somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেভীব্লু স্বপ্ন

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটার দিকে প্রায়ই চোখ পড়ত। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে প্রায়ই।মেয়েদের চোখেরর দিকে তাকাতে আমি কখনোই পারিনা।অন্তত সেদিনের আগ পর্যন্ত তো এটা অসম্ভব ছিল।কিন্তু ওদের বাসা দিয়ে হেটে যেতে প্রথম যেদিন চোখ পড়ল ওর চোখে সেদিন পলকহীন তাকিয়েছিলাম।ও অন্যদিকে তাকিয়ে ছিল কিন্তু আমি তাকিয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে ছিলাম।ঐ রাস্তাটা একটু ভাংগা হওয়ায় আমি এড়িয়ে যেতাম।কিন্তু এই ভাংগা রাস্তাটায় আমার পরবর্তী যাওয়া আসার মূল জায়গা হবে তা কি জানতাম।

দুদিন পরে আবারো গেলাম।কাউকে না জানিয়ে।জানলে সবার কৌতুকের ফাদে পড়ে মন খারাপ হবে তাই।ওদের বাসাটা ছিল একটু বড় জায়গায় করা।অন্তত আমার কাছে বড় কেননা আশেপাশে তেমন কোন বাড়ি চোখে পড়েনি।রাস্তার সামনে একটা টং দোকান ছিল।আশ্বস্ত হলাম।চা খাওয়ার অযুহাতে কিছুক্ষণ আশেপাশ থাকা যাবে।নয়তো ইভটিজার বলে উত্তম মধ্যমের সম্ভাবনা তো একেবারে কম নয়।

এক কাপ চা মামা,কেউ ছিলনা তাই একটু আয়েশ করেই বসলাম।ওদের বারান্দার দিকে চোখ রাখতেই মামার চা লন ডাক শুনে ভ্রম ভাংল।চা টা মুখে দিতেই ধান্ধায় পড়ে গেলাম এটা চা না গরম শরবত।কিছু একটা বলতে যাবো, তখনই দেখি বারান্দায় ও।গরম শরবত তখন ভুলে গিয়েছি একটা নেভীব্লু রঙের কামিজ।সাদা ওড়না।চুল ছাড়া,গালে হাত দেয়া।আশা করছিলাম গালে যদি একটা তিল থাকত।আমি উঠে রাস্তায় যাব,দেখি ওমনি চলে গেল।চাপা একটা অভিমান,অব্যক্ত।হতাশ মুখে টংয়ের মামাকে বললাম,মামা কত?মামা বলল,মামা মাইয়াটারে চিনেন?না মামা,।পছন্দ করেন,হেইডা বুঝছি।প্রথম দিনই টংয়ের মামার এরকম কথা সত্যিই হালে পানি পেলাম।যতদিন না কথা হচ্ছে ততদিন চায়ের জন্য কোন টাকা উনি না নেয়ার কথা বললেন।

এরপর থেকে টানা এক সপ্তাহ টংয়ে গিয়েও ওকে পাইনি।আমার উৎকণ্ঠা কাউকেই বুঝতে দেইনি।প্রতিদিন গিয়ে হাসিমুখে বসতাম।আরো হতাশ হয়ে ফিরে আসতাম।মাঝে মাঝেই ভাবতাম কার জন্য এরকম ব্যাকুল,যাকে একবার দেখেই কার জন্য এত প্রতীক্ষা যে কিনা জানেইনা।

ওদিকে সেমিস্টার ফাইনাল চলেই আসল।ফাইনাল সেমিস্টার অথচ কোন ধারণাই নাই আমার।ঐ চা দোকানে আমার যাতায়াত।ও তো আর আসেনা।

ভাসর্টির কনফেশন প্রোগ্রাম সামনে।অথচ আমার কনফেশন যে তাকে তো ভার্সিটির কেউ জানেনা।একদিন এক নোটিস বোর্ডে চোখে পড়ল আমার ডিপার্টেমেন্টের জুনিয়র একটা মেয়ের ছবি।ঠিক ওর মত।ঐ চোখ,আমার আকাঙ্ক্ষিত তিল।পাশে সিজিপিএ দেখে অবাক হলাম।কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা যাকে খুজছি এতদিন সে আমারই ডিপার্টমেন্টে আমারই জুনিয়র।আর দেরি না করে অফিসিয়াল মামাদেরকে দিয়ে তার সেল নাম্বার বের করলাম।
সেদিন রাতে ফোন দিব ভাবলাম,কিন্তু কেটে দিলে সেই ভয়ে মেসেজ লিখলাম।অত্যন্ত আবেগময়।নিজেই নিজের লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম।কিন্তু যাকে দিলাম তার মোবাইল বন্ধ।ভাবলাম রাতে ঘুমাচ্ছে।পরদিন সারাদিন অপেক্ষা করেও কোন রিপ্লাই নেই।আবারো মেসেজ।ডেলিভার হয়নি।মুষড়ে পড়লাম।এই সুযোগ পেয়েও কি ব্যর্থ হব।
দুদিন পড়ে র‍্যাগ ডে।যার একটি ফেজ ছিল কনফেশন।করতেই হবে এমন।আমি চার লাইনে একটা কবিতা লিখে দিলাম।এসে বাসায় ঘুমিয়ে থাকলাম মরার মত।
পরদিন বিকালে উঠে দুটো মেসেজ দেখলাম।একটা য় লেখা বিকালে ক্যাম্পাসের সামনে আম গাছ তলায় অপেক্ষা করব।সকাল আটটায় পাঠানো।পরেরটা বিকালে।আমি ফোন দিলাম।বন্ধ।

রাগ হলাম,ভাবলাম অনেক হয়েছে।আর নিজেকে নিয়ে বাজি ধরবনা।টংয়ে গিয়ে মামার গরম শরবত তথা চা আর গোল্ডলিফ টানছি।হালকা ঝিমুনি।আচমকা বিদ্যুৎ চমকানোর মত কেপে উঠলাম।সেই নেভীব্লু কামিজে আর সাদা ওড়নায় জড়ানো একজন আমার ঘাড়ে হাত রাখল।কানে ভেসে আসল,আজ অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলাম,জানতাম,আমার বাসার সামনেই থাকবে তুমি।আমার আওয়াজ বের হচ্ছেনা,আরো শুনলাম,শুধু কি চার লাইন,আর লিখবেনা।

আমি লাফিয়ে উঠে আবিষ্কার করলাম খাটের নিচে পড়ে আছি,স্বপ্নটা শেষ।জানি একদিন আসলেই স্বপ্নের বাস্তব রূপটা দেখবো অপেক্ষাই রইলাম
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১১
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×