অনেকদিন পর বাল্য বন্ধুর সাথে দেখা হল। প্রায় পুরো সময়টি তার সাথে ফেলে আসা নানা বিষয় নিয়ে কথা হল। ঘন্টাখানেকের আলোচনার সারাংশ দারুন দাড়িয়েছিল।
কলেজ লাইফে একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল। পরিচয়ের সূত্রথেকে বন্ধুত্ব এবং এক সময় প্রেম। গল্পের শুরু আর শেষ যদিও প্রচলিত নিয়মেই প্রেম আর
বিচ্ছেদ । কিন্তু এই কাহিনীটা একটু ভিন্ন মনে হল।
মেয়েটার সাথে তার প্রেম ছিল চার বছর । প্রেম চলাকালীন সময়ে সে জানতে পারে মেয়েটির সর্বমোট চলমান প্রেম আছে ছয়টি। চলমান হিসাবকে বিশ্লেষণ করলে আগের হিসাব পাওয়াটা একটু কঠিন তারপরও আনুমানিক একটা ধারণা রাখা যায়। মেয়েটির এই নোংরামি অবস্থা জেনে ও সে মেয়েটিকে পাগলের মত ভালবাসত। ধারণাপূষণ করত একদিন মেয়েটি তার ভুল বুঝতে পারবে।
প্রেমের এক বছরের মাথায় মেয়েটি ফেলে আসা নোংরামি সকল কর্মকান্ড খোলাসাভাবে ছেলেটিকে বলল। ছেলেটি এতটুকুও বিচলিত না হয়ে স্বাভাবিক ভাবে বলল, কোন ব্যাপার না, সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি সবকিছু্ই জানি , তাই চিন্তার কোন কারণ নাই , আমাদের ভালবাসা শতভাগ নিশ্চিত ভাবে সামনে এগিয়ে নেয়া যায়। সেদিন উভয়েই অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছিল।
প্রেমের পাঁচ বছরের মাথায় মেয়েটি অন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করল। প্রচলিত নিয়মঅনুযায়ী ছেলেটি ভেঙ্গে পড়ার কথাছিল কিন্তু সে তা করল না।
মেয়েটির বিয়ের প্রায় অনেক কাজই সে নিজে দাড়িয়ে করেছিল। বরের গাড়ীতে মেয়েটিকে তুলেদিয়ে সে অল্পএক ফোঁটা চোঁখের ঝল ফেলেছিল
আর কল্পনায় বলছিল, সে অন্তত শান্তিতে থাকতে পারবে।
কিছুটা রাগান্বিত হয়ে বলেছিলাম আসলি কি সত্যি তুই মেয়েটিকে ভালবাসতে। আর সিনেমাতে তো দেখেছি শেষ পর্যন্ত ভালবাসার মানুষের সাথে মিল হয়।
কিন্তু তর বেলায় তুই নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়েটির বিয়ে দিলে। তার মুখে মিষ্টি একটা হাসি ফুটিয়ে বলল বাদ দে এসব। প্রায় জোর করেই পুরো কাহিনীটি শুনলাম।
বিয়ের কিছুদিন পূর্বে মেয়েটি তার কাছে আসল। প্রায় অর্ধদিন দুজনে একসাথে ঘুরল। মেয়েটির বাবা অসুস্থ, পরিবারের বড় হওয়ায় তার গুরু দায়িত্ব এই সময়ে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করা। এই সময়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে বাবাকে চিকিৎসা করানো তার গুরুত্বপূর্ণ কতর্ব্যের একটি। সিলেটের লোক বলে সে সময়ে মেয়েটির বিয়ের প্রস্তাব আসল লন্ডন প্রবাসী এক ছেলের সাথে। সবাই এ নিয়ে মহা খুশি, খুশির সবচেয়ে বড় কারণ ছেলেটি মেয়েটির অসুস্থ বাবার চিকিৎসার সবকয়টি টাকা দিয়েছিল। এই অবস্থা অনুযায়ী চিন্তা করছিলাম মেয়েটি মনে হয় এর জন্যই বিয়েতে রাজি হয়েছিল।
পরে শুনলাম কাহিনী এই পর্যন্ত না, এই বিয়েতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে ছেলিটি। প্রেমিকের আম্মার অনেক জটিল একটা রোগ হয়েছিল সে সময়ে।
মেয়েটি এসে প্রেমিকের হাতে চিকিৎসার মোটা একটা অংক তুলেদিয়ে বলল , তোমার আম্মাকে কালই চিকিৎসার ব্যবস্থা করাব। এর বাইরেও যদি টাকার প্রয়োজন হয় আমি ব্যবস্থা করে দিব। টাকার মূল উৎস এবং ভবিষ্যৎ আর বর্তমান কিছু চিন্তা করে উভয়েই পরবর্তী এই সিদ্ধান্তটি মেনে নিয়েছিল।
(অনেকদিন ধরে লেখা হয়না বলেই হয়তবা বানানভূল এবং গল্পের ছন্দ ঠিক না থাকতে পারে, এ জন্য দু:খ প্রকাশ ছাড়া আমার আর তেমন কিছু করার নাই।)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩০