somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি মুড়িঘন্ট মার্কা মুভি পোস্ট :)

১৬ ই মে, ২০১০ রাত ২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মুড়িঘন্ট এ কারণেই যে, এই পোস্টের মুভিগুলো কোনও একটা নির্দিষ্ট জেনারে ফেলা যাবে না। তারচেয়েও বড় কথা হলো, এই সবগুলো মুভিই সবাই অনেক আগেই দেখে ফেলেছে। আমিও অনেক আগেই দেখেছি, লেখার কথা মাথায় আসেনি, আর এলেও লেখা হয়নি। পাঠকেরা মুভিগুলোতে বা রিভিউয়ে বিশেষ কোনও নতুনত্ব না-ও পেতে পারেন, সেক্ষেত্রে আমি খুবই আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবো। (আসলে লেখার মত কিছু খুঁজে না পেলেই আমার খালি মুভি আর গান নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করে হেঁহেঁহেঁ) B-)

A Beautiful Mind



অসম্ভব অনুভূতিময় একটা ছবি। শুধু অনুভূতি ছাড়াও এই মুভিতে আরেকটা জিনিস পাওয়া যাবে, তা হলো, কাহানি মে টুইস্ট অর্থাৎ মুভির ঠিক ক্লাইম্যাক্স অংশে এসে গল্পটা যেভাবে মোড় নেয়... আসলেই বিউটিফুল! শুরুর দিকে দেখতে গেলে মনে হবে নেহাত একজন প্রতিভাধর গণিতবিদের গল্প, তার অঙ্ক, তার প্রেম, সিম্পল সাদাসিধে একটা স্টোরি... পরে গিয়ে দেখা যায় আরে, এ তো পুরাই উলটা কাহিনী! এনিওয়ে... খুব চমৎকার একটা ছবি। অনেকেই নিশ্চয়ই দেখেছেন, আর যারা এখনও না দেখার দলে আছেন, অবশ্যই ট্রাই করুন, ভালো লাগার কথা। এই মুভি দেখলে বড্ড মায়া হয় রাসেল ক্রো লোকটার জন্য (গ্রেট অ্যাক্টর, আই মাস্ট সে!), আর জেনিফার কনেলি তো সিম্পলি ওয়াও!

Download A Beautiful Mind

Revolutionary Road



শালার মুভি একখান! (এর চেয়ে ভদ্রস্থ বাংলা আর মুখে এলো না) কি যে অদ্ভুত লাগে ছবিটা দেখলে! এই ছবির প্রতিটা দৃশ্য আমি দেখেছি আর খালি একটা কথাই ভেবেছি, সামনে সুখী হবার এত অজস্র উপকরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তবু আরও সুখের পেছনে নিরন্তর ছুটতে গিয়ে মানুষগুলোর কি বেহাল দশা! মুভির লাস্টের দিকে গিয়ে রীতিমত মনটা খারাপ হয়, শুধু মনে হয় এরকম তো হবার কথা ছিলো না। মুভির (মুভির না বলে বোধহয় উপন্যাসের বলাই ভালো, যেহেতু এটা একটা উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ছবি) কিছু অংশ খানিকটা রিডিকুলাস লাগতে পারে। এটা হচ্ছে ১৯৫০ সালে নিউইয়র্কের সাবআর্বান এলাকায় বসবাসরত এক দম্পতির কাহিনী যেখানে স্ত্রীটি মারাত্মক উচ্চাভিলাষী এবং ঝগড়াটে (কেট একেকটা দৃশ্যে এমন চিৎকার করে ঝগড়া করে যে দেখার সময় আমাকে কান থেকে হেডফোন খুলে ফেলতে হয়েছিলো!)। :| শেষের দিকে গিয়ে আসলে ছবিটা অনেক ইমোশনাল হয়ে যায়। বিশেষ করে দু’জনের এক টেবিলে বসে মৃদু হাসি ঠাট্টা আর সংসারের গল্প করতে করতে নাশ্তা করার দৃশ্যটা আমাকে ভাবিয়েছে। শুধু মনে হয়েছে, ওরা তো চাইলেই সুখী হতে পারতো, শুধু যদি ঐ উচ্চাভিলাষ আর পাগলামিটা যদি একটু ছাড়তো!

ও হ্যাঁ, মুভিটার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খুব সুন্দর।

Download Revolutionary Road

The Boy in Striped Pyajamas



এই মুভিটা নিয়ে ব্লগে অলরেডি অনেক লেখা হয়ে গেছে, অনেক ব্লগাররা শুধু এই একটা ছবি নিয়েই পুরো একটা পোস্ট দিয়েছেন, কাজেই আমি আর বেশি কিছু না বলি। এটাও অনেক মন খারাপ করা মুভি। সবই খুব চমৎকার, শুধু শেষ দৃশ্যে রোদের মধ্যে বৃষ্টি হওয়াটা দেখতে একটু অদ্ভুত লাগে (আমি আসলে বৃষ্টির দৃশ্যগুলোর চিত্রায়ণ/দৃশ্যায়ন নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে, আমার ভয়ঙ্কর প্রিয় একটা বৃষ্টির দৃশ্য হচ্ছে দ্য নোটবুক মুভিতে যে বৃষ্টির দৃশ্যটা আছে ওটা। একেবারে আমাদের বাংলাদেশের বৃষ্টির মত লাগে দেখতে)। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঊপরে এখন পর্যন্ত যতগুলো মুভি দেখেছি তার অনেকগুলোই খুব ভালো, আর সেরকম কয়েকটা মুভির মধ্যে এই নামটিও পড়ে বৈকি। ব্রুনো আর শ্মুয়েলের বন্ধুত্ব আর করুণ মৃত্যু আর ব্রুনোর মায়ের সন্তান হারানোর আহাজারি... এটা আসলে মুভিটা না দেখলে বোঝা যাবে না।

