somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু কেমন আছিস......

০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস। ১৯৫৩ সালে আমেরিকান সরকারের রোষনালে পড়ে এক নাগরিক নিহত হন। এর প্রতিবাদে তারই এক বন্ধু স্বেচ্ছায় আত্মাহুতি দেন। দিনটি ছিল অগাস্টের রবিবার। সেই থেকে পশ্চিমা সংস্কৃতিতে অগাস্টের ফার্স্ট সানডে বা প্রথম রবিবারকে বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে স্বীকৃত দেয়া হয়। ইদানীং এটা আমাদের সংস্কৃতির উপরও ভর করেছে।

একজন মানুষের জীবনে বন্ধু, বন্ধুত্ব, দূঃখ-সুখের অংশীদারিত্ব, পারস্পরিক সহমর্মিতা, সহযোগিতা ইত্যাদি ব্যাপক এবং সুদূর প্রসারী প্রভাব বিস্তার করে। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তির একটা বহিঃপ্রকাশ এবং আবেগের প্রতিফলন হলো বন্ধুত্ব। একজন মানুষ চরমভাবে প্রভাবিত হয় বন্ধুদের দ্বারা। সেটা যেমন সফলতার ক্ষেত্রে সত্য, ঠিক তেমনি একজন মানুষের পতন বা ধ্বংসের ক্ষেত্রেও সত্য।

আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে আমি চরমভাবে সৌভাগ্যবান যে, আমি অনেক ভাল ভাল মনের, বিশাল বা উদার হৃদয়ের বন্ধুদের সংস্পর্শে এসেছি। সেই উত্তর চরফকিরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে কবি জসীম উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়, নটরডেম কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এই পথ পরিক্রমায় এত এত ভাল বন্ধুর সহচার্য আমি পেয়েছি, তা বলে শেষ করা যাবেনা। তারপর চাকুরী জীবনে সিপিডি, ডাচ বাংলা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক সবখানে ভাল ভাল মানুষদের সঙ্গে কেন জানি সম্পর্ক হয়ে যায়। তারপর মেস লাইফ, কোচিং এর সময় সবখানে কিছু না কিছু ভাল বন্ধু পেয়েছি। সবাই যে একই ক্লাসের, একই বয়সের ছিল সবসময় তা সত্যি নয়, অনেক সময় অনেক জুনিয়র আবার অনেক সময় অনেক সিনিয়রও ভাল বন্ধু হয়ে আছে।

প্রাইমারী স্কুল দিয়ে শুরু করা যাক। প্রাইমারী স্কুলের বন্ধুরা বন্ধুত্বের সংজ্ঞা বুঝে উঠার আগেই বন্ধু হয়ে যায় এবং এই সম্পর্ক চিরন্তন, সার্বজনীন। অনেকটা জীবনের প্রথম কোন অনুভূতির মত। তারপর স্কুল লাইফ - জীবনের প্রথম আবেগের বহিঃপ্রকাশের সময়কাল, তা সে বন্ধুত্ব বা প্রেম, দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বন্ধুত্বের সবচেয়ে সুসময় বা স্বর্নযুগ হলো স্কুলের সময়কাল। এত বেশী অনুভব করা একজন আরেকজনকে বা এত বেশী আড্ডা দেয়া, তা অন্য কোন সময়ে সম্ভব নয়। এইজন্য এই সময়ের সম্পর্কগুলো থাকে আজীবন আবেগেভরা, মধুর স্মৃতিময়।

কলেজ জীবনের বন্ধুত্ব অনেকটা বুঝে ওঠার আগে শেষ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। তারপরও এই গতিময় সময়ে কিছু সম্পর্ক এমন দ্রুত গতিতে স্থাপিত হয় যেটা অল্পতে আর ভেঙ্গে পড়েনা। এরপর ইউনিভার্সিটি লাইফ। কেবলই ছুটে চলার সময়, দাপিয়ে বেড়ার সময়, ভেঙ্গে নতুন করে গড়ার সময়, ভালবাসায় জীবন উৎসর্গের সময় বা ভবিষ্যতের স্বপ্ন গড়ার সময়। এই বিশাল ক্যানভাসে, উন্মুক্ত পথে প্রান্তরে, অসীম আকাশপানে অসংখ্য মিল অমিল বন্ধুর সাথে হবে দেখা, হবে কথা অল্প বিস্তর। তারপর আপন আলয়ে খুঁজে নিবে আপনারে যাদের পানে কেটে যাবে একান্ত কিছু সময় রাগে, অভিমানে, হাসিতে, উল্লাসে, আনন্দে আর উচ্ছ্বাসে।

আমার বন্ধুরাই আমার প্রাণ। আমার রাগ অনুরাগের বাতিঘর। যাদের প্রয়োজন অপ্রয়োজনে ডাকি, বকা দি, গালি দি, কষ্ট দি, কাছে ডাকি, কখনওবা আবার দূরে ঠেলে দি। তারপরও বলি - আমার যা কিছু সুন্দর, শাশ্বত, সত্য তা কেবলই তোদের দান, অনুদান আর উদারতার বহিঃপ্রকাশ। আমি কেবল গ্রহন করেছি, করিতেছি এবং করিব আজীবন। বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবসে প্রানের সকল বন্ধুকে স্মরি কৃতজ্ঞচিত্তে। ভালো থাকিস। খুব ভালো।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু
০৬.০৮.২০১৭ (অগাস্টের প্রথম রবিবার)।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৪৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×