somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিন্দু ধর্মকে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার সাথে তুলনা | সেক্যুলার ভারত

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত বছর ভারতের তামিলনাড়ুর মন্ত্রী 'উদয়নিধি স্ট্যালিন' সানাতন বিলুপ্তি কনফারেন্সের বক্তব্যে বলেছিলেন- “সনাতন ধর্ম সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্যের বিরোধী। কিছু জিনিস রয়েছে, যার বিরোধিতা নয়, সম্পূর্ণ নির্মূল করা উচিত। আমরা ডেঙ্গু, মশা ম্যালেরিয়া বা করোনার বিরোধিতা করতে পারি না। আমাদের এগুলি দূর করতে হয়। একইভাবে সনাতন ধর্মকেও মুছে ফেলা উচিত।” বক্তব্যটি পাওয়া যাবে এখানে।

উক্ত বক্তব্যের জেরে সারা ভারতের হিন্দু জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠলেও তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়নি বা হত্যা করে গাছেও ঝুলিয়ে রাখা হয়নি, তিনি এখনো বহাল তবিয়াতে ভারতে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। কোন মুসলিম দেশের রাজনীতিবিদকে ইসলামের বিরুদ্ধে এভাবে প্রাকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার কথা ভাবা যায়?

২০১৪ সালে আমির খানের পিকে মুভিতে বিভিন্ন ধর্মের ব্যাপক সমালোচনা করা হয় বিশেষ করে হিন্দু ধর্মের উপর সরাসরি আঘাত হানা হয়েছে, ব্যাপক সমালোচনা সত্ব্যেও মুভিটি রিলিজ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি ভারতের হিন্দু ধর্মালম্বীরা। ভারত তথা বিশ্বের সেক্যুলার সমাজে মুভিটি ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলো। কোন মুসলিম দেশে ইসলামের বিরুদ্ধে এ ধরণের একটি মুভি তৈরী করলে রীতিমত কেয়ামত ঘটিয়ে ফেলা হবে।



এদিকে ভারতের সবচেয়ে বড় তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডু এবং প্রসাদে গরুর চর্বি মিশিয়ে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ এসেছে ভারতের আরেক রাজনীতিবীদের বিরুদ্ধে। বিস্তারিত দেখুন ভিডিওতে।




সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হচ্ছে ভারতের সেক্যুলার সমাজ হিন্দুত্ববাদীদের স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া শুরু করেছে- এ ব্যাপারে কোলকাতার জনপ্রিয় শিক্ষক সুজিত দেবনাথ দুঃখ ভারাক্রান্ত হ্রদয়ে বলেন- "আজ হিন্দু মন্দিরে গেলে তাকে চর্বি মেশানো প্রসাদ দেওয়া হচ্ছে। বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা হিন্দু ধর্মকে "ডেঙ্গু" এবং "ম্যালেরিয়া" বলে অপমান করছেন। ভগবান রামকে কাল্পনিক চরিত্র বলে রামকে অসম্মান করা হচ্ছে। এক নেতা তো এমনও হুমকি দিয়ে রেখেছে যে উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় এলে তারা রাম মন্দিরে বুলডোজার চালাবে । আজকের দিনে একজন হিন্দু ভগবান শিবের লিঙ্গে কনডম পরিয়ে ছবি পোস্ট করে! B:-) এরা আসলে ধর্ম বিরোধী নয়, কই অন্যান্য ধর্ম নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই? হিন্দু ধর্ম নিয়েই তাদের যত সমস্যা, অন্য ধর্মের পালনীয় দিনে এরা ঠিকই শুভেচ্ছা বার্তা পোস্ট করেন, এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়ে যে তারা মূলত ভারত মাতার শত্রু, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত্রু। এত কিছুর পরেও কি, সনাতনী হিন্দু জনগণ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকবে?"

অন্য এক ভিডিওতে তিনি দাবী করেন- "সানাতনী হিন্দু ধর্মের মত এমন শান্তিপূর্ণ ধর্ম পৃথিবীতে আর একটিও নেই, এই ধর্মের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা আসলে মানুষ নামের কলঙ্ক।"

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন- ভারতে হিন্দুরা বিষম্যের শিকার তারা আজ কোনঠাসা, বিশাল ভারত আজ মুসলিম, খ্রিস্ট্রান এবং বৌদ্ধদের দ্বারা দখল হতে হতে ছোট হয়ে আসছে। তিনি সনাতনী হিন্দু জনগোষ্ঠীকে এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বলেন। বিস্তারিত থাকছে ভিডিওতে।



জনপ্রিয় এই শিক্ষক সুজিত দেবনাথের বক্তব্যে স্পষ্ট বুঝা যায় যে ভারতে প্রায় সারাবছরই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দল, ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা ভাবে হিন্দু ধর্মের সমালোচনা করা হয় আর এসবই প্রমাণ করে ভারত সেক্যুলারিজমের পথেই হাঁটছে। ভারত নিজেকে সেক্যুলার রাষ্ট্র দাবী করলেও তারা এখনো পুরোপুরি সেক্যুলার রাষ্ট্র হয়ে উঠেনি, বিশাল ভারতের রাজনীতি এবং সমাজ ব্যবস্থা এখনো হিন্দুত্ব মতাদর্শের প্রভাব মুক্ত হতে পারেনি।

ভারতের সমাজ ব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি হিন্দুত্ব মতাদর্শের প্রভাব মুক্ত না হতে পারলেও গত ৩০ বছর ধরে ভারতে সেক্যুলার সমাজের উত্থান ঘটেছে, বর্তামানে ভারতের প্রায় ৩০ শতাংশ জনগণ সেক্যুলারিজম এ বিশ্বাসী এই সেক্যুলার সমাজই হবে আগামী ভারতের ভবিষ্যত।

বলে রাখা প্রয়োজন যে- সেক্যুলার সমাজ মানেই ধর্মহীন সমাজ নয় আবার ধর্ম ভিত্তিক সমাজও নয়। সেক্যুলার সমাজ মানে ধর্মের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা যেখানে ধর্ম পালনে যেমন বাধা নেই ঠিক তেমনই ধর্মের সমালোচনাতেও কোন বাঁধা নেই, সেক্যুলারিজম মূলত মানুষের স্বাধীন চিন্তা চেতনা এবং যুক্তি ভিত্তিক নীতি নৈতিকতায় বিশ্বাসী। কল্পভিত্তিক নয় বরং তারা বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আগ্রহী যেখানে থাকবে না কোন দূর্ণীতি থাকবে না কোন বৈষম্য হবে না কোন হানাহানি।

বাই দ্যা ওয়ে, বিশ্ব যেখানে সেক্যুলারিজমের পথে হাঁঠছে সেখানে আমাদের বাংলাদেশের খবর কি? এইডার কি কোন গাতি করা গেলো? বাংলাদেশের আশেপাশের প্রায় সবগুলো দেশই যেখানে সেক্যুলাজিমের দিকে ধ্বাবিত হচ্ছে সেখানে আমরা কোন দিকে ধ্বাবিত হচ্ছি?

ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×