২য় বিশ্বযুদ্ধের উপর আরেকটা মুভি দেখেছি সম্প্রতি তা হলো The Inglorious Basterds, এটাও খুবই ভালো মুভি, আমার মত ওয়ার জেনারের মুভির ভক্তরা অবশ্যই দেখতে পারেন। আর এটা নিয়ে ব্লগার ছন্নছাড়ার পেন্সিলের দারুণ একটা পোস্ট আছে , সেটাও পড়তে পারেন।

Download The boy in striped pyajamas

Bitter Moon



এটা হচ্ছে একটা রোমান্টিক জেনারভুক্ত রোমান্টিক তথা ইরোটিক মুভি। দ্য পিয়ানিস্ট দেখার পর থেকেই আমি পোলানস্কি সাহেবের মহাভক্ত, কাজেই এই মুভিটার কাছে আমার প্রত্যাশা ছিলো অনেক বেশি, কিন্তু সেটা ঐভাবে মেটেনি (হয়তো এটা আমার দোষ, আমিই বুঝিনি ছবিটা)। আসলে এমনিতে মুভিটা ভালো শুধু শেষের দিকে এসে (বিশেষতঃ ফিনিশিংটা) একটু 'খাবো না মাথায় দেবো' টাইপ লাগে আর কি। তবে এখানে কাহিনীর যাকে বলে 'ডেপিকশন' সেটা সত্যিই খুব চমৎকার, কিভাবে একজন মানুষ পাগলের মত একটি মেয়েকে ভালোবাসে, তাকে সর্বস্ব দিয়ে চায় কিন্তু একবার যখন পুরোপুরি পেয়ে যায় তখন আর তার কদর করে না, সেটা খুব সুন্দর করে তুলে ধরা হয়েছে, ঠিক যেন বাস্তবের মত করে। চরিত্রগুলোর অভিনয়ও দারুণ, বিশেষ করে হিউ গ্রান্টের 'ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাইনে' মার্কা চরিত্রে অ্যাক্টিং তো সুপার্ব।

Download Bitter Moon

Stardust



পুরাই ফিকশন গোত্রীয় ছবি। ফিকশনের চেয়েও আমি বলবো এটা আসলে রূপকথার গল্প নিয়ে তৈরী। তারার দেশের একটি মেয়ের কাহিনী, কিভাবে সে কক্ষচ্যুত হয়ে পৃথিবীতে এসে পড়ে আর তারপর নায়ক ত্রিস্তান তাকে উদ্ধার করে, শেষে কিভাবে তারা আর সবাইকে হারিয়ে উভয়েই তারার রাজ্যের অধিপতি হয় এই নিয়ে ছবি। নেহাত শিশুরাও এই ছবি দেখলে পছন্দ করবে। আসলে এই ধরনের মুভিতে গ্রাফিক্সের কাজ ভালো না হলে ঠিক জমে না, আর এই ছবিতে গ্রাফিক্সের কাজ সত্যিই খুব ভালো কাজেই কমবেশি সবারই ভালো লাগার কথা। নায়িকা চরিত্রে অবশ্য ক্লেয়ার ডেনসকে খুবই থুত্থুরে বুড়ির মত দেখায় (নায়কের পাশে তাকে নায়কের খালাম্মার মত দেখিয়েছে) :-/ তবে ডাইনী হিসেবে মিশেল ফিফারকে আবার দারুণ মানিয়ে গেছে। আমার এই মুভিটা স্পেশালি ভালো লেগেছে কারণ খুবই কাকতালীয়ভাবে আমি এই ছবিটা প্রথমেই দেখেছিলাম সিনেপ্লেক্সে। এমনিতেই লার্জ স্ক্রীনে মুভি দেখার মজাই আলাদা, আর এই জাতীয় ছবি যেগুলোতে ক্যামেরার + গ্রাফিক্স সফটওয়্যারের কাজ খুব বেশি সেগুলো লার্জ স্ক্রীনে দেখার তো কোনও তুলনাই হয় না। পুরো ফ্যামিলি নিয়ে দেখতে চাইলে অবশ্যই দেখুন নো প্রবলেমো, এক্কেবারে টানটান উত্তেজনাময় শিশুতোষ রূপকথা (যেখানে কোনোই অ্যাডাল্ট এলিমেন্ট নেই) আর সেই রূপকথার পারফেক্ট দৃশ্যায়ন। (এই ছবিটা মাঝেমাঝেই সিনেপ্লেক্সে আসে, সেইসময় একটা চান্স নিয়ে দেখতে পারেন, পস্তাবেন না)।

Download Stardust

************************

বহুত প্যাঁচাল পাড়লাম, মুখ ব্যথা করতেসে। এবার আপনারা শুরু করেন, আমি শুনি। :)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৪৭
৯১টি মন্তব্য ৮৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×