somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জাদিদ
তুমি আমার রাতবন্দিনী। ধূসর স্বপ্নের অমসৃণ সুউচ্চ দেয়াল তুলে তোমাকে আমি বন্দী করেছি আমার প্রিয় কালোর রাজত্বে। ঘুটঘুটে কালোর এই রাজত্বে কোন আলো নেই। তোমার চোখ থেকে বের হওয়া তীব্র আলো, আমার হৃদয়ে প্রতিফলিত হয়ে সৃষ্টি করে এক অপার্থিব জ্যোৎস্না।

রক্ষণশীল মনোভাব হলেই কি তা নারী বিদ্বেষী আচরন হবে?

১৯ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একবার এক সৌদি ভদ্রলোক আমার বাসায় বেড়াতে আসলেন। আব্বাকে সালাম দেয়ার পর তাঁর কপালে চুমো দিতে চাইলেন। আরবের সংস্কৃতি অনুসারে বয়স্কদের এইভাবেই নাকি শ্রদ্ধা দেখানো হয়। কিন্তু আব্বা তো আর এই সংস্কৃতি সম্পর্কে জানেন না। ফলে দেখা গেলো ঐ সৌদি ভদ্রলোক আব্বার কপালে চুমো খাবার জন্য তার মাথা ধরে যতই কাছে আনার চেষ্টা করছেন, আব্বা ততই মাথাকে পিছনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আমার দম ফেটে হাসি আসছিলো। শেষমেষ তিনি কিছুটা বিব্রত হয়েই সম্ভবত আমাকে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় জিজ্ঞেস করে বসলেন, ইরে! হ্যাতে এইক্কা অ্যাঁর মাথা দরি টানেরই কিল্লাই? মাতাত কিয়া?
অর্থ, এ্যাই! উনি এমনভাবে আমার মাথা ধরে টানছেন কেন? মাথায় কি হইছে?
যাইহোক পরবর্তীতে বুঝিয়ে বলার পর সবাই মানে আমার আম্মাও খুশি মনে রাজি হলেন।

এই গল্পটা এই কারনে বললাম, পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের কিছু নিজস্ব সংস্কৃতি ও সামাজিক মুল্যবোধ আছে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনধারা ও আচরনে উক্ত সংস্কৃতি ও মুল্যবোধের প্রভাব থাকে। বাংলাদেশেরও একটি নিজস্ব সমাজ ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও মুল্যবোধ আছে। এই অঞ্চলের মানুষজন তুলনামুলক রক্ষনশীল সমাজ ব্যবস্থায় বড় হয়েছে। সম্প্রতি লক্ষ্য করেছি রক্ষনশীল মানসিকতার মানুষদেরকে নারী বিদ্বেষী হিসাবে পরিচয় করানোর একটি চেষ্টা হচ্ছে। রক্ষনশীল হলেই কেউ নারী বিদ্বেষী হবে – যদি বিষয়টিকে কেউ এইভাবে সরল সমীকরনে দাঁড় করায় তাহলে তা এক ধরনের উগ্রবাদ ছাড়া অন্য কিছু নয়। যে কোন উগ্রবাদ সমর্থনযোগ্য নয়।


আমাদের সমাজের ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের পোষাকে কিছুটা রক্ষনশীলতার ছাপ আছে। পুরুষরা লুঙ্গি, পায়জামা, প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি বা গেঞ্জি পড়েন আর নারীরা শাড়ী, সেলোয়ার কামিজ বা অন্য যাই কিছু পড়ুক না কেন, সেখানে সুপ্তভাবে হলেও তুলনামুলক রক্ষনশীলতার একটি ব্যাপার থাকে। এই দেশের পোষাক সংস্কৃতিতে শরীরের কিছু অংশ ঢেকে রাখার ব্যাপারে একটু সর্তকতা অবলম্বন করা হয়। যেমন তৃনমুল পর্যায়ে ছেলেরা হাফপ্যান্ট পড়ে না, মেয়েরা ওড়না ছাড়া সালোয়ার কামিজ পড়ে না, শাড়ি পড়লে অনেকেই মাথায় ঘোমটা দেন। এই সকল পোষাক বা পোষাকের রক্ষনশীল মনস্তাত্ত্বিকআচরন সবই গ্রহনযোগ্য এবং আমাদের সমাজেরই অংশ। ফলে পোষাকের ক্ষেত্রে রক্ষনশীলতা পছন্দ করলেই কেউ নারী বিদ্বেষী হবেন – এটা গ্রহনযোগ্য কোন যুক্তি হতে পারে না।


পোষাক অশালীন বা শালীন হয় কি না আমার জানা নেই। শালীন অশালীনের সংঙ্গা ব্যক্তিগত রুচি, শিক্ষা ও মানসিকতার উপর নির্ভর করে। কেউ যদি মনে করেন, বিপরীত লিঙ্গের মাঝে উদ্দীপনা সৃষ্টির জন্য পোষাক পড়বেন বা আচরন করবেন সেটা তার নিজস্ব স্বাধীনতা। কিন্তু কারো ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা রুচিকে সার্বিকভাবে নারী বা পুরুষের স্বাধীনতা হিসাবে দেখার সুযোগ নেই। পাশাপাশি, কোন কিছু পছন্দ হলে তার প্রশংসা করা যেমন আমাদের অধিকার তেমনি কোন কিছু অপছন্দ বা ভালো না লাগলে তার সমালোচনাও করাও একটি স্বাভাবিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। এটাকে বিদ্বেষ হিসাবে দেখা যায় কি না, আমার তা জানা নেই। মানুষের স্বাভাবিক রক্ষনশীল মনোভাবকে যদি ধর্মীয় উগ্রবাদীদের মতবাদের সাথে মিশিয়ে ফেলা হয় তাহলে দিন শেষে সবাইকেই আপনি উগ্রবাদী বানিয়ে ফেললেন। সবাইকে গণহারে বিভিন্ন অপবাদে যুক্ত করে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছেন।


সময় থাকতে এই ধরনের নির্বোধ আচরন থেকে সরে আসতে হবে। নইলে সামনে কঠিন বিপদ!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মে, ২০২৩ রাত ১:৫৭
২৮টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশাল বড় সৃষ্টি তোমার

লিখেছেন প্রামানিক, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:৩৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

বিশাল বড় সৃস্টি তোমার
মানুষ ক্ষুদ্রতম
চন্দ্র সূর্য দেখার পরে
করছে নমঃ নমঃ।

নানা রকম সৃস্টি দেখে
হচ্ছে চমৎকার
দুইটা চক্ষু উর্দ্ধে তুললে
দৃস্টি যায়না আর।

কোথায় সৃস্টির শেষ সীমানা
কোথায় বা তার শুরু
দূর সীমানায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ বলার শুরু করেছে, "আমরা আগেই ভালো ছিলাম"।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:০২



একাধিক কারণে মানুষ ইহা বলার শুরু করেছেন: (১) সাধারণ মানুষ কোমলমতিদের ক্রমেই চিনতে পারছেন, ইহা ভীতি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করছে; কোমলমতিরা সরকারের গুরুত্বপুর্ণ অনেক পদে আছে ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি - একাল সেকাল

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮



টানা বৃষ্টির মধ্যে মরিচের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি । অন্যদিকে ফার্মের মুরগির এক পিছ ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা।শুধু মরিচ নয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কমলা যদি পরাজিত হয়, "দ্রব্যমুল্য"ই হবে ১ নম্বর কারণ

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭



দ্রব্যমুল্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সুচকগুলোর ১ টি বড় প্যারামিটার; ইহা দেশের অর্থনীতি ও চলমান ফাইন্যান্সের সাথে সামন্জস্য রেখে চলে; টাস্কফোর্স, মাস্কফোর্স ইহার মুল সমাধান নয়; ইহার মুল সমাধন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকস্বাধীনতা মানেই- যা খুশী তাই লেখা বলা নয়....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৩১



বকস্বাধীনতা মানেই- যা খুশী তাই বলা/ লেখা নয়। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং জনসংহতি নষ্ট করা রাষ্ট্র দ্রোহিতার শামিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের গণবিপ্লব পরবর্তী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×