিয়ে সোফায় গা এলিয়ে চা খেয়ে টাকা নিচ্ছে এটা রাজনীতি না, রাজনৈতিক কমেডি।
বাস্তবতা হলো এরা নিজেরা কিছু না, এরা কোনো এক অদৃশ্য হাতের দাবার ঘুঁটি মাত্র। পেছন থেকে কেউ একজন খুবই চাতুর্যের সঙ্গে গেমটা খেলছে। উদ্দেশ্য? স্পষ্ট NCP কে জনগণের চোখে হেয় করা, আর জুলাই আন্দোলনকে কলঙ্কিত করা। আন্দোলনের নৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করার জন্য, জনগণের মাঝে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া এইটাই আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক নাট্যদলের মাস্টারপ্ল্যান।
এই পুরো নাটকটাই আসলে একটা রাজনৈতিক থ্রিলার। যখন মাঠে নামার সাহস নেই, তখন চরিত্রহননই হচ্ছে তাদের শেষ অস্ত্র। আর এই নাটকের মূল অভিনেতারা? সেই তথাকথিত সমন্বয়ক নামধারী রাজনৈতিক ল্যাবরেটরির ইঁদুরগুলো।
এই তরুণ সমন্বয়ক দলটি এমন এক বাহিনী, যাদের দেখে মনে হয়, রাজনীতি শেখা শুরু করেছে ফেসবুকের কমেন্ট বক্স থেকে, আর সিদ্ধান্ত নেয় ইউটিউব শর্টস দেখে! চোখে শুধুই ‘ভাই ভাই’ ভাব, আর কানে ‘হ্যাঁ ভাই, আপনি যা বলবেন’ টাইপ আজ্ঞাবহ মনোভাব। কোনো বিশ্লেষণ নেই, দূরদর্শিতা তো দূরের কথা আত্মসম্মানটুকুও বাসায় ঢোকার পথে জামানত রেখে এসেছে।
এই পোলাপানরা বুঝতে পারছে না আওয়ামী লীগের ড্রয়িংরুম মানে রাজনৈতিক মাইনফিল্ড। সেখানে ঢুকে চাঁদা তোলা মানে নিজের হাতে নিজের কবর খোঁড়া। তারা ভাবে তারা বড় রাজনীতির খেলোয়াড় হয়ে গেছে, অথচ বাস্তবে তারা রাজনীতির মঞ্চে মঞ্চস্থ পুতুল ছাড়া কিছুই না।
এই ব্যর্থ নাটক দিয়ে যদি কেউ ভাবে আন্দোলনের স্রোত থামবে তবে সে হয় নিজের চালে আটকে পড়া গুটি, নয়তো আত্মবিশ্বাসে অন্ধ রাজনীতির অন্ধপথিক।
কিন্তু সত্যি হলো আজকের জনগণ বোকার রাজ্যে নেই। মানুষ এখন বুঝে কারা চাল চালাচ্ছে আর কারা ঘুঁটি। নাটকের পর্দা যতই চকচকে হোক, চরিত্র যদি ফাঁকা হয় তাহলে দর্শক আর বিশ্বাস করে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ৩:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




