নিঃসঙ্গতা কী তুমি জানো?
নিঃসঙ্গতা হল তোমার চিলেকোঠার
ছাদে আটকে থাকা ঘুড়ি!
নিঃসঙ্গতা হল তোমার বাড়ীর কার্নিশে
বসে থাকা একাকী কবুতর!
এই ইট কঙ্ক্রিটের বস্তিতে সবাই নিঃসঙ্গ
তুমি, আমি-পাশের বাসার মেয়েটি,
ঐ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধ
রিকশাওয়ালা-
ঐ হাজার বছরের কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে
আছে যে মহীরূহ-সেটিও কি জানে তার চারপাশে
গড়ে ওঠা শহরের মানুষের অবচেতন মনের দুঃখ
পাশের বাসার সদাহাস্যোজ্জ্বল রফিক সাহেবের
বিশ্বজয়ের হাসির মাঝেও যে প্রতিনিয়ত জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়ার দুঃখ
লুকিয়ে আছে-কে জানে?
আমাদের এলাকার সেই বিএ পাশ করা ছেলেটি, যে এখনো
দেখা হলে সম্বর্ধনা জানায়-তার কথা কি জানো তুমি?
দুই পয়সার কেরানীর চাকরিটা আর নেই তার।
টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেল তার জননী-
নিঃসঙ্গতা কী তুমি জানো?
নিঃসঙ্গতা হল ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার চোখে
ছেলে হারানোর হাহাকার!
প্রতিদিন তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে যে বংশীবাদক
বাশীর সুর তুলে চলে যায়-তার বাশীর সুরের মাঝে
কিছু না পাওয়ার বেদনা কি তুমি দেখতে পাও?
৭১’এ সেই স্বামী সন্তান হারা রাশেদা
এখন শাহবাগ মোড়ে ভিক্ষা করে-
কতশত গাড়ীর কাঁচে ধরনা দিতে দিতে
হঠাৎ করেই সামনে পরে যায়-সেই ঘাতক দালালের গাড়ী
যেখানে সগর্বে স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ে!
তুমি কি তখনো রাশেদার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ
দেখতে পাওনা?
নিঃসঙ্গতা কী তুমি জানো?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




