কান্তনগর বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে দিনাজপুর শহরে (মির্জাপুর) আসতে আধ ঘন্টার মত লাগলো। তারপর রিক্সা দিয়ে গেলাম রাজরাড়ি। ঘড়ির কাটায় বেলা ১১টা। রাজরাড়ির বিশাল প্রবেশ গেটের পাশে বড় সাইনবোর্ড লেখা ’জুতা আর লুঙ্গি পরে ভিতরে প্রবেশ নিষেধ’। জুতা খুলে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করলাম। মন্দিরের ভিতরের অংশ পরিষ্কার-পরিপাটি, খালি পায়ে হাটতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। পুরো মন্দিরটা ঘুরে দেখলাম, রঙিন আর কারুকাজ করা দেয়াল দেখে মন ভরে যায়। মন্দির কম্পাউন্ডে বেশ কয়েকটি পুরানো একতলা ভবন আছে। এগুলোর বেশিরভাগই নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা প্রাণনাথ ও তার পোষ্যপুত্র রামনাথ অষ্টাদশ শতাব্দির দিকে। মন্দির ভালো অবস্খাতে থাকলেও মন্দিরের অপর পাশে রাজবাড়ি ধ্বংসাবশেষ অবস্থায় পরে আছে।
মন্দিরের পেছন দিকে এক বি-শা-ল দীঘি নাম ’সুখ সাগর’। সুখ সাগরের পাড়ে দাড়িয়ে বুক ভরা নিশ্বাস নিলাম। কিন্তু এতো রোদ! তাই বেশীন থাকতে পারলাম না, সেখানে আরো একটা বিশাল দীঘি আছে নাম ’মাতা সাগর’, সময়ের সল্পতার কারনে সেখানে যেতে পারলাম না।
এরপর আমরা রিক্সা দিয়ে গেলাম গোর-এ-শহীদ মাঠে। মেইন রাস্তার পাশে বিশাল এই মাঠের একপাশে ঢাকার শহীদ মিনারের আদনে নির্মিত একটি শহীদ মিনার। আর রাস্তার অপর পাশে সরকারী অফিস পাড়া। এখানে আছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মৃতি সৌধ।
রামসাগরে যাওয়ার জন্য আমরা এখান থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করলাম। দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দক্ষিনে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে বিখ্যাত রামসাগর দীঘি অবস্থিত। রাজা রামনাথ এই দীঘি খনন করেন প্রজাদের সেচ সুবিধা ও পানির সমস্যা দূরীকরণের জন্য। আমরা গাড়ী নিয়ে মেইর গেট খেকে টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলাম। দীঘির সামনে এসে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। এতো বড় দীঘি ! দীঘির কিনার দিয়ে পাকা রাস্তা। এ রাস্তা ধরে পায়ে হেটে দীঘিটা চক্কর দিলে বিশ্রামসহ ২ ঘন্টা লাগবে। আমরা গাড়ী নিয়েই রওনা দিলাম, মাঝে মাঝে নেমে দীঘির সৌন্দর্য উপভোগ করলাম।
দীঘির চারপাশে হাজার ধরনের গাছ। আর নাম না জানা পাখির কলোরব। দূর দুরান্ত থেকে কত মানুষ এসেছে রাম সাগরের সামনে দাঁড়িয়ে একটা সুন্দর সময় কাটানোর জন্য। দীঘিটা একটা চক্কর দিয়ে সোজা গেলাম মালদাহ পট্টি’র হোলেট ডায়মন্ডে। হোটেল থেকে ব্যাগ নিয়ে গেলাম কালিতলা বাস স্ট্যান্ডে। দুপুর সোয়া একটা। রাজশাহী যাওয়ার টিকেট কিনলাম, জনপ্রতি ভাড়া টাকা ২৫০/-, বাসের নাম ’এ্যামি’।
বাস ছাড়লো দুপুর ১:৩৫ মিনিটে। আমাদের নতুন গন্তব্য রাজশাহী।
বিদায় দিনাজপুর।
স্মৃতি: ১৪ নভেম্বর ২০০৮, শুক্রবার।
১ম পর্বের লিংক :
যঃঃঢ়://িি.িংড়সবযিবৎবরহনষড়ম.হবঃ/নষড়ম/লযড়ৎড়যড়ধি/২৯০৪৮৩৯৭
২য় পর্বের লিংক :
যঃঃঢ়://িি.িংড়সবযিবৎবরহনষড়ম.হবঃ/নষড়ম/লযড়ৎড়যড়ধি/২৯০৬০৫৪৫
দিনাজপুর ভ্রমন : কান্তজী মন্দরি, রাজ বাড়ি, রাম সাগর এবং ... (শেষ পর্ব)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আমাদের জাতির কপালে শনি আছে

একাত্তরে যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তারা বলেছে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সম্ভব না, সুতরাং ভারতের অধীন হওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অধীন থাকা ভালো। তারা মনে করেছে অধীকাংশ নাগরিক তাদের দলে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?
হাদি কি লড়াকু সৎ এবং নিবেদিত প্রাণ নেতা ?
জুলাই আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির নেতা ছিলেন না , তাকে কেউ চিনতো না কয়েক মাস আগে ও ।
জুলাই জংগীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।
মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে
আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[
স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ৩০ দেশের দুষ্ট আমেরিকান রাষ্ট্রদুত বদলায়ে দিচ্ছে!

আইয়ুব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার পর, বাংগালীদের লাথি খেয়ে সরেছে; জিয়া, কর্নেল তাহের ও জাসদের গণ বাহিনী আমাদের দেশকে নরক (১৯৭৫ সাল ) বানিয়ে নিজেরা নরকে গেছে। আমাদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।