‘শিক্ষার উদ্দেশ্য
জ্ঞানার্জন, মনুষ্যত্বের
বিকাশ সাধন।
প্লেটোর জ্ঞানদর্শনও
তাই বলে। এ দর্শন ও
উদ্দেশ্যকে সামনে
রেখে রাষ্ট্রও বলছে
শিক্ষা নাগরিকের মৌলিক অধিকার।
কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা
কি আসলেই জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে
লেখাপড়া করে? রাষ্ট্রও কি এ
ক্ষেত্রে যথার্থ ভূমিকা পালন করতে
পারছে? বাস্তবতা অনুধাবনে মনে হচ্ছে
শিক্ষার উদ্দেশ্য এখন শুধুই তাত্ত্বিক।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একাডেমিক
পাঠের উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন নয়, সনদ
অর্জন। সরকারের ব্যর্থতার কারণে তাই
জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে চাকরিমুখী
লেখাপড়াতেই গুরুত্ব ও মনোযোগ
দিতে হচ্ছে।
শিক্ষাকে যদিও আত্মার খোরাক বলা
হয়, তথাপি বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর
পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় শিক্ষা বিষয়টিও
এখন একটি পণ্যরূপে বিবেচিত হচ্ছে।
যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে
খেয়াল করি, পরিলক্ষিত হয় বর্তমানে
ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে
শিক্ষা গ্রহণ করে শুধু চাকরি বা আয়-
রোজগারের জন্য। ছাত্র থাকাকালীন
বেশিরভাগই পরীক্ষায় পাসের জন্য
পড়াশোনা চালিয়ে যায়। ফলে
দীর্ঘদিনের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে
শিক্ষার্থীদের মধ্যে না বিকশিত হয়
মানবিক দিকগুলো, না প্রতিষ্ঠিত হয়
মূল্যবোধ। এর পেছনে চলমান শিক্ষা
ব্যবস্থা ও সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাপনা
অনেকাংশে দায়ী।
যে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা শিক্ষিত
হচ্ছি তা আমাদের সৃজনশীল ও সহজাত
প্রবৃত্তিগুলোকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করে
দিচ্ছে। একই সঙ্গে সমসাময়িক
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে
পড়ালেখাকে একটি জোরপূর্বক
গলাধঃকরণের বিষয় হিসেবে মেনে
নিচ্ছি। আর চাকরি পাওয়াটাকে করে
নিচ্ছি জীবনের একমাত্র অবলম্বন। এজন্য
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরি ও
নিজস্ব প্রতিভাকে গুরুত্ব দেয়ার
ব্যবস্থা করা উচিত। তেমনি সবার
নিজস্ব জ্ঞানার্জন ভিত্তিক চাকরি
নিশ্চিত করা ও প্রক্রিয়ারও প্রয়োজন
আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০৩