somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পূজনীয় শিক্ষক যখন অশ্রদ্ধেয় হয়ে ওঠে

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিশুদের শিক্ষার বা বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিয়ে সুন্দর সুন্দর কথা প্রচলন আছে বইয়ের পাতায় বা পুরনো আদর্শ লিপিতে বা শিক্ষকদের বুলিতে। তেমনি কিছু প্রবাদ আমরা জানি, যেমন -উৎসাহের মাঝে বেঁচে থাকলে শিশু আত্মবিশ্বাসী হতে শেখে, প্রশংসার মাঝে বেঁচে থাকলে শিশু মূল্যায়ন করতে শেখে। কিন্তু আমি জানিনা, মনকে ভেঙ্গে দিলে কিংবা অন্যকে কুর্নিশ করার মাঝে বেড়ে ওঠলে, শিশুরা ভবিষ্যতে কি হবে, আত্মমর্যাদাহীন একজন মানুষ নাকি অন্যের মুখোপক্ষি হয়ে বেঁচে থাকা একজন অমানুষ।

আমার কাছে মনে হয়, একটা মানুষের অন্যতম বড় বস্তু হচ্ছে, তার আত্মমর্যাদা, তার ব্যক্তিত্ব কিংবা তার চক্ষুলজ্জা। কোন কারনে যদি এই আত্মমর্যাদা বা চক্ষুলজ্জা ওঠে যায়, তবে সে মানুষের জীবনে নৈতিকতার কোন দাম থাকেনা। ভয় পায়না সে কোন অন্যায় বা অসৎ কাজ করার ক্ষেত্রে। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় হলো - আমাদের সমাজে কিছু কিছু শিক্ষক বা শিক্ষিত মানুষ, বুঝে হোক বা না বুঝে হোক, সেই অন্যায় কাজটা করে যাচ্ছে - মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।

জীবনের একেবারে শুরুতে একজন ছেলে বা মেয়ে যখন মক্তব বা মাদ্রাসায় পড়তে যায়, তখন কখনও বার্ষিক ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলের কথা বলে, কখনওবা মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে, বাচ্চা ছেলে মেয়েদের রাস্তার দারে বা মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে হাত পাতার অভ্যাস গড়ে তুলে মক্তব বা মাদ্রাসার হুজুর বা শিক্ষকেরা। সেই ছোটবেলায় কচি কচি বাচ্চাদের মানসিক মনোবল বা আত্মমর্যাদা তখনই নষ্ট করে দেয়া হয়, যখন কোন উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে সে কারো কাছে হাত পাতে । ইদানীং আবার শুরু হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে জনপ্রতিনিধি বা আমলাদের কুর্নিশ করা বা ছাত্র-ছাত্রীদের মাথার উপর দিয়ে হেটে যাওয়া।

গত বৃহস্পতিবার যশোরের এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটা অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি (যশোর -২ আসনের সাংসদ জনাব এড. মনিরুল ইসলাম) এবং শিক্ষকদের কুর্নিশ করার এমন অভিনব পদ্ধতি সবাইকে হতবাক করে দেয়। যেটাকে আবার এবিসি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ রেজাউল করিম একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রশ্নোত্তরে বললেন - এটা একটা ব্যতিক্রমী ডিসপ্লে। ব্যতিক্রমী তো বটেই, যেখানে কোমলমতি ছাত্রীরা মুখে কোন রকম হাসি না রেখে চরম অশ্রদ্ধায় হাঁটু গেড়ে কুর্নিশ করলো কিছু মানুষ(!) গড়ার কারিগরকে, কিছু জনপ্রতিনিধিকে। সেটাও আবার একজন শিক্ষকের নির্দেশনায়, যাকে খুব তৎপর দেখা গেছে নির্দেশনা দিতে ছাত্রীদেরকে, কে কোথায় বসবে।

এই ধরনের ঘটনা শিশুর মানুষিক বিকাশের পথে কত যে অন্তরায়, তা কেবল শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা শিশুর মানসিক বিকাশ নিয়ে কাজ করা মানুষগুলো ভাল বলতে পারে, আমরা কেবল তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের মনোকষ্টগুলো বুঝতে পারি এবং নিজেদেরকে নিজেরাই ধিক্কার জানাতে পারি, কারন জনপ্রতিনিধি বা শিক্ষকদের মত আমরাও মানুষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